বাংলাদেশে লাভ জিহাদ বাড়ছে - অপরাজিতা পূজা

বাংলাদেশে হিন্দু মা-বাবা তথা পরিবার এক রাশ উৎকণ্ঠা নিয়ে তার ছেলে-মেয়েকে স্কুল-কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে পড়তে পাঠায়। উৎকণ্ঠার কারণ আর কিছু না, সোজা কথা সোজা ভাবে বললে লাভ জিহাদ। বাংলাদেশে এই ধর্মান্তরিতকরণ বা লাভ জিহাদ যে কি পরিমানে বেড়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ছলে-বলে-কৌশলে হিন্দু মেয়েদের সাথে প্রেম করো, রুম ডেট করো, পেটে বাচ্চা দাও এবং শেষে ব্ল্যাকমেইলিং করে ধর্মান্তরিত করো। সবাই সব দেখছে, বুঝছে, জানছে কিন্তু মুখে কেউ স্বীকার করবে না। 


হিন্দু মেয়েরা উনিভার্সিটিতে যেতেই তাদের পেছনে আদা-জল খেয়ে নেমে পরে ইয়াসিন-ফারদিন-আসাদ-জান্নাতুল। নানা ভাবে চেষ্টা করে হিন্দু মেয়েদের বন্ধুবৃত্তে ঢুকতে, ভালো সাজতে। ইয়াসিনরা যে আমাদের মন পেতে অনলাইন বা Offline এ কি পরিমান পরিশ্রম করে তা বাংলাদেশের প্রতিটা হিন্দু মেয়ে জানে। আপনি চাইলে আপনার মেয়ের Whatsapp & মেসেঞ্জার চেক করেন। প্রথম প্রথম এই ইয়াসিনরা খুব উদার-সাম্যবাদী-মুক্তমনা, এমনকি হিন্দু মেয়েদের মন পেতে তার সাথে ঢাকেশ্বরী মন্দির বা রমনা কালীবাড়ি গিয়ে পূজার প্রসাদও চেটেপুটে খাবে। যে রবীন্দ্রনাথকে ইয়াসিন-আসাদুজ্জামানরা ঘৃণা করে সেই রবীন্দ্রনাথের কবিতা পাঠিয়ে আপনাকে ইমপ্রেস করতেও কুন্ঠাবোধ করবে না। এরপরও যদি আপনার আপত্তি থাকে তাহলে বলবে, চলো আমরা পালিয়ে ইউরোপ যাই। সেখানে গিয়ে না হয় যে যার ধর্ম পালন করলাম। যেই একবার আপনি তার ভালোমানুষিতে ভুলে গেলেন অমনি আপনি জীবনের সব থেকে বড় ভুল করলেন। কিছুদিন পরেই সে ঠিক তার আসল রূপ দেখাবে। আপনাকে জোর করে গরুও খাওয়াবে, টাইটেলও বদলাতে হবে, আবার বাচ্চা ছেলে হলে স্কিন অফ করাতে হবে। কি মহান প্রেম! তখন আপনি না পারবেন ফেলতে, না পারবেন গিলতে। 


বাংলাদেশের স্কুল-কলেজ বা ইউনিভার্সিটির পরিবেশও বিশেষ ভালো না। সারা বিশ্ব যেখানে গুড মর্নিং, গুড afternoon বলে শিক্ষকদের সম্মান জানায়, সেখানে আপনি বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিম-খ্রীষ্টান যাই হন আপনাকে সালাম দিতে হবে। সালাম না দিলে প্রফেসরদের আসল রূপ দেখবেন। শ্রদ্ধেয় প্রফেসর মাসুম, ফাইরুজরা প্রকাশ্যে নিজের ধর্মের গুণগান করবে, আর হিন্দু ধর্ম নিয়ে বিদ্বেষ আর ঘৃণা। বাংলাদেশ ছাড়া আর কোন দেশে ধর্ম নিয়ে বন্ধুদের মধ্যে আলোচনা হয় বলতে পারেন? হিন্দু ছাত্র-ছাত্রীদের কি পরিমান বুলিং করা হয় তা আপনার ভাবনার বাইরে। সে পড়তে গেলো ফিজিক্স আর তাকে জিজ্ঞেস করা হবে সবাই মিল, হিন্দু ধর্মে এই আছে কেন, ওই আছে কেন। যদি হিন্দু স্টুডেন্টটি ধৈর্য্যের সীমা ঠিক রাখতে না পারে বা কাউন্টার করে তখন আবার ধর্ম-অবমাননার মিথ্যে মামলায় তাকে ফাঁসানো হবে। কি মহান দেশ আমাদের! 


সবাই সব জানে, বোঝে, প্রাইভেট ধর্মীয় গ্রুপ গুলোতে সারাদিন আলোচনা করে এসব নিয়ে, কিন্তু প্রকাশ্যে হয়তো বলে না। আমার জাস্ট একটাই কথা, এই লাভ জিহাদ বলি বা ধর্মান্তরিতকরণ তা আসলে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ বাড়াচ্ছে, ঘৃণার পরিবেশ তৈরী করছে। মুসলিমের মেয়ে-বৌ আজীবন মুসলিম থাক, আর হিন্দুর মেয়ে-বৌ আজীবন হিন্দু। অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ কারোর দিকে না যাই। 


যে মেয়ে উঠোনে আল্পনা দেখে বড় হয়েছে সে অন্য পরিবেশে গিয়ে উঠোনে গরুর রক্ত দেখে ভালো থাকবে না বা ভাইস ভার্সা। একটা সময়ের পর এসব মেয়েদের সামনে তিনটে অপশন পরে থাকে: বেশ্যাবৃত্তি, আত্মহত্যা আর অপমান-গঞ্জনা নিয়ে ভিক্ষা করে খাওয়া, কারণ চা খাওয়া হয়ে গেলে প্লাস্টিকের কাপের জায়গা হয় “ডাস্টবিন”।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ