সুনামগঞ্জে হিন্দু গ্রামে হেফাজত ইসলাম সমর্থকদের হামলা, ভাংচুর, লুটপাট

নোয়াগাঁও গ্রামের ৮৮টি বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের শিকার হয়েছে বলে জানাচ্ছেন কর্মকর্তারা
BIPLOB ROY, নোয়াগাঁও গ্রামের ৮৮টি বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের শিকার হয়েছে বলে জানাচ্ছেন কর্মকর্তারা


১৭ মার্চ ২০২১


সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার একটি হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে কয়েক হাজার মানুষ।


সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বিবিসিকে বলেন, হেফাজতে ইসলামের একজন নেতা মামুনুল হককে নিয়ে এক হিন্দু ব্যক্তির স্ট্যাটাস দেয়ার জের ধরে কয়েক হাজার মানুষ আজ সকালে নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা চালায়।


এসময় তারা অন্তত ৮৮টি বাড়িঘর ও সাত-আটটি পারিবারিক মন্দিরে ভাংচুর করে এবং লুটতরাজ চালায়।


তবে কয়েকজন এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে একজন স্থানীয় সাংবাদিক বলছেন, গ্রামটির চার থেকে পাঁচশ ঘরবাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট চালিয়েছে হামলাকারীরা।


এ ঘটনায় কোন হতাহতের খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।


জেলা প্রশাসক বলেন, আক্রমণ চলাকালে আতঙ্কিত হয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল গ্রামবাসীরা।


পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এরপর ফিরে আসে গ্রামবাসীরা।


সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, প্রশাসনের কর্মকর্তারাও সেখানে গেছেন। কিন্তু এরপরও সেখানে মানুষের মাঝে আতঙ্ক কাটেনি বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি।


BIPLOB ROY, গ্রামের সাত-আটটি পারিবারিক মন্দিরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়
BIPLOB ROY, গ্রামের সাত-আটটি পারিবারিক মন্দিরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়

 

জেলা প্রশাসক মি. হোসেন বিবিসিকে বলেন, সোমবার পার্শ্ববর্তী দিরাই উপজেলায় একটি ধর্মীয় সমাবেশে বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী এবং আরেকজন নেতা মামুনুল হক।


এই সমাবেশের পরদিন নোয়াগাঁও গ্রামের একজন হিন্দু যুবক মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন বলে অভিযোগ ওঠে।


এই স্ট্যাটাসের প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয় হেফাজতে ইসলাম মঙ্গলবার বিক্ষোভ সমাবেশ করে।


রাতেই অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং বুধবার সকালে আদালতে তাকে চালান দেয়া হয়।


কিন্তু এরপর ওই যুবকের গ্রামটিতে হামলা চালানো হলো।


জেলা প্রশাসক জানাচ্ছেন, এই হামলার ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


হেফাজতে ইসলামের বক্তব্য

হেফাজতে ইসলামের স্থানীয় নেতারা হামলার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।


দলটির কেন্দ্রীয় মহাসচিব নুরুল ইসলাম জেহাদী বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, এটি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনাা। এর সাথে হেফাজতকে জড়িত করা আমি ভালো মনে করি না।


তিনি বলেছেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার পরিকল্পনা হেফাজতের কখনো ছিল না এবং নেই।


সূত্র: বিবিসি

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ