চব্বিশের অগাস্ট মাসে সারাদেশে সংখ্যালঘুর উপর আক্রমণ প্রসঙ্গে একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর মন্তব্য

ব্যক্তিগত ভাবে আমি ১০ বছর সরকার বিরোধী ছাত্র রাজনীতি করেছি। একতরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে আলাপ তোলার কারণে হাজতও খেটেছি। আমার জীবদ্দশায় নিজেকে সংখ্যালঘু তো দূরে থাক আলাদা কোন স্বত্ত্বাও ভাবিনি। 


আমার এখন বয়স ২৮। ছা-পোষা মধ্যবিত্ত। নিজের কাজ নিজে করে খাই। কিন্তু, গত ৫, ৬, ৭- ই অগাস্টে কি পরিমাণ ইনসিকিউরড ফিল করেছি তা বলার মতো না। কেবল জন্ম পরিচয়ের জন্যে বাবার গর্দানটা থাকবে কিনা এই দু:শ্চিন্তা যে কতটা ভয়ানক আমি এর আগে কখনো টের পাইনি। না, বাবা কোন রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের সাথে সংপৃক্ত নয়। কেবল পারিবারিকভাবে পরিচালিত এক বিহারের কর্তা। বাসা লুটপাট ও জ্বালিয়ে দেওয়ার ভয় তো আছেই।


৬ - তারিখের পৃথিবীটা আসলে আমার কাছে সম্পূর্ণ নূতন পৃথিবী। আমি শিখলাম, জানলাম, বুঝলাম সংখ্যালঘু কি জিনিস। অথচ, আমি নিজে এক নন প্রাকটিসিং।


এসব কোন কিছুই নতুন নয়। কিন্তু আমাকে আরও বিমর্ষ করে তুলল, এখনকার আমার বন্ধুদের চিত্র। আমার লিবারেল প্রগতিশীল বন্ধুরা সেদিন সবাই বলে উঠলো এসব গুজব (!), 'হিন্দুত্ববাদী প্রোপাগাণ্ডা' এবং এগুলো আসলে স্বাভাবিক। এমনকি 'হিন্দুত্ববাদী প্রোপাগাণ্ডার এজেন্ট' নতুন এক শব্দের সাথেও পরিচিত হলাম। অথচ, এদের অনেকে ধরেই নিয়েছে, আমি হয়তো হিন্দু পরিবারে জন্মিয়েছি। এইবারের ঘটনায় এদের অবস্থান আমার খুবই অসস্তিদায়ক লেগেছে। জামাত কিংবা অন্য সাম্প্রদায়িক দল নয়, লিবারেল প্রগতিশীলদের যে মুখোশ এইবার দেখা গেলো, তা অত্যন্ত অনভিপ্রেত। আমি বন্ধু সমাজে এদের অবস্থানও আর মেনে নিতে পারছি না। বারবার মনে হচ্ছে এরা আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো, তুমি আমাদের চেয়ে আলাদা।


সংগৃহীত

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ