নমস্কার, আজ একটা কথা আমি শেয়ার করতে এসেছি, আমি পড়াশোনা শেষ করা, সরকারি চাকুরীজীবী মেয়ে, যদিও বেতন আহামরি তেমন না, আমি অবিবাহিত, ছোট থেকে এতকস্ট করে বড় হয়েছি, আমি শহরে বড় হয়েছি যেখানে সব মুসলিম পরিবার, ছোট থেকে শহরে থাকতাম, ছোট বেলায় ভাবতাম পূজা মানে একটা নতুন জামা পাব, যদিও এ বাবার তেমন ইনকাম না থাকায় তেমন পূজায় জামা কাপড় পাওয়া হয় নাই, কিন্তু আমি যখন ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে গীতাপাঠ শিখতাম, আমি গীতা পরতাম বইয়ের মত, আমার আলাদা কোন সময় ঠিক করা থাকত না, সবসময় হাটতে হাটতে পড়তাম, ভাবতাম, যা হয়ে যাক ভগবান আমাকে রক্ষা করবে, কত মানুষ ভুল বুঝাতে চাইত, আমি ভাবতাম গীতায় কি বলেছে, এতকথা বলার কারণ, এখন বিয়ের জন্য সবাই আমার বেতন নিয়ে মাথা ব্যাথা।
কিছুদিন আগে সরকারি চাকরি করা ছেলের প্রস্তাব আসে, আমার বাবা কোন খোঁজ না নিয়ে আমরা দেখা করতে যায়, ছেলের কথায় আমার পরিবারের ভালো লাগলেও আমার মন সায় দিল না, তাও পরিবারের চাপে রাজি হয়, ছেলে আমাকে বলছে আমার বোন মুসলিমকে বিয়ে করেছে, আমার বোনকে যে সম্মান করবে না, আমি সহ্য করব না, আমি মুসলিম হয়েছে শুনে অসুস্থ হয়ে পরি, মাথা গরম হয়ে কিছু কথা শুনিয়ে দেয়, সে বলে বিয়েতে তার বোন আসবে, কে কি বলে সে দেখবে, সে তার বোনের থেকে নাকি টাকা নিয়েছে, আমি কথা বলা বন্ধ করে দি, তারপর সে ছেলে আমাকে বলছে আমার নাকি মাথা খারাপ, আমি নাকি পুরান ধ্যানধারণার মেয়ে, আমি নাকি আমার বেতন কাউকে দি না, স্বার্থপর, আমি তাও কিছু বলি নাই, এগুলো সব মেসেজে লিখত, ফোন দিলে আমি কখনো রিসিভ করতাম না, প্রথমে সে এত মেসেজ দিত, সে তখনই বিয়ে করে ফেলবে, কিন্তু আমি তেমন মেসেজে র উত্তর দিতাম না, এগুলো হয়েছে আজ ১৫ দিন ধরে, পরে আমার বিরক্ত লাগছিল দেখে আমি বলাতে তুমি যে রকম সেরকম খুজে পাও, তোমার কোন ক্লাস নাই, ছোট মনের এসব বলছে।
এরপর থেকে আমি ডিপ্রেশনে আর বেশি ভুগছি, আমি প্রতিদিন চাকরিতে যাওয়ার আগে স্নান করে গীতাপাঠ, গায়ত্রী মন্ত্র, মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র, ঠাকুরের প্রার্থনা করি, আমার যত কস্ট হোক, আমি ঠাকুরের কাছে গিয়ে গীতাপাঠ করতে শুরু করি, রাতে টেনশনে ঘুম না আসলে ঠাকুরের নাম করতে করতে ঘুমাই, আমি শুধু ভাবি আমি কি সত্যি কতটা খারাপ, আমার কেন এত কস্ট ঠাকুর, আমার কি অন্যায়,
আর বলে রাখি, খুব ছোট থেকে টিউশন করে, ব্যাচ পরিয়ে সংসার চালিয়েছি, আমার ২ বছরের ছোট বোনকে সর্বোচ্চ পড়াশোনা করে নিজে দাড়িয়ে থেকে বিয়ে দিয়েছি। ভগবানকে বলি আমার অপরাধ কি ঠাকুর?
****
এটা ছেলেটার সমস্যা। আপনি ডিপ্রেশন এ ভুগবেন কেন??
মাঝে মাঝে অপরের সমস্যা এড়িয়ে যান। আপনি ঠিক কাজই করেছেন।
****
এটাই বলি যে আপনার বিচার ও চিন্তাধারা শ্রেষ্ঠ, আপনার প্রতি অনেক অনেক শ্রদ্ধা রইলো । এই ছেলের সাথে বিয়ে কইরেন না এই ছেলে একটা সাইকো বলা যায় । বড় বাঁচা বেঁচে গেছেন আপাদত ।
আপনি ধর্মের পথে অবিচল তাই আপনার ধর্ম ও ধর্মীয় জ্ঞানই আপনাকে এহেন একটা ছোটলোক ছেলের থেকে রক্ষা করেছে ।
আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো 🙏🏼🙏🏼
****
একদিন দেখবেন ব্রেন ওয়াসড হয়ে এই ছেলে আপনাকে মুসলিম হওয়ার জন্য চাপ দিবে
****
দিদি আপনি অযথা চিন্তা করে নিজেকে ডিপ্রেশনের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। এটা কোনো ব্যাপার না দিদি বিশ্বাস করেন। এসব ফাও অসুস্থ মনের মানুষের সাথে বিয়ে না হওয়াটাই ভালো। একবার শুধু এটা চিন্তা করে দেখুন সে বলছে তার বোন তাকে টাকা দিয়েছে তাই সে চাই তার বোনকে সম্মান করতে। এখন আপনি ও চাকরি করেন আপনি টাকা দিলে ঠিক আর না দিলে তখন কি হতে পারে আপনি নিজেই চিন্তা করুন। দুনিয়াতে এখন কিছু মানুষ আছে ভালোকে খারাপ আর খারাপকে ভালো। কিন্তু তাই বলে কি ভালো খারাপ হয়ে যায়? নিশ্চয় না। সো ব্লক দিন অসুস্থ মানুষটিকে। অনেক কষ্টে এইটুক এসছেন আরেকটু কষ্ট করলে হয়তো একটা ভালো জীবনসঙ্গী পাবেন দিদি। আর চিন্তা একদমই করবেন না। ডিপ্রেশন জিনিসটা ভীষণ খারাপ, যার আসে সেই জানে দিদি। তাই চিল থাকুন দিদি
****
আপনি তো রত্ন দিদি, এই বিয়ে না করাই ভালো মনে হয়, মনের সাথে যুদ্ধ করে সারাজীবন কিভাবে থাকবেন তার চেয়ে বড় কথা আপনার সন্তানদের ধর্মপথে মানুষ করা কষ্ট হয়ে যাবে
****
. এই বিয়ে অবশ্যই করবেন না। যেহেতু আপনি মানতে পারবেন না ছেলের বোনকে সেহেতু এই বিয়ে থেকে বিরত থাকুন। আপনার জীবন দূর্বিষহ হয়ে উঠবে, মন থেকে আসবে না সম্মান তারপরও জোর করে করাবে সব। আর ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা তো ছেড়েই দিলাম। আপনার পরিবারের সাথেও তাদের সম্পর্ক খারাপ হতে থাকবে। আপনি পরবেন বিপদে। এখনই যে ছেলে এত জোর করে, পরে কি করবে ভাবাই যায় না। আপনার সাথে যেহেতু ছেলের কমিটমেন্ট নেই, এড়িয়ে যান।
আমি মাঝে মাঝে ভাবি এই মেয়েগুলো কত ভাগ্যবান, এত বড় অন্যায়ের পরো পরিবার সব মেনে নেয়।
0 মন্তব্যসমূহ