'কৃষ্ণ' নামের তত্ত্বকথা

'কৃষ্ণ' নামের তত্ত্বকথা

।'কৃষ্ণ' নামের তত্ত্বকথা।"

.****-***-.-#-.-***-****.

.

# অনাদির আদি ব্রহ্ম পরমেশ্বর ভগবানের সবচেয়ে প্রিয় নাম 'কৃষ্ণ'। এই নামের সাহায্যেই ভগবান সৃষ্টির সকল কিছুই আকর্ষণ করে আছেন। কিন্ত আমরা অনেকেই জানিনা, কি আছে এই মধুর 'কৃষ্ণ' নামে। আমরা একটু জানার চেষ্টা করি এই 'কৃষ্ণ' নামতত্ত্ব।

.

# 'কৃষ্ণ' নামের মধ্যে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড লুকিয়ে আছে। 'কৃষ্ণ' লিখতে হলে প্রথমে ব লিখে কুন্ডলি দিয়ে ঋ দিয়ে ষ্ণ যোগ করতে হয়।

.

# এ ভাবে দাঁড়ায়, 'ক' এর প্রথম টানে ব্রহ্মা, দ্বিতীয় টানে বিষ্ণু, তৃতীয় টানে মহেশ্বর বিরাজ করেন। অর্থাৎ 'ব' হয়ে গেলো। এবার কুন্ডলিনী হলেন রাধা।

.

ঋ -তে বিরাজ করেন যোগমায়া। আর,

.

ষ্ণ-তে বিরাজ করেন ত্রিভূন, চন্দ্র, অরুন, বরুন, আদি ইত্যাদি।

.

.

# এই তত্ত্বটি ধ্যান যোগে ঋষি গর্গাচার্য্য মুনি জানতে পেরেছিলেন তখন, যখন নাম করনের জন্য নন্দরাজ ও মা যশোদার আয়োজনে ঋষি এসেছিলেন সেই পবিত্রময় অনুষ্ঠানে।

.

# ঋষি গর্গাচার্য্য ছিলেন একজন ত্রিকালদর্শি মহাত্মা। তাই কৃষ্ণ নামটি তিনিই ধ্যানযোগে পেয়ে, নামকরণ করেছিলেন।

.

# সৌরমন্ডলে সূর্যের আকর্ষনে যেমন প্রতিটা গ্রহ বা উপগ্রহ আপন আপন কক্ষপথে ঘুরে চলেছে। তেমনি এই সমগ্র বিশ্বব্রহ্মান্ডকে যিনি নিজের দিকে আকর্ষন করে চলেছেন, তিনিই হলেন কৃষ্ণ। এই সমগ্র বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড়ো আকর্ষন সত্ত্বা হলেন এই কৃষ্ণ, যাঁর আকর্ষন শক্তি থেকে কেউ রেহাই পেতে পারে না।

.

# এই শব্দ থেকেই গতি, শক্তি, রতি ও প্রেমের উদয় হয়।

.

# আহা! কিসের প্রেম গো! মা যশোমতির বাৎসল্য প্রেম। গোকুলের রাখালদের সখ্য প্রেম। আর ব্রজগোপীদের মধুর প্রেম। এই কৃষ্ণেই হলেন ভগবান। এবার মিলিয়ে দেখা যাক।

*

.

# ভগবান = ভ + গ + ব + আ + ন।

.

ভ- মানে ভূমি।

.

গ- মানে গগন।

.

ব- মানে বায়ু।

.

আ- মানে আগুন।

.

ন- মানে নীর।

*

.

# অর্থাৎ 'ভগবান' শব্দের মানে ক্ষিতি-অপ-ত্বেজ-মরুৎ-ব্যোম। ভোগ ভোক্তাকে যিনি সমজ্ঞান করে রেখেছেন তিনি ভগবান। এই তো গেলো অন্তর্নিহিত অর্থ।

.

# বাহ্যিক অর্থ হলো, ভগ শব্দটির অর্থ হলো ঐশ্বর্য্য, ধার্য্য, জ্ঞান, যশ, শ্রী ও বৈরাগ্য। আর বান শব্দের অর্থ অধিকারী। এই ছয় প্রকার সম্পদ যাঁর মধ্যে অনন্ত পরিমানে বিদ্যমান তিনিই ভগবান। ইনি নিরাকার পরমব্রহ্ম। ইনি সব কারনের কারন। ইনি অবিনাশী। ইনি স্বয়ম্ভু। বেদের মধ্যে 'ওঁ'কার ইনি। জলের মধ্যে 'রস' ইনি। সূর্যের মধ্যে তেজ ইনি। চন্দ্রের মধ্যে 'শোভা' ইনি। একাদশ রুদ্রের মধ্যে ইনি। দ্বাদশ আদিত্যের মধ্যে ইনি। অষ্টবসুর মধ্যে ইনি। এই ঈশ্বর যুগে যুগে বিভিন্ন মানবীয় অবতারে পৃথিবীতে এসেছেন। যিনি সব পারেন, তিনি কি আর মানব হয়ে পৃথিবীতে আসতে পারেন না! অবশ্যই পারেন!

.

# মা যোশদা কৃষ্ণের মুখের ভিতরে সৌর জগৎ, মহাকাশ,

নিহারীকা অর্থাৎ সমস্ত বিশ্ব ব্রহ্মান্ড দর্শন করেছেন। আর

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের প্রারম্ভে পান্ডব বীর অর্জুন ভগবানের মহাকাল রুপী বিশ্বরুপ দর্শন করেছেন।

.

# পরমকরুনাময় গোলোকপতি সচ্চিদানন্দ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর একান্ত হ্লাদিনী শক্তি শ্রীমতী রাধারাণী আর সকল বৈষ্ণব ভক্ত পার্যদদের শ্রীচরণকমলে আমাদের প্রার্থনা, সবার জীবন মঙ্গলময়, কল্যাণময়, প্রেমময়, ভক্তিময়, মুক্তিময়, শান্তিময়, সুন্দরময় এবং আনন্দময় করে রাখুন নিরন্তর।(দেবেন্দ্র)

"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ

কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে

হরে রাম হরে রাম

রাম রাম হরে হরে!!"

!!জয় হোক সকল ভক্তদের!!

!!জয় শ্রীকৃষ্ণ!! জয় রাধে!!



******

Source

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ