সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রদ্ধেয় একজন শিক্ষকের বরাত দিয়ে একটা লেখা আপনারা সবাই পড়েছেন। যা যা পূর্বে বলেছিলাম সেগুলোই ধীরে ধীরে বাইরে বের হওয়া শুরু করছে।
এমন কোন ডিপার্টমেন্ট,ব্যাচ নেই যেখানে ১/২ জন ধর্মান্তরিত মেয়ে বা ছেলে নেই। বছরখানেক আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে "অংকন বিশ্বাস" এর মৃত্যুর পর এই লাভ জিহাদের ব্যাপারটা বেশ আলোচিত হয়েছিল।কিন্তু এ পর্যন্তই; এটা নিয়ে পরবর্তীতে আর কোন পদক্ষেপ কেউ নেয়নি। ফলাফল, ধর্মান্তরিত হয়ে চলেছে।
অঙ্কনের মৃত্যুর পর সবাই একটু সচেতন হবে ভেবেছিলাম, কিন্তু কেউ শিক্ষা নেয় না এসব ঘটনা থেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ছেলে বা মেয়েরা কেন ধর্মান্তরিত হচ্ছে, এর পেছনে কয়েকটি কারণ খুঁজে বের করা যাক।
মেয়েদের ক্ষেত্রে -
১/ অতিরিক্ত মুসলিম বন্ধু রাখা; তাদের সাথে ওঠবস করা। পরবর্তীতে নির্ভরশীল হয়ে পড়া। পরবর্তীকালে আবেগের নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে রিলেশনে জড়িয়ে পড়ে।
এখানে অনেক মেয়েই বলতে পারেন আমারও মুসলিম বন্ধু আছে, কই আমাদের মধ্যে তো এমন কিছু হয় না। আপনাদের মধ্যে হয় না তার মানে এই না যে আরেকজনের সাথেও হবে না।
২/ শাস্ত্র সম্পর্কে একেবারেই অবগত নয় এরা। এরা বোঝে কেবল বছর বছর পূজা করতে হবে, আনন্দ করতে হবে, ব্যস এতটুকুই।
৩/ রুমমেইট দের প্ররোচনায় পড়া।এটা ছেলে মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই ঘটে। কোন নামাজি রুমমেইট হলে তো কথাই নেই। পাঁচ বেলা নামাজ পড়বে, ওয়াজ শুনবে এবং হিন্দু মেয়েকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করবে। হিন্দু মেয়েটি যেহেতু এগুলো সম্পর্কে অবগত নয় সেহেতু উত্তর দিতে পারবে না। এই সুযোগে মুসলিম মেয়েটি তাকে বোঝানো শুরু করবে, ওয়াজ দেখাবে ইত্যাদি পন্থা অবলম্বন করবে।
৪/ এটিই সবচেয়ে প্রধান কারণ মনে করি; পরিবার থেকে শাস্ত্রীয় জ্ঞান এবং বাস্তবিক জ্ঞান কোনোটাই না পাওয়া। এরা শিখে এসেছে সকল ধর্মই সমান, সুতরাং মুসলিম ছেলে আর হিন্দু মেয়েদের সম্পর্ক হওয়া স্বাভাবিক।
তার চেয়েও বড় ব্যাপার এরা নিজের ধর্ম সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জানেনা। এই না জানা এদের জীবনে অভিশাপ হয়ে নেমে আসে।
৫/ আর্থিকভাবে সাহায্য পাওয়া এবং অনেকেই এই ব্যাপারটা থেকেই পরনির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
৬/ অতিরিক্ত মুক্তচিন্তার ভাবধারা পোষণ করা।
আরও কিছু যোগ করতে পারেন এগুলোর সাথে।
এবার আসি ছেলেদের ক্ষেত্রে -
১/ ছেলেদের ক্ষেত্রে প্রধান ও একমাত্র কারণ হচ্ছে নিজ ধর্ম সম্পর্কে না জানা। বেদাদিশাস্ত্র অধ্যয়ন না করা এবং ন্যূনতম ধারণা না থাকা।
২/ ওয়াজ দেখা এবং বন্ধুদের মাধ্যমে ব্রেনওয়াশ হওয়া।
২/ ৩ মাস পূর্বে নৃবিজ্ঞানের যে ছেলেটি ধর্মান্তরিত হয়েছে সে নিজেই বলেছে যে ওয়াজ শুনতে শুনতে ইসলাম সম্পর্কে ভালো লাগা কাজ করেছে।
৩/ মুসলিম মেয়ের সাথে প্রেমে জড়িয়ে ধর্ম পরিবর্তন করে ফেলা।
দেখেন, ধর্মান্তরের ক্ষেত্রে প্রেম গৌণ বিষয় হিসেবে বিবেচ্য। মুখ্য বিষয় হচ্ছে পরিবার থেকে এসব সম্পর্কে শিক্ষা না দেওয়া। বাস্তবতা সম্পর্কে ছেলে মেয়েকে অবগত না করানোর ফলাফলই আজকের এই ধর্মান্তর প্রসেস।
আরেকটা ব্যাপার একটু বলি-
এক্ষেত্রে হিন্দু মেয়েরা বোকা নাকি হরমোন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, এটা বুঝতে পারি না। বেশিরভাগই দেখি রিলেশনে জড়ানোর কয়েক মাসের মধ্যে ফিজিক্যালি ইনভলভ হয়ে পড়ছে। এটা কিভাবে আসে?
আরেকটা ঘটনাও হয়তো আপনারা সবাই জানেন,
করোনা পরবর্তী সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন স্বনামধন্য শিক্ষিকা ধর্মান্তরিত হয়েছিল। আমি বারবার বলি, একজন গোড়া মুসলিম ভয়ংকর তার চেয়ে শতগুণ বেশি ভয়ংকর একজন নওমুসলিম।
ধর্মান্তরিত হওয়ার পর তিনি যেভাবে সনাতন ধর্ম নিয়ে অপপ্রচার শুরু করলেন তা বলাই বাহুল্য। তার পেইজ থেকে প্রতিনিয়ত একের পর এক বিদ্বেষমূলক পোস্ট রিলিজ হতো।
সে যেভাবে নিজের স্বামী ও শাশুড়ির খারাপ চেয়েছে তা দেখলেই তার উপর থেকে শ্রদ্ধা উঠে যায়। তাকে দেখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ধর্মান্তরিত হয়।
এগুলো কেবল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা নয়, এগুলো প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ঘটনা। মুসলমানদের সংগঠনগুলো মারাত্মক স্ট্রং, যে কোন বিষয়ে এরা একত্রিত হয়ে কাজ করে। এক্ষেত্রে আমরা কোন পদক্ষেপই নিই না। অনেক সময় ছেলে বা মেয়ে ভুল বুঝে ভুল পথে এগোয়, তাদেরকে বোঝাতে পারলে ফিরে আসে। কিন্তু বোঝানোর কেউ থাকে না। ইনডিভিজুয়ালি বোঝাতে গেলে হেনস্তা হতে হয়, এজন্যই সাংগঠনিকভাবে অগ্রসর হওয়া অধিক জরুরি।
পরিশেষে একটাই কথা বলব, যাঁরা অভিভাবক আছেন তাঁরা বৃদ্ধ বয়সে চোখের জল ফেলতে না চাইলে বাচ্চাদেরকে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেন। একইসাথে তাদেরকে বাস্তবতা শেখান।
বিশ্ববিদ্যালয় বা বিভিন্ন ইন্সটিটিউটে পড়ুয়া ভাই ও বোনেরা, নিজেদের জায়গা থেকে যতটুকু বোঝানো সম্ভব বোঝাতে চেষ্টা করবেন। নিজেদের মধ্যে দারুণ একটা ইউনিট গড়ে তুলুন, যেটা নিজেদের জন্যই ভালো।
মূলকথা যে যেখানে আছি, সুযোগ পেলে সে সেখান থেকেই ধর্মের নিমিত্তে কাজ করে যাব। আজ আরেকজনকে দেখে না শিখলে পরবর্তীতে এগুলো নিজেদেরই ফেস করা লাগবে।।
ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব কতখানি সেটা উদার হিন্দু জাতি আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। প্রতিটি পাড়া ও মহল্লায় হিন্দু শাস্ত্র জানা ও বোঝার জন্য ছোট পরিসরে হলেও স্থান বের করা প্রয়োজন। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বাবা-মা'র সচেতনতা।
আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে, এন্টি-লাভজিহাদ কমিউনিটি গঠন করা। যারা প্রতিটি জায়গায় এই ব্যাপারে সচেতনতা ছড়াবে এবং সবাইকে বাস্তবতা বোঝাবে।
সনাতন ধর্মের ইতিহাস গৌরবের ইতিহাস, দেড় হাজার বছর পূর্বে একজন মরুভূমির ডাকাতের হাত ধরে জন্ম নেওয়া সভ্যতাবিরোধী ধর্মের কাছে এভাবে নতি স্বীকার করবে না কখনো।
সংগৃহিত
0 মন্তব্যসমূহ