সুনামগঞ্জে হিন্দুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা ভাঙচুর বিষয়ে কয়েকটি গণমাধ্যম যে খবর করেছে

সুনামগঞ্জ জেলার মানচিত্র, স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স
সুনামগঞ্জ জেলার মানচিত্র, স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

 সুনামগঞ্জে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে উত্তেজনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে



নিজস্ব সংবাদদাতা, সিলেট, বুধবার ডিসেম্বর ৪, ২০২৪ ০১:০৪ অপরাহ্ন, সর্বশেষ আপডেট: বুধবার ডিসেম্বর ৪, ২০২৪ ০১:০৪ অপরাহ্ন




ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় বেশ কয়েকটি বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত এক যুবককে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। পরে সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।


দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,


 'স্থানীয় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। সংঘাত এড়িয়ে অভিযুক্ত যুবককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।'


ওই যুবকের নাম আকাশ দাস। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আকাশ দাস ফেসবুকের একটি পোস্টের কমেন্টে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন এমন কথা ফেসবুকে প্রচার করেন স্থানীয় এক মুসলিম যুবক। এর পরই লোকজন উপজেলা স্কুল মাঠে জড়ো হন। খবর পেয়ে পুলিশ আকাশ দাসকে হেফাজতে নিয়ে আসে।


থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল হক বলেন, 'আকাশ দাসকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর চড়াও হন তৌহিদী জনতা। তবুও আমরা তাকে নিরাপদে থানায় নিয়ে আসি। এ সময় বেশ কিছু উত্তেজিত মানুষ মংলাগাঁওয়ে আকাশ দাসেরসহ কিছু বাড়িঘরে এবং স্থানীয় বাজারে হিন্দুদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালান।'


তিনি বলেন,


 'এর মধ্যে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। স্থানীয় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দও পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এগিয়ে এলে মধ্যরাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এখন আলোচনার মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।'


এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে রাতে দোয়ারাবাজারে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট ও সুনামগঞ্জের সমন্বয়ক এবং নেতাকর্মীরা। পরে সমন্বয়ক আবুল সালেহ মোহাম্মদ নাসিম তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিবৃতি দেন।


তিনি বলেন, 


'দোয়ারাবাজারে হিন্দু-মুসলিম সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই পুরো ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত। একটি বিশেষ গ্রুপের সদস্য, নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে।'


সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়ে আবু সালেহ আরও বলেন, 'আমাদের দেশ একটি গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার। এর বহিঃপ্রকাশ আজকের এই ঘটনা।'


সূত্র: bangla.thedailystar



-0-0-0-0-0-



সুনামগঞ্জের দুয়ারাবাজার উপজেলায় যৌথ বাহিনীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, ছবি: MS Rahman/DW
সুনামগঞ্জের দুয়ারাবাজার উপজেলায় যৌথ বাহিনীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, ছবি: MS Rahman/DW

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ: সুনামগঞ্জে হামলা ও মানবিকতার দুই গল্প


হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা, 04.12.2024


আবার এক হিন্দু তরুণের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ৷ সেই অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে সুনামগঞ্জের দুয়ারাবাজার ও মংলারগাঁওয়ে চলে ব্যাপক হামলা ও লুটপাট৷ তবে মনিগাঁওয়ে হামলার সকল চেষ্টা ব্যর্থ৷


সুনামগঞ্জের দুয়ারাবাজার উপজেলায় মঙ্গলবার রাতে ‘ধর্মীয় অবমাননার‘ একটি ফেসবুক কমেন্টকে কেন্দ্র করে বাজার ও সংলগ্ন একটি গ্রামে হিন্দুদের বাড়ি-ঘর ও মন্দিরে হামলা, লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।


সেখানে প্রতিরোধের দেয়াল গড়েছেন মুসলমান প্রতিবেশীরা৷


সুনামগঞ্জের দুয়ারাবাজার উপজেলায় মঙ্গলবার রাতে ‘ধর্মীয় অবমাননার‘ একটি ফেসবুক কমেন্টকে কেন্দ্র করে বাজার ও সংলগ্ন একটি গ্রামে হিন্দুদের বাড়ি-ঘর ও মন্দিরে হামলা, লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। হামলার পর ওই এলাকার বেশ কিছু হিন্দু পরিবার ভয়ে এলাকা ছেড়েছে।


সেখানে যৌথ বাহিনীর নিরপত্তা জোরদার করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার তনুর দাবি, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।


ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগে আকাশ দাস নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নামে সাইবার নিরাপত্তা আইনে 


১০০,  কিংবা ৪-৫


হামলার শিকার পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে মঙ্গলবার রাতের হামলায় দুয়ারাবাজার ও পাশের একটি গ্রামের শতাধিক বাড়ি-ঘর, মন্দির ও দোকানপাটে হামলা, লুটপাট হয়েছে। এ হামলায় হতাহতের কোনো খবর এখনো পাওয়া যায়নি।


তবে হামলার শিকার পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যকে  পুলিশ ও প্রশাসন ‘অতিরঞ্জিত তথ্য' বলে উড়িয়ে দিচ্ছে। তাদের দাবি, মাত্র একটি মন্দির ও চার-পাঁচটি বাড়িঘরে হামলা হয়েছে।


স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলের দিকে পবিত্র কুরআনের অবমাননাকর একটি ফেসবুক মন্তব্যের কথা এলাকায় ছড়িয়ে পরে। তারপর লোকজন বাজারে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ-সমাবেশ করে। সেই প্রতিবাদ-সমাবেশ ফেসবুক লাইভে প্রচার করা হয়। রাত  ৮ টার দিকে প্রথমে দুয়ারাবাজারে, তারপরে পাশের মংলারগাঁও গ্রামে হামলা ও ভাংচুর চালানো হয়। পুলিশ অবশ্য হামলার আগেই আকাশকে মংলারগাঁও গ্রাম থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ওই গ্রামে কমপক্ষে ৭০টি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।


আকাশের পাশের বাড়িতে থাকেন বিজন দাস। তার বাড়িও ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে। তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, "আকাশকে পুলিশ নিয়ে যাওয়ার পর প্রথমে তাদের (আকাশ) বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর হয়। তাদের বাড়িতে এখন আর কেউ নেই। এরপর পুরো গ্রামে সাত-আটশ' লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। আমার বড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে টাকা -পয়সা ও সোনাদানা যা ছিল, সব নিয়ে গেছে। আমি এখন বাড়িতে আছি। কিন্তু  স্ত্রী ও মেয়েদের নিরাপত্তার জন্য অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দিয়েছি। আমার বাড়িতে আগুনও দেয়া হয়েছে।”


"আমাদের গ্রামে মোট ৮০টি হিন্দু বাড়ি আছে। তার মধ্যে ৭০টি বাড়িতেই হামলা ও লুটপাট হয়েছে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষই অতঙ্কে তখন চলে যায়। এখন ফিরতে শুরু করেছে,” 


বলেন তিনি।


মনিগাঁওয়ে মুসলিম প্রতিবেশীদের প্রতিরোধ


বিজন দাস আরো বলেন, 


"আমাদের পাশের গ্রাম মনিগাঁও । সেখানেও কয়েক বাড়ি হিন্দু আছে। ওই গ্রামটি মুসলিম-অধ্যুষিত। তারা ওই হিন্দুদের বাড়িতে আক্রমণ করতে দেয়নি।”


আকাশ দাসকে পুলিশ নিয়ে যাওয়ার পর কয়েকশ' লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে দোয়ারাবাজারের হিন্দুদের দোকানপাট, বাড়ি ও মন্দিরে ব্যাপক হামলা চালায়। দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় লোকনাথ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক খোকন রায় বলেন, 


"লোকনাথ মন্দিরে ভাংচুর করা হয়েছে। মন্দিরের মালামাল লুট করা হয়েছে। মন্দিরের অন্তত ১৫-২০ লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। ১৩ শতক জায়গার ওপরের মন্দিরটিতে ব্যাপকভাবে ভাংচুর করা হয়। বাজারে থাকা হিন্দু সম্প্রদায়ের ৫০টিরও বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর করা হয়েছে।”


খোকন রায় আরো জানান, 


"উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গুরু দাস দে'র বাড়ি, পরিবারিক মন্দিরসহ আশপাশের আরো বাড়িঘরে লুটপাট করা হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার মংলাগাঁও গ্রামেও হামলা, ভাংচুর, লুটপাট হয়েছে।”


মংলারগাঁও গ্রামের রাহুল দাস রাতুল হামলার পর তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সিলেট শহরে চলে গেছেন। টেলিফোনে তিনি বলেন,


" আমার হিসাবে সব মিলিয়ে ১০৫টি বাড়িতে হামলা হয়েছে। মোট ২০-২৫টি মন্দিরে হামলা হয়েছে। এরমধ্যে লোকনাথ মন্দির ছাড়া বাকিগুলো পারিবারিক মন্দির। আমার মতো অনেক পরিবারই ভয়ে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে।” 


সুরামগঞ্জ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ডয়চে ভেলেকে বলেন, "রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত হামলা ও ভাংচুর হয়েছে। আগে বাজারে এবং বাজার থেকে গিয়ে গ্রামে ভাঙচুর, হামলা ও লুটপাট করা হয়। পরে যৌথ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আমাদের হিসাবে শতাধিক বাড়ি-ঘর, দোকানপাট ও মন্দিরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।”


হামলার কোনো মামলা নেই


তবে দোয়ার বাজার থানার ওসি (তদন্ত) শামসুদ্দিন আহমেদের হিসেবটা একেবারেই ভিন্ন৷ তার দাবি, "তেমন কিছু হয় নাই। একটি মন্দির এবং চার-পাঁচটি বাড়িতে হামলা হয়েছে। দোকানপাটে হামলা হয়নি। যারা শতাধিক বলছে, তারা বাড়িয়ে বলছে।”


তিনি জানান, হামলার ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি, 


"ফেসবুক কমেন্টের জন্য আকাশকে সাইবার নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার ব্যাপারে তদন্ত চলছে। তবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, ফেসবুক কমেন্টটি তার ফেসবুক আইডি থেকেই করা হয়েছে।”


"এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ আছে , সেনা সদস্যরা আছেন। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে-” বলেন তিনি।


দোয়রাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার তনুর কণ্ঠেও যেন দোয়ার বাজার থানার ওসি (তদন্ত) শামসুদ্দিন আহমেদের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি, " তেমন কিছু হয়নি। আমি ওই এলাকায় গিয়েছি। কয়েকটি বাড়ির বাইরে থেকে হামলা হয়েছে। তবে লুটপাট হয়েছে তা আমি বলবো না। আর একটি মন্দিরে ভাংচুর হয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে।”


রাহুল দাস রাতুল অবশ্য বলেছেন, মংলারগাঁও প্রায় জনশূন্য, ভয়ে প্রায় সব মানুষই এই মুহূর্তে গ্রামছাড়া৷


সূত্র: DW


-0-0-0-0-0-0-



ছবির উৎস, AR JEWEL, ছবির ক্যাপশান, মঙ্গলবার রাতে কিছু বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে
ছবির উৎস, AR JEWEL, ছবির ক্যাপশান, মঙ্গলবার রাতে কিছু বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে

সুনামগঞ্জে কোরআন অবমাননার অভিযোগে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা, কী ঘটেছিল?


৪ ডিসেম্বর ২০২৪


সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় এক হিন্দু যুবকের কোরআন অবমাননার অভিযোগকে ঘিরে ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলার খবর পাওয়া গেছে।


মঙ্গলবার রাতে উপজেলার মংলারগাঁও গ্রামের যুবক সামাজিক মাধ্যমে কোরআন অবমাননা করেছে এমন একটি খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকার মুসলমান সম্প্রদায়ের অনেকে বিক্ষোভ মিছিল করে।


এসময় কয়েকটি বাড়িঘর-দোকানপাটে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এসময় একটি মন্দিরের একাংশে ভাঙচুরের অভিযোগও পাওয়া গেছে।


এই ঘটনার পরপরই মঙ্গলবার রাতেই কোরআন অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত ওই যুবককে আটক করে পুলিশ।


দোয়ারাবাজার থানার ওসি তদন্ত মো. শামসুদ্দিন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, 


“যেই যুবক কোরআন অবমাননার এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাকে আমরা আটক করেছি। এখন এলাকার পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে।”


মঙ্গলবার রাতে ওই ঘটনার বুধবার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শান্তি সমাবেশ করা হয়েছে।


বর্তমানে এলাকায় পরিবেশ শান্ত রয়েছে বলে জানাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার তনু বিবিসি বাংলাকে বলেন, 


“কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাটে কিছু ভাঙচুর হয়েছে। এ ঘটনায় সামান্য কিছু ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ফেসবুকে এটি নিয়ে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে কেউ কেউ।”


ওই এলাকায় কোরআন অবমাননার অভিযোগে আটককৃত ওই হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়েছে বলেও বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করেছে উপজেলা প্রশাসন।


ছবির উৎস, AR JEWEL, ছবির ক্যাপশান, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ি
ছবির উৎস, AR JEWEL, ছবির ক্যাপশান, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ি


যেখান থেকে ঘটনার শুরু


সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় মংলারগাও গ্রামের এক যুবক মঙ্গলবার একটি ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে কোরআন অবমাননা করেছে বলে অভিযোগ ওঠে।


পরে একটি স্ক্রিনশটের সাথে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই যুবকের ছবিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।


সুনামগঞ্জের সাংবাদিক এ আর জুয়েল বিবিসি বাংলাকে জানান, 


ওই ঘটনার পর সন্ধ্যার দিকে দোয়ারাবাজার স্কুল মাঠে জড়ো হতে থাকেন স্থানীয় মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষজন। এবং তারা বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে থাকে।


পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী আসে।


এলাকা থেকে কোরআন অবমাননার অভিযোগে ওই যুবককে আটক করে প্রথমে দোয়ারা বাজার থানায় নিয়ে আসা হয়।


দোয়ারা বাজার থানার ওসি তদন্ত মো. শামসুদ্দিন বিবিসি বাংলাকে বলেন, 


“এই বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ খবর পেয়ে ওই যুবককে এলাকা থেকে অ্যারেস্ট করে। পরে বিক্ষোভ বাড়তে থাকায় তাকে সুনামগঞ্জ জেলা সদরে নিয়ে যাওয়া হয়।”


পুলিশ জানায়, স্থানীয় বিক্ষোভকারী খবর পেয়ে থানায় যাওয়ার আগেই তাকে জেলা সদরে নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।


ছবির উৎস, AR JEWEL, ছবির ক্যাপশান, মঙ্গলবার রাতে হামলার পরদিন একটি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির চিত্র
ছবির উৎস, AR JEWEL, ছবির ক্যাপশান, মঙ্গলবার রাতে হামলার পরদিন একটি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির চিত্র


হামলা-ভাঙচুর সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে


সন্ধ্যার পর থেকে যখন কোরআন অবমাননার অভিযোগে মুসলমান সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা বিক্ষোভ করছিল সে সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।


এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মঙ্গলবার রাত থেকে অনেককে পোস্ট দিতে দেখা যায়।


স্থানীয় সাংবাদিক এ আর জুয়েল মঙ্গলবার রাত ও বুধবারে ঘটনাস্থলে গিয়ে সর্বশেষ অবস্থার খোঁজ-খবর নিয়েছেন।


বিবিসি বাংলাকে তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভ থেকে মুসলমান সম্প্রদায়ের বিক্ষুদ্ধরা অভিযুক্ত ওই হিন্দু যুবকের বাড়িঘরসহ আশপাশের বাড়িঘর এবং বাজারের কিছু দোকানপাটে ভাঙচুর চালায়।


তিনি জানান, এসময় একটি মন্দিরে গেটের অংশে ভাঙচুর হয়েছে। স্থানীয় বাজারের একটি জুয়েলারি দোকানেও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।


মি. জুয়েল বলছিলেন, 


“আমি যতটুকু দেখেছি এসবের বেশিরভাগই ছিল টিনের ঘর ও টিনের শাটার দেয়া দোকান। সব মিলিয়ে ২০টির মতো বাড়ি ও দোকানে হামলা ভাঙচুর হতে পারে”।


উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে ঘটনার পরপরই পুলিশ-সেনাবাহিনীর তৎপরতার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় দ্রুতই।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার তনু বিবিসি বাংলাকে বলেন, “যারা বিক্ষোভ করছিলেন কিছু জনতার হাতে লাঠি ছিল। তারা লাঠি দিয়ে কয়েকটি বাড়িঘর দোকানপাটে ভাঙচুর করে। তবে সেখানে লুটপাটের ঘটেছে বলে আমাদের জানা নেই।”


“অল্প কিছু বাড়িঘরে ও দোকানে সামান্য কিছু হামলা হয়েছে, সেটি কোনোভাবেই ২০টি হবে না। যাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার অনেকগুলো টিনশেড বাড়ি ও দোকান,” বলছিলেন মিজ তনু।


স্থানীয় সাংবাদিক মি. জুয়েল বিবিসি বাংলাকে বলেছেন তিনি নিজে একটি মন্দিরের গেট ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় দেখেছেন বুধবার সকালে।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজ তনু মন্দিরে হামলা প্রসঙ্গে বিবিসি বাংলাকে বলেন, “স্থানীয় জনতা ইসকন মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কারণে তারা পারেনি।”


“তবে জগন্নাথ মন্দিরের গেটে হামলা ও ভেতরে ঢুকে কয়েকটি হাড়ি পাতিল ও চেয়ার ভাঙা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এর বাইরে অন্য কোথাও মন্দিরে হামলার ঘটনা আমরা জানতে পারিনি,” যোগ করেন তিনি।


ভাঙচুর প্রসঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দিন বলেন, 


“যা ভাইরাল করা হচ্ছে বাস্তবে সে রকম কিছু হয়নি। শুধু কয়েকটি বাড়িঘরে ইটপাটকেল ছাড়া আমাদের তেমন বড় কোনো ঘটনার খবর জানা নেই।”


২০২১ সালে সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়েছিল (ফাইল ছবি), ছবির উৎস, BIPLOB ROY
২০২১ সালে সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়েছিল (ফাইল ছবি), ছবির উৎস, BIPLOB ROY


শান্তি সমাবেশ ও বর্তমান পরিস্থিতি


মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই ঘটনাটি ঘিরে উত্তেজনার খবর ছড়িয়েছিল সুনামগঞ্জসহ সারাদেশে।


ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনীও আসে।


স্থানীয় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন।


স্থানীয় প্রশাসন বলছে, এই ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসনের চেষ্টায় পরিস্থিতি বেশি খারাপের দিকে যায়নি।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার তনু বিবিসি বাংলাকে বলেন, “সর্বোচ্চ তিরিশ থেকে চল্লিশ মিনিটের একটা উত্তেজনা ছিল। তারপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে রাজনৈতিক নেতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর তৎপরতায়।”


মঙ্গলবার ঘটনার পরও এলাকায় কিছু থমথমে পরিবেশ ছিল। বুধবার সকালে স্থানীয় মুসলমান ও হিন্দু সম্প্রদায়, স্থানীয় প্রশাসন এবং রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে শান্তি সমাবেশ করে সেনাবাহিনী।


সেখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ।


সূত্র: bbc


-0-0-0-0-0-0-0

হিন্দু বাড়িতে হামলা: সুনামগঞ্জের সেই গ্রামে কড়া নিরাপত্তা, বসেছে ক্যাম্প
প্রশাসনের সাথে সাধারণ মানুষের মতবিনিময়

হিন্দু বাড়িতে হামলা: সুনামগঞ্জের সেই গ্রামে কড়া নিরাপত্তা, বসেছে ক্যাম্প


হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের পর সেনা ও পুলিশ সদস্যরা আসায় রাতেই গ্রামের বাসিন্দাদের অনেকে ফিরেছেন; এখন তারা খানিকটা নিরাপদ বোধ করছেন, বলেন এক গ্রামবাসী।


বাপ্পা মৈত্র, সিলেট প্রতিনিধি. দোয়ারাবাজার থেকে ফিরে. বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, Published : 04 Dec 2024, 08:25 PM


ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার একটি গ্রামে ও বাজারে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও দোকানে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর পর সেনাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কড়া নিরাপত্তা নিয়েছে।


আগের রাতের ঘটনার পর বুধবার দুপুরে উপজেলার মংলারগাঁও গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সেনাবাহিনী, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তারা। এসময় তারা গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা দেওয়ার উপরে জোর দেন।


পরে বিকালে উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনেও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনসহ সব ধর্মের ও শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের পক্ষ থেকে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। সেখানেও সবাইকে শান্ত থাকা এবং সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করার কথা বলা হয়েছে।


ভাঙচুরকৃত হিন্দু বাড়ির একাংশ
ভাঙচুরকৃত হিন্দু বাড়ির একাংশ

গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেছেন, মঙ্গলবার রাতে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের পর রাতেই সেনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গ্রামে আসেন। এ খবর পেয়ে হামলার মুখে যারা পালিয়ে গিয়েছিলেন; তারাও রাতে ভাঙা বাড়িঘরে ফিরে আসতে শুরু করেনে।


তারা বলেন, সেনা ও পুলিশ সদস্যরা আসায় এখন তারা খানিকটা নিরাপদ বোধ করছেন।


বুধবার দুপুরে মংলারগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেনা সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। সঙ্গে পুলিশদেরও সেখানে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। গ্রামের বাসিন্দারা রাস্তা দিয়ে চলাচল করছেন।


এছাড়া উপজেলা সদরের বাজার এলাকায় মন্দিরে সেনা সদস্যদের নিরাপত্তা দিতে দেখা গেছে।


দুপুর ২টার দিকে মংলারগাঁও গ্রামবাসীর সঙ্গে মতবিনিময়কালে মেজর মো. আল জাবির আসিফ বলেন, “গতকাল (মঙ্গলবার) যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে এতে আমরা সবাই কষ্ট পেয়েছি। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও এলাকাবাসী সবাই এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি। তবে এর আগে ভাঙচুর ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।


ভেঙে টুকরো টুকরো হিন্দু বাড়ির টিনের বেড়া
ভেঙে টুকরো টুকরো হিন্দু বাড়ির টিনের বেড়া



“এখানে মূল অপরাধী হচ্ছে কিছু মানুষ বা একটি গোষ্ঠী যাদের অন্য উদ্দেশ্য আছে। এর আগে কখনও দোয়ারাবাজরে এমন হয়নি। ছোট একটা কাজের জন্য কী হয়ে গেছে। তবে কোনো প্রাণহানি হয়নি সেটার জন্য শুকরিয়া।”


তিনি বলেন, “আপনাদের ছেলেমেয়েদের খেয়াল রাখবেন, যাতে ছোট কোনো কাজের জন্য বড় মাসুল দিতে না হয়। আপনারা নিরাপদ ফিল করেন; আমরা এখানে ক্যাম্প করেছি। কোনো ধরনের উসকানিতে কান দেবেন না। সবাইকে সচেতন থাকবেন, আপনাদের কোনো সমস্যা হবে না।


“আমরা ছাত্র, রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গেও বসেছি। আপনাদের এলাকায় খুব সুন্দর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে। এলাকার মানুষজন এসে গতকাল আপনাদের কেন্দ্রীয় মন্দির রক্ষা করেছেন। এই সম্প্রীতি বজায় রেখেই সবাইকে চলতে হবে।”


প্রশাসনের সংবাদ সম্মেলন
প্রশাসনের সংবাদ সম্মেলন


সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে দোয়ারাবাজার থানার ওসি জাহিদুল হক বলেন, 


“বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।”


ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে সদর ইউনিয়নের মংলারগাঁও গ্রাম ও উপজেলা সদরের বাজারে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।


এ ঘটনায় পুলিশ মংলারগাঁও গ্রামের প্রফুল্ল দাসের ছেলে আকাশ দাসকে (২০) আটক করেছে; যার বিরুদ্ধে আরেকজনের ফেইসবুক পোস্টে গিয়ে ধর্মকে অবমাননা করে কমেন্ট করার অভিযোগ তুলেছে এলাকার কিছু লোকজন।


এ বিষয়ে ওসি জাহিদুল বলেন, “আকাশ দাসের আইডি থেকেই ফেইসবুকে কমেন্টটি করা হয়েছে; পুলিশ এটির প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে। আর এ ঘটনায় সাইবার আইনে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আকাশকে আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।” 


সূত্র: bdnews24


-0-0-0-0-0-0-0-


ভাঙচুর করা হিন্দু বাড়ির ছবি
ভাঙচুর করা হিন্দু বাড়ির ছবি

‘ধর্ম অবমাননা’: সুনামগঞ্জের হিন্দু বাড়িতে হামলা, যুবক আটক


কয়টি বাড়িতে হামলা হয়েছে জানতে চাইলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওসি জাহিদুল হক বলেন, “সেটি হিসাব করা হয়নি। ফেইসবুকে পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে ঘটনটি ঘটেছে।”


সিলেট প্রতিনিধি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, Published : 04 Dec 2024, 01:36 AM, Updated : 04 Dec 2024, 01:44 AM


ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার একটি গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।


মঙ্গলবার রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের মংলারগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে দোয়ারাবাজার থানার ওসি জাহিদুল হক জানান।


এ ঘটনায় পুলিশ মংলারগাও গ্রামের প্রফুল্ল দাসের ছেলে আকাশ দাসকে (২০) আটক করেছে; যার বিরুদ্ধে আরেকজনের ফেইসবুক পোস্টে গিয়ে ধর্মকে অবমাননা করে কমেন্ট করার অভিযোগ তুলেছে এলাকার কিছু লোকজন।


সুনামগঞ্জ জেলার ডিসি মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া ওই গ্রামে পরিস্থিতি শান্ত থাকার কথা তুলে ধরে বলেন,


“তেমন কিছু হয়নি। প্রশাসনের নজরদারিতে আছে পুরো বিষয়টি।”


তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়।


রাত দেড়টার পর দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহের নিগার তনু বলেন, 


“পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহলে রয়েছেন। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।


“উত্তোজিত জনতা ওই যুবকের বাড়িতে গিয়েছিলেন, তখন কিছু ভাঙচুর হয়েছে। তবে কোনো মন্দির ভাঙচুর করা হয়নি। বাড়িঘর ও দোকানপাট কিছু ভাঙচুর হয়েছে। আমি আবার সকালে গিয়ে সবকিছু দেখব।”


সুরমা নদীর এপারের গ্রাম মংলারগাঁও এবং ওপারের গ্রাম ঢোলপুষি। ঢোলপুষি গ্রামের দুজন বাসিন্দা রাতে বলেন, মংলারগাঁও গ্রামের হিন্দুদের বাড়ি-দোকানপাটে হামলা, লুটপাটের খবর তাদের স্বজনদের কাছ থেকে জেনেছেন। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।


তারা বলেন, সন্ধ্যার পর আশপাশের কয়েকটি গ্রামের কিছু উত্তেজিত জনতা মিছিল নিয়ে আকাশের শাস্তি দাবি করেন। এসময় বিক্ষুব্ধদের একটি অংশ কয়েকটি বাড়িঘর, দোকানপাটে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।


কয়টি বাড়িতে হামলা হয়েছে জানতে চাইলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওসি জাহিদুল বলেন, “সেটি হিসাব করা হয়নি। ফেইসবুকে পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে ঘটনটি ঘটেছে। যেহেতু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে, উত্তেজিত জনতা ওই যুবকের বাড়ি গিয়েছিল।”


তিনি বলেন, 


“আটক যুবকের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত।”


সূত্র: bdnews24


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ