মুঘলদের অন্য কেউ শিক্ষার জন্য কিছু করেছে বলে ইতিহাস আমাদের জানায় নি, তবু মুঘলরা নাকি ভারতের জন্য অনেক কিছু করেছিলো। ঔরঙ্গজেব ৫০০ জন মুসলিম স্কলারকে বাইরের দেশ থেকে ডেকে এনে ফতোয়া-এ -আলমগিরি নামে একটা বই লেখায়। ভারতের জনগণ কোন আইনে চলবে সেটা ওই বিদেশের বুদ্ধিজীবিদের লেখা বইতে ছিল। বলাই বাহুল্য ওই আইন হানাফি মতে মানে সুন্নি মুসলিমরা যে আইনে চলে সেই মোতাবেক রচিত।
জিয়াউদ্দিন বারণী ছিল একজন তুর্কী ইতিহাসবিদ। ফিরোজ শাহ তুঘলকের রাজসভার শোভা বর্ধন করে সেই সময়কার ইতিহাস লিখত। বলাই বাহুল্য রাজার ইতিহাস কেউ খালিপেটে লিখবে না। রাজার মাইনে করা কর্মচারী হত এরা।
সেই মহান ঐতিহাসিক বলে যাকে মনে করা হয় সে তার বই ফতোয়া-এ-জাহান্দারিতে দিল্লির সুলতানদের দোষারোপ করছে যে কেন তারা হিন্দুদের পীড়ন করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে না! যাতে জিজিয়া থেকে টাকা রোজগার না কমে!
তার ফতোয়া-এ-জাহান্দারি থেকে আরও জানা যায় পসমান্দা অর্থাৎ নীচু জাতের মুসলিমদের শিক্ষায় কোনো অধিকার নেই। নীচু জাত কেবল নামাজের নিয়ম জানবে, উপোসের নিয়ম জানবে, ধর্মের জন্য দান করবে আর হজ করবে। এখন এই নীচু জাত কারা? বিদেশ থেকে এসেছে যারা বারণীর মতো, তারা মহান, উচ্চ। যাদের ধর্মান্তরিত করা হয় তারাই নীচু। নীচু জাত বিদ্যাশিক্ষা করলে তাদের যেন শাস্তি দেওয়া হয়, এ কথাও লিখে গেছে তুর্কি দেশের মহান ঐতিহাসিক।
পরে স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য পসমন্দাদের 'বদজাত' বলে অভিহিত করেন। তিনিই এএমইউ এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনিও পসমন্দাদের শিক্ষার অধিকার দেননি। তিনি ছিলেন মহান সৈয়দ। যখন ভারত রিপাবলিক হয়নি এএমইউতে ভর্তির জন্য সার্টিফিকেট অফ শরাফত লাগত।
সব মুসলিমদের জন্য শিক্ষার অধিকার দেয় ভারত রিপাবলিক। মজার বিষয় হলো সবাই কেন শিক্ষা পেত না, এজন্য দায়ী করা হয় হিন্দু ব্রাহ্মণদের। সাতশ বছরের মুসলিম শাসনে যারা কোনো রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণের জায়গাতেই ছিল না।
এই মহান ঐতিহাসিকের শেষ শয্যা রয়েছে হজরত নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগাতে। যেখানে কোটি কোটি ভারতীয় নিজেদের ইতিহাস না জেনেই শ্রদ্ধা জানিয়ে আসেন।
https://www.facebook.com/groups/4182602401806539/posts/6880634055336680/
0 মন্তব্যসমূহ