প্রতিমা পূজা বিষয়ক ভ্রান্তি নিরসন ।। পর্ব-১ ।।

প্রতিমা পূজা বিষয়ক ভ্রান্তি নিরসন
প্রতিমা পূজা বিষয়ক ভ্রান্তি নিরসন


দুর্গাপূজা এলেই একদল অনাচারী প্রতিমা পূজা বিরোধী নানান অপপ্রচারে ফেসবুক সয়লাব করে। শুধু যে বাইরের লোক তা নয়, ঘরের কিছু দুরাচারীও এই অপকর্মে এক কাঠি সরেস। আজকের এই পোস্টে উভয়পক্ষকেই কড়া জবাব দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। 


।।  পটল-সুপ্রতীম যুক্তিতর্ক ।। 


পটলঃ তোমারা মাটি, পাথর, কাঠ দিয়ে জড় মূর্তি বানিয়ে তোমাদের ভগবানের পূজা করো। নিজেরাই নিজেদের ভগবানকে বানাও। এটা তোমাদের কেমন ভগবান?


সুপ্রতীমঃ শুরু করছি স্বামী বিবেকানন্দের একটি অনবদ্য বানী দিয়ে। তিনি বলেছিলেন, 


"পুতুল পুজা করে না হিন্দু কাঠ মাটি দিয়ে গড়া,

মৃন্ময়ী মাঝে চিন্ময়ী হেরে হয়ে যায় আত্মহারা।"


উদাহরণ হিসেবে ধরো, আমরা চামচ দিয়ে ভাত খাই। তাহলে আমরা কি ভাত খাই নাকি চামচ খাই? গ্লাস দিয়ে আমরা জল পান করি। তবে কি আমরা জল পান করি নাকি গ্লাস পান করি? আমরা প্রতিমা দিয়ে ঈশ্বরের বিভিন্ন সত্ত্বার পুজা করি। এতে কি আমরা প্রতিমা পুজা করি নাকি প্রতিমায় ঈশ্বরের বিভিন্ন গুণের ও প্রকাশের পুজা করি? মাধ্যমের সাথে উদ্দেশ্য মিলিয়ে দিলে ত হবে না। আমাদের উদ্দেশ্য ঈশ্বর আরাধনা এবং প্রতিমা হলো তার মাধ্যম মাত্র। যজ্ঞে আহুতি দেওয়ার জন্যও বর্গাকৃতির বেদী প্রস্তুত করতে হয় এবং সেখানেই মন্ত্র উচ্চারণ করে আহুতি দেওয়া হয়। বেদীতে যজ্ঞ করা হয় নাকি বেদীরই যজ্ঞ করা হয়? প্রতিমাতে ত সেটাই হয়। আমরা মূলত প্রতিমায় পূজা করি, প্রতিমার পূজা করি না৷ অর্থাৎ মৃন্ময়ী প্রতিমায় ঈশ্বরের চিন্ময় সত্ত্বাকে বিভিন্ন রূপে আহবান করে বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণে পূজা করে থাকি।


পটলঃ তুমি যে যুক্তিগুলো দিয়েছো সেগুলো কি কেবলই মনগড়া যুক্তি নাকি তোমাদের শাস্ত্রেও রয়েছে? 


সুপ্রতীমঃ হ্যা, আমাদের শাস্ত্রে স্পষ্টই বলা হয়েছে যে যেকোনো বস্তুতে ঈশ্বর দর্শন করা যাবে কিন্তু সেই বস্তুকেই ঈশ্বর ভাবা যাবে না। যেমন তোমার বাবার কোন ছবি যদি দেয়ালে টানানো থাকে তবে সেটা তোমার বাবা নয় কিন্তু সেখানে তুমি তোমার বাবাকেই দর্শন করতে পারবে। বৃহদারণ্যক উপনিষদ (২/৫/১৯) এ বলা হয়েছে, "রূপং রূপং প্রতিরূপো বভুব..." অর্থাৎ তিনি প্রতি বস্তুর রূপ ধারণ করিয়াছেন। 


ব্রহ্মসূত্রে (৪৷১৷৫) বলা হয়েছে, “ব্রহ্মদৃষ্টিরুৎকর্ষাৎ.."। 


এই সূত্রের তাৎপর্য্য এই যে যেকোনো বস্তুতে ব্রহ্মকে দর্শন করা যাবে কিন্তু সে বস্তুকেই একমাত্র ব্রহ্ম বলা যাবে না। উপনিষদে যেমন বলা হয়েছে "সূর্য্যকে ব্রহ্ম বলিয়া উপাসনা করিবে"।  এখানে ব্রহ্মকে সূর্য বলিয়া চিন্তা করা অন্যায় হবে, কিন্তু আমরা সূর্যকে ব্রহ্ম বলিয়া চিন্তা করতে পারি; "ব্রহ্মদৃষ্টিঃ"। উদাহরণস্বরূপ বলতে পারি যে আমরা একটি দুর্গা প্রতিমায় মা দুর্গার চিন্ময় সত্ত্বাকে স্থাপন করে উপাসনা করতে পারি কিন্তু এই প্রতিমাকেই মা দুর্গা ভেবে বসে থাকতে পারি না। এতে করে প্রতিমা বিনষ্ট হলে মা দুর্গার অস্তিত্বও বিনষ্ট হইবে। এই বিষয়ে আচার্য্য চাণক্য (চাণক্যনীতি ৪/১৯) বলেন, "প্রতিমা স্বল্পবুদ্ধিনাং....." অর্থাৎ, স্বল্প বুদ্ধির ব্যক্তিদের কাছে মূর্তিই দেবতা হয়ে থাকে। আচার্য্য চাণক্য (চাণক্য নীতিঃ ৮/১১-১২) আরও বলেছেন,


"কাঠ, পাথর ও ধাতু নির্মিত প্রতিমায় কেউ যদি ঈশ্বরের ভাবনা ও শ্রদ্ধা রেখে পূজা করে তবে তিনি অবশ্যই সিদ্ধি লাভ করবেন। পরমেশ্বর ত কাঠ, পাথর বা ধাতু নির্মিত প্রতিমায় বিদ্যমান নেই বরং তিনি মানুষের ভাবনায় বিরাজ করেন। মানুষ তার ভাবনায় যেখানেই ঈশ্বরের উপাসনা করেন সেখানেই তিনি প্রকট হোন।"


পটলঃ কিন্তু আপনাদের আর্য সমাজীরা প্রচার করে বেদ প্রতিমা পূজা নিষিদ্ধ। যজুর্বেদ ৩২/৩ মন্ত্রে বলা হয়েছে ঈশ্বরের কোন প্রতিমা নেই অর্থাৎ "ন তস্য প্রতিমা অস্তি"। 


সুপ্রতীমঃ তোমাদের মধ্যেও অনেক সম্প্রদায় আছে যাদেরকে তোমরা বিভ্রান্ত মনে করো। তাই আর্য সমাজের নামে কতিপয় ফেসবুকবাজদের আমরাও বিভ্রান্ত মনে করি৷ বৈদিক মতে সনাতনী মাত্রই তার গুণ ও কর্মে আর্য, সেজন্য তাকে আলাদাভাবে আর্য সাজতে হয় না। যাইহোক তোমাকে যজুর্বেদ ৩২/৩নং মন্ত্রের প্রকৃত অর্থটি বেদাঙ্গ অনুসারে স্পষ্ট করে দিচ্ছি। 


"ন তস্য প্রতিমা অস্তি যস্য নাম মহৎযশঃ।

হিরণ্যগর্ভ ইত্যেষ মা মা হিংসীদিত্যেষা সস্মান্ন ইত্যেষ।।“

[শুক্ল যজুর্বেদ সংহিতাঃ (৩২/৩)]


অনুবাদঃ তাঁর কোনো তুলনা নেই (শঙ্করভাষ্য), তাঁর মহৎ যশ আছে। তিনি হিরণ্যগর্ভ, তাঁর থেকে ইন্দ্র প্রভৃতি দেবতাগণ জাত, তিনি স্বরাট্।


এখানে ভালো করে লক্ষ্য করে দেখো, "প্রতিমা" অর্থ সমতুল্য বোঝানো হচ্ছে। প্রতিমা শব্দের উৎপত্তি প্রতিম্ থেকে যার অর্থ তুল্য বা মতো। যেমনঃ মাতৃপ্রতিম - মতৃতুল্য বা মায়ের ন্যায়, ভাতৃপ্রতিম- ভাইয়ের তুল্য বা ভাইয়ের ন্যায়। বেদমন্ত্রেও প্রতিমা শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে তুল্য বা সমতুল্য অর্থে। তাঁর সমতুল্য কেউ নেই অর্থ বিকৃত করে "ঈশ্বরের প্রতিমা নেই" অর্থ প্রচার করা হচ্ছে। প্রতিমা শব্দের অনুবাদ করলে বিভিন্ন অর্থ পাওয়া যায়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত অধ্যাপক মনির উইলিয়ামস তাঁর অনুবাদ গ্রন্থে "প্রতিমা" এর অর্থ করেছেন ছবি, তুল্য, মূর্তি, প্রতীক, স্ট্যাচু ইত্যাদি করেছেন। এখন শুক্ল যজুর্বেদের ৩২/৩নং মন্ত্রের অনুবাদ করতে গিয়ে প্রতিমা শব্দের অর্থ মূর্তিই কেন করতে হবে? শ্বেতাশ্বতর উপনিষদের ৪/১৯নং মন্ত্রেও প্রতিমাকে তুল্য (শঙ্করভাষ্য) হিসেবেই ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বেদ ও উপনিষদের আরও অনেক মন্ত্রে ব্রহ্মের তুল্য কেউ (কেউ বলতে কিন্তু আলাদা সত্তা বুঝাচ্ছে, মূর্তি কিংবা প্রতীক নয়) নেই বলা হয়েছে প্রাসঙ্গিক কারণেই।


পটলঃ আমি তাহলে উলটো প্রশ্ন করি যে প্রতিমা অর্থ মূর্তি না করে তুল্যই কেন করতে হবে?


সুপ্রতীমঃ এ সম্পর্কে আমরা মহর্ষি যাস্কের মতকেই প্রামাণ্য ধরবো। ঋগ্বেদের ১০ম মণ্ডলের ৮৯ সূক্তের ৫নং ঋকে "প্রতিমানানি" শব্দটি রয়েছে। এই শব্দের ব্যাখ্যায় যাস্ক তাঁর নিরুক্তে (৫/১২/১২) বলেছেন, 


"নার্বাগিন্দ্রং প্রতিমানানি দভুবন্তি, যৈরেনং প্রতিমিমতে নৈনং তানি দভ্নুবন্তি, অর্বাগেবৈনমপ্রাপ্র বিনশ্যন্তীতি।।"


অর্থাৎ যার সাথে কোন বস্তুর তুলনা করা হয়, তা উপমান। যে বস্তু তুলিত বা উপমিত হয় তাহা উপমেয়। সবসময় উপমেয় থেকে উপমানের শ্রেষ্ঠতা থাকে। ইন্দ্র সর্বশ্রেষ্ঠ, কাজেই তাঁর কোন উপমানই থাকতে পারে না। যা কিছু ইন্দ্রের উপমানরূপে কল্পিত হয়, তা ইন্দ্র থেকে হীনগুণ বলে প্রতিপন্ন হয়। কাজেই তারা উপমান ভাব ত্যাগ করে বিনাশপ্রাপ্ত হয়। 


এখানে যাস্ক "প্রতিমানানি" শব্দের অর্থ করেছেন, তুলনা করা।


ঋগ্বেদের ১০/১২০/৬ এও "প্রতিমানানি" শব্দ রয়েছে। এই শব্দের ব্যাখ্যায় যাস্ক তাঁর নিরুক্তের ১১.২১.২-এ বলেছেন, 


"প্রসাক্ষতে প্রতিমানানি বহূনি, সাক্ষাতিরাপ্নোতিকর্ম্মা।।"

অর্থাৎ এখানে বলা হয়েছে, বহু উপমানকে পরিব্যাপ্ত বা অভিভূত করার কথা। এখানেও উপমান বা তুলনা অর্থে যাস্ক প্রতিমানানি শব্দের অর্থ করেছেন।


পটলঃ তোমরা নিজেদের সুবিধার জন্যই প্রতিমা শব্দের অর্থ বদল করে দিচ্ছো।


সুপ্রতীমঃ আমরা কেন বদলে দিবো! বেদমন্ত্রের অর্থ প্রকরণ ও বিনিয়োগ মেনেই হবে। আমি ষড় বেদাঙ্গের অন্যতম যাস্কের নিরুক্ত থেকেই দেখালাম। যদি প্রতিমা অর্থ সবসময় ও একমাত্র মূর্তিই ধরতে হয় তবে শুক্ল যজুর্বেদের অন্য একটি মন্ত্রে (১৫/৬৫) বলা হয়েছে "সহস্রস্য প্রতিমা অসি..." অর্থাৎ, হে পরমেশ্বর! আপনার হাজার রকমের প্রতিমা রয়েছে। তাহলে কি প্রমাণিত হয়? 


পটলঃ বেদে কি তাহলে ঈশ্বরের প্রতিমার কথা বলা আছে?


সুপ্রতীমঃ বেদের সংহিতা ও ব্রাহ্মণের বহু জায়গায় ঈশ্বরের প্রতিমার উল্লেখ রয়েছে। আমি সময় সল্পতার জন্য কেবল দু'টো উদাহরণ দিচ্ছি।


"সম্বৎসরস্য প্রতিমাং যাং ত্বাং রাত্র্যুপাস্মহে । 

সা ন আয়ুষ্মতীং প্রজাং রায়স্পোষেণ সং সৃজ।।" 

[অথর্ববেদ সংহিতাঃ ৩/১০/৩]


অনুবাদঃ হে রাজ্যভিমানী দেব ঈশ্বর (রাত্রি)! সম্বৎসর (সমগ্র বৎসর সর্বদা) যার প্রতিমা বিদ্যমান, সেই আপনাকে আমি উপাসনা করে থাকি, আপনি আমাদের সন্তানদের দীর্ঘজীবী করে তাদের ধনসম্পন্ন করে তুলুন ।


"স এক্ষত প্রজাপতি হমং বাঽআত্মনঃ প্রতিমামসৃক্ষিযৎসম্বৎসরমিতিতস্মাদাহুঃ প্রজাপতিঃসম্বৎসর ইত্যাৎমনোতংহ্যেতং প্রতিমামসৃজত যদেবচতুরক্ষরঃ সম্বৎসরশ্চতুরক্ষরঃ প্রজাপতি স্তোনো হৈবাস্যেষ প্রতিমা।"


[শতপথ ব্রাহ্মণঃ ১১/১/৬/১৩]


অনুবাদঃ ঈশ্বর নিজের প্রতিমা সম্বৎসর নামকে উৎপন্ন করেছেন, এই কারণে বলা হয়েছে ঈশ্বর হলেন সম্বৎসর, দেখুন সম্বৎসর-এ চারটি অক্ষর আর প্রজাপতি-তেও চার অক্ষর রয়েছে, এই কারণে সম্বৎসর হল ঈশ্বরের প্রতিমা।


পটলঃ বেদে কি প্রতিমা পূজার সরাসরি কোন বিধান আছে? 

 

সুপ্রতীমঃ হ্যা, অবশ্যই আছে। শুক্ল যজুর্বেদীয় শতপথ ব্রাহ্মণে (৭/৮/১/৭, ৭/৪/১/৩, ৭/৪/১/১০-১৭) পদ্মপুষ্পের উপর আদিত্য ও হিরণ্যগর্ভ প্রজাপতির স্বর্ণ প্রতিমা স্থাপন ও সামগানের মাধ্যমে পূজার স্পষ্ট বিধান রয়েছে। তাছাড়া  বেদে সরাসরি লিঙ্গরূপী মহাদেবের প্রতিমাকে স্থাপন করার বিধান রয়েছে, 


"শিবায় নমঃ শিবলিঙ্গায় নমঃ 

জ্বলায় নমঃ জ্বললিঙ্গায় নমঃ 

আত্মায় নমঃ আত্মলিঙ্গায় নমঃ 

পরমায় নমঃ পরমলিঙ্গায় নমঃ। 

এতৎসোমস্য সূর্যস্য

সর্বলিঙ্গং স্থাপযতি পাণিমন্ত্রং পবিত্রম্। "


[কৃষ্ণ যজুর্বেদ/তৈত্তিরীয় আরণ্যক/১০ম প্রপাঠক/১৬নং অনুবাক/২নং সূক্ত।]


এছাড়াও ঋগ্বেদ সংহিতায় (১০/১৩০/৩) বলা হয়েছে, 


"যে কালে সকল দেবতা দেবপূজা করলেন তখন তাদের অনুষ্ঠিত যজ্ঞের পরিমাণ কি ছিল? দেব প্রতিমা বা কি ছিল? সংকল্প কি ছিল? ঘৃত কি ছিল? পরিধি অর্থাৎ যজ্ঞস্থানের চতুর্দিকের বৃত্তি স্বরূপ সীমা বন্ধনই বা কি ছিল? ছন্দ প্রয়োগই বা কি ছিল?" 


পটল: তোমাদের এই দুর্গাপূজা কোথা থেকে এলো?


সুপ্রতীম: দুর্গাপূজা নিয়ে বিস্তারিত দেবীভাগবত, মার্কণ্ডের পুরাণ, মৎস পুরাণ ও কালিকা পুরাণে রয়েছে। এছাড়া কৃষ্ণ যজুর্বেদীয় মহানারায়ণ উপনিষদ ও ঋগ্বেদের আশ্বালায়ন সংহিতায় মা দুর্গার রূপ ও প্রণাম মন্ত্র পাওয়া যায়। 


"ক্ষীরেণ স্নাপিতা দুর্গা চন্দনেনানুলেপিতা।

বৈল্বপত্রকৃতামালা নমো দুর্গে নমো নমঃ।।"

[ঋগ্বেদ: আশ্বলায়ন শাখা-১০।১২৮। ৮]


অর্থাৎ, দুধের ক্ষীর দ্বারা স্নাপিতা, চন্দনাদি দ্বারা অনুলিপ্তা এবং বিল্বপত্রের মাল্যধারিণী সেই দুর্গাকে বারংবার নমস্কার করি।


তথ্যসহায়তা: SPS শাস্ত্র গবেষণা কমিটি প্রকাশিত "সনাতনধর্মের প্রশ্নোত্তর"। 


© Swastika-স্বস্তিকা 

সত্য ও সুন্দরের পথে স্বাগতম।।


# ফেবুপোস্ট

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ