সনাতন পরিষদের বিক্ষোভ: নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের ভূমিকা অন্য রকম হবে, যদি...

মন্দিরে ভাঙচুর ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবিতে সম্মিলিত সনাতন পরিষদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ। শুক্রবার জাতীয় জাদুঘরের সামনে
মন্দিরে ভাঙচুর ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবিতে সম্মিলিত সনাতন পরিষদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ। শুক্রবার জাতীয় জাদুঘরের সামনে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা, প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২৩: ০০


মন্দিরে ভাঙচুর ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবিতে সম্মিলিত সনাতন পরিষদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ। শুক্রবার জাতীয় জাদুঘরের সামনেছবি: প্রথম আলো


দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোনো ঘটনারই বিচার হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ সরকার এসব সহিংসতার বিচার না করে চুপ থাকলে আগামী নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের ভূমিকা অন্য রকম হয়ে যাবে।


রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আজ শুক্রবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে এসব কথা বলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা।


৫ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গি থানার ধানতলা ইউনিয়নের ১৪টি মন্দিরে হামলা–ভাঙচুর ও পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মতুয়া সম্মেলনে হামলার প্রতিবাদ এবং দুষ্কৃতকারীদের শাস্তির দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে সম্মিলিত সনাতন পরিষদ।


    সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন, সংখ্যালঘু কমিশন গঠনসহ নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন না করলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আওয়ামী লীগকে বর্জন করবে ও আগামী দিনে দলটিকে কেউ ভোট দেবে না বলে সতর্ক করে দেন হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র সুমন কুমার রায়।


পরিষদের সভাপতি হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন,


 ‘সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চলছে দিনের পর দিন, কোনো না কোনোভাবে, কোনো না কোনো জায়গায়। এর অবসান হচ্ছে না। এসব ঘটনা যখন ঘটছে, তখন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্লিপ্ততা আমাদের অবাক করে দিচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা নিজেদের অসাম্প্রদায়িক শক্তি বলে দাবি করছেন, অথচ সাম্প্রদায়িকতা প্রতিনিয়ত দেশে চলছে। এটি অশনিসংকেত।’


সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল বলেন, 


‘আমরা আপনাকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়েছি। এই নির্যাতন করার জন্য ক্ষমতায় বসিয়েছি? আপনারা কেন চুপ আছেন? নির্যাতন হচ্ছে, তাঁদের বন্দী করছেন না, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।’ 


তিনি বলেন, 


‘সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, আপনারা চুপ করে থাকবেন না। তাহলে হিতে বিপরীত হবে। সামনের নির্বাচনে আমাদের ভূমিকা অন্য রকম হয়ে যাবে।’


সমাবেশে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র সুমন কুমার রায় বলেন, 


‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হচ্ছে। একটা হামলারও বিচার হয়নি। বিভিন্ন জেলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় মিথ্যা অজুহাতে, গুজব রটিয়ে সংখ্যালঘুদের জেলে ভরা হচ্ছে।’ 


সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন, সংখ্যালঘু কমিশন গঠনসহ নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন না করলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আওয়ামী লীগকে বর্জন করবে ও আগামী দিনে আওয়ামী লীগকে কেউ ভোট দেবেন না বলে সতর্ক করে দেন তিনি।


ইসকনের ফুড ফর লাইফের পরিচালক রূপানুগ গৌর দাস ব্রহ্মচারী বলেন, 

‘কোনো একটি ঘটনার কথা বলবেন যে তার সুষ্ঠু তদন্তের পর বিচার হয়েছে? ফলে এখন যা ঘটছে, তা আগের ঘটনার ধারাবাহিকতা। যথার্থ প্রতিকারের ব্যবস্থা না নেওয়ায় এসব ঘটছে। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করুন। তাহলে এমন ঘটনা আর ঘটবে না।’


হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দির ভাঙছে ও লুটপাট হচ্ছে অভিযোগ করে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি সোনালী দাস বলেন, 

‘প্রশাসন জানে। কিন্তু তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলছে না। প্রধানমন্ত্রী, কেন আপনি আমাদের এভাবে অরক্ষিত করে রেখেছেন? সামনের নির্বাচন যদি সাফল্যমণ্ডিত করতে চান, তাহলে আমাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করেন।’


সনাতন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার আচার্য মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন। মানববন্ধন শেষে মোমবাতি প্রজ্জ্বালন করেন অংশগ্রহণকারীরা। এরপর বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।


সূত্র: প্রথম আলো

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ