বাংলাদেশের নতুন ২০ টাকার নোট নিয়ে হিন্দুবিদ্বেষী মুসলিমদের মতামত
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৫ সালের মে মাসের শেষের দিকে নতুন নোট প্রকাশ করে। নতুন তিনটি নোটের মধ্যে ২০ টাকার নোটে দিনাজপুরের কান্তজিউ মন্দিরের ছবি ব্যবহার করেছে। বাংলাদেশের হিন্দুবিদ্বেষী মুসলিমরা টাকায় মন্দিরের ছবি ব্যবহার করা নিয়ে প্রচন্ডরকম প্রতিবাদ করছে। ফেসবুক হিন্দুবিদ্বেষী, মন্দিরবিদ্বেষী মতামতে ছেয়ে গেছে, মুসলমানরা হিন্দুদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলার উস্কানী দিচ্ছে। ফেসবুকের লক্ষ লক্ষ মতামত থেকে কয়েকটি মতামত পাঠক সমীপে উপস্থাপন করা হলো।
Abdullah Sheikh
3 June 2025
বিরাট সংস্কার হচ্ছে দেশে।
২০ টাকার নোটে ছিল ৬০ গম্বুজ মসজিদ, সেটা সরিয়ে কান্তিজির মন্দির কেন?
২০ টাকার নোটে আসছে কান্তজিউ মন্দিরের ছবি।
কান্তজিউ শব্দটি এসেছে কান্ত + জিউ থেকে।
কান্ত মানে কৃষ্ণ, আর জিউ মানে বেচে থাকো, চিরজীবি হও।
কান্তজিউ মানে- কৃষ্ণ চিরজীবি হও।
এতদিন ২০ টাকার নোটে ছিল ষাট গম্বুজ মসজিদের ছবি। এখন মন্দিরের ছবি।
যে লোকগুলো বাংলাদেশের মানুষের সেন্টিমেন্ট বুঝে না এরা প্রশাসনে কোন যুক্তিতে এবং কোন যোগ্যতা বলে ডুকছে? এরা না বুঝে মানুষের সেন্টিমেন্ট। না বুঝে নিজেদের ধর্মীয় মূল্যবোধ।
#নোট: সংস্কারের পথ সুগম করতে যারা বুকের তাজা ব্লাড ঢেলে দিয়েছে, এদের ৯৯% মুসলিম ঘরের সন্তান। তাদের সেন্টিমেন্ট উপেক্ষা করার দুঃসাহস হয় কি করে? ওদের জনতান্ত্রিক সিস্টেমেই অধিকাংশের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন ছিল।
কিন্তু না, ওরা আমাদের ভাইদের আত্মত্যাগের কোন মূল্যায়ন করতে পারেনি। ওদের বিতর্কিত সংস্কারের মুখে লাথি মারি!
--------
Khaza Gias Uddin Mahmud
16 june 2025
তদিন শুধু শুনে আসছি। আজ নতুন ছাপানো ২০ টাকার একটা নোট হাতে পেয়ে দেখলাম, এর একপাশে মন্দিরের ছবি আর অন্য পাশে বৌদ্ধ বিহারের ছবি।এটা হয়তো তেমন কোনো বিষয় না, কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো আদৌ কি এই নোট এভাবে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে ছাপানোর দরকার ছিল। কারণ, এই নোটে আগে রাজশাহীর খুবই জনপ্রিয় প্রাচীন বাঘা মসজিদের ছবি ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের একটা দুষ্ট চক্র ফেসিস্টের দোসররা বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে খুবই কৌশলে এই ঘৃণিত কাজটি করেছে,যাতে মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত লেগে সরকার রোষানলে পড়তে বাধ্য হয়। এই চক্রকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।
-------
Habibur Rahman Habibi
29 May 2025
প্রতিবাদ জানাই ২০ টাকার নোটে মন্দিরের ছবি ব্যবহারের বিরুদ্ধে....
বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ — প্রায় ৯৫% মানুষ মুসলমান। এমন একটি দেশের সরকারি মুদ্রায় হিন্দু মন্দিরের ছবি ব্যবহার কতটা যুক্তিসঙ্গত? আমরা সব ধর্মের প্রতি সম্মান দেখাই, কিন্তু রাষ্ট্রীয় প্রতীক বা সরকারি নোটে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মের সংস্কৃতি-চিহ্ন বা নিরপেক্ষ স্থাপনা থাকাই কাম্য।
আমি চাই বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়টি বিবেচনায় নিক এবং ভবিষ্যতে মুদ্রা ডিজাইনের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হোক। আমরা কিভাবে শুক্রবার জুমার দিন পকেট থেকে মন্দিরের ছবি বের করে দান বাক্সে দিব?
"৯৫% মুসলিম দেশে ২০ টাকার নোটে ৬০ গম্বুজ মসজিদের জায়গায় মন্দির দেয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি..!
অবিলম্বে পরিবর্তন করার আহবান জানাচ্ছি..✊
-------
Junayed Ahmad
25 May 2025
২০ টাকার নোটে আসছে কান্তজিউ মন্দিরের ছবি।
কান্তজিউ শব্দটি এসেছে কান্ত + জিউ থেকে।
কান্ত মানে কৃষ্ণ, আর জিউ মানে বেচে থাকো, চিরজীবি হও।
কান্তজিউ মানে- কৃষ্ণ চিরজীবি হও।
২০ টাকা নোটে কান্তজিউ মন্দিরের ছবি দিলে,
ইচ্ছায় হোক, আর অনিচ্ছায় হোক, মুসলমানরা ‘কান্তজিউ’ শব্দ দিকে বার বার নযর পরবে।
মানে কৃষ্ণকে চিরজীবি হওয়ার জন্য প্রার্থনা করবে।
বিষয়টি ইসলাম ধর্ম অনুসারে কতটুকু শুদ্ধ হবে,
সেটা নিয়ে ভাববার দরকার আছে।
কান্ত মন্দিরটি ভারতীয় আগ্রাসনের একটি বড় প্রতীক।
আওয়ামীলীগের আমলে মন্দিরটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদশের পাসপোর্টে এই মন্দির ছবি জলছাপ হিসেবে দিলে,
মুসলমানরা ব্যাপক প্রতিবাদ করে।
আসলে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা দিনাজপুরে এই মন্দিরটি হাইলাইট করা,
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র’ এর একটি বড় প্রজেক্ট।
তারা চায়, এই মন্দিরটি বাংলাদেশের জাতীয় স্থাপনা হিসেবে স্থান পাক,
যার অংশ হিসেবে মন্দিরের ছবি টাকা বা পাসপোর্টে দেয়া হচ্ছে।
আপনাদের মনে থাকার কথা, ২০২৪ সালের মার্চ মাসে এই মন্দিরের পাশে নিজস্ব যায়গায় মুসলমানরা ৭৫ বছরের পুরাতন একটি মসজিদ পাকা করতে গেলে হিন্দুরা বাধা দেয়। সেই সময় কালবেলা পত্রিকার র’য়ের এজেন্ট সন্তোষ শর্মা ভুয়া সংবাদ ছাপায় প্রশাসনকে উত্তেজিত করে বলে- মসজিদের যায়গায় মন্দির হচ্ছে। (সূত্র:১) অথচ স্থানীয়রা জানায়- মন্দিরের যায়গা নয়, বরং কান্তনগর মসজিদটি ৭৫ বছরের পুরাতন। সেটি পাকা করতে গেলেই বাধা দেয় হিন্দুরা। মানে মন্দিরের আশেপাশেও তারা কোন মুসলিম স্থাপনা মেনে নিবে না (সূত্র:২)
-------
মুফ্তী মাঈনুদ্দীন বসন্তপুরী
26 May 2025
ছবি ব্যবহার আর মন্দির ব্যবহার এক নয়!
নতুন 'বিশ টাকা'র নোটে 'কান্তজিউ' মন্দিরের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তি জেলা দিনাজপুরে এই কান্তজিউ মন্দিরটি অবস্থিত এবং 'কান্তজিউ' মন্দিরটি হিন্দু সম্প্রদায়ের 'বড় প্রতীক' হিসেবে স্বীকৃত।
'কান্ত' অর্থ: কৃষ্ণ, 'জিউ' অর্থ: "বেঁচে থাকো থাকো,
চিরজীবী হও"। কান্তজিউ অর্থ "হে কৃষ্ণ, চিরজীবী হও"।
কেউ যদি 'বিশ টাকা'র নোট মসজিদের দান বাক্সে অনুদান হিসেবে দিয়ে থাকে তাহলে মন্দিরকে কৌশলে মসজিদে ঢুকানো হলো।
এসব কারা করছে..?? আমি মনে করি, যারা এসব করছে তারা নিঃসন্দেহে সুপরিকল্পিতভাবে মুসলমানদের উস্কানি দিয়ে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়।
এই নোট বাজারে আসার পূর্বে'ই পরিবর্তন করা জরুরী এবং পরিবর্তন করতে'ই হবে। ✊💪
-------
Khalid Saifullah
4 June 2025
২০ টাকার নোটে মন্দিরের ছবি নিয়ে আপনার কোনো অভিযোগ নেই।
হ্যাঁ, একদম ঠিকই বলছি। ভেবে-চিন্তেই বলছি।
কারণ 90% মুসলমানের দেশ ঠিক আছে কিন্তু 90% ই তো আর মুসলিম না, অনেকেই তো দলের কাছে, না হয় ভিন দেশী টাকার কাছে, ঈমান বিক্রি করে দিয়েছে।
#Bangladesh #Taka
-------
Arman Uddin
26 May 2025
২০ টাকার নতুন নোটে! মসজিদ ভেঙে মন্দিরের ছবি। ধরুন আপনি নিয়ত করেছেন মসজিদে বিশটা টাকা দান করবেন,পকেট থেকে টাকাটা বের করেই দেখলেন টাকায় একটা মন্দিরের ছবি তখন কি করবেন?। নিঃসন্দেহে এটা মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত।
নতুন ২০ টাকার নোটে কান্তজিউ মন্দিরের ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তি জেলা দিনাজপুরে এই কান্তজিউ মন্দিরটি অবস্থিত এবং কান্তজিউ মন্দিরটি হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় প্রতীক হিসেবে স্বীকৃত। কান্ত অর্থ: কৃষ্ণ, জিউ অর্থ: বেঁচে থাকো থাকো, চিরজীবী হও, কান্তজিউ অর্থ হে কৃষ্ণ, চিরজীবী হও।
কেউ যদি ২০টাকার নোট মসজিদের দান বাক্সে অনুদান হিসেবে দিয়ে থাকে তাহলে মন্দিরকে কৌশলে মসজিদে ঢুকানো হলো।
-------
Hasanur
26 May 2025
বাংলাদেশের নতুন টাকার নোট ২০২৫ এর,তবে ২০ টাকার নোটে মন্দিরের ছবি না দিলেই ভাল হত।
-------
Md Mohebbullah
অনলাইন অফলাইনে অনেক আলোচনা সমালোচনার পরেও বৃহত্তর জনগণের উপর চাপিয়েই দিলো মন্দিরের ছবি যুক্ত ২০ টাকার নোট।
ইউনুস সরকারকে অবশ্যই জবাব দিহি করতে হবে।
তবে একটা বলে রাখি এ ২০ টাকার নোট কখনোই আমার পকেটে ঢুকবেনা ইনশাআল্লাহ,
কেউ যদি চাপিয়ে দিতে চায় প্রয়োজনে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবো তাঁরপরও আমার পকেটে ঢুকতে দিবোনা,
দেশের সিংহভাগ জনগোষ্ঠী যদি এ টাকা বয়কট করে
এমনিতে মার্কেট থেকে চলে যাবে।
শাহবাদী আর মালাউনরা এ টাকা দিয়ে লেনদেন করে কয়দিন টিকিয়ে রাখতে পারবে দেখা যাবে....?
বিঃদ্রঃ .. এ টাকা পকেটে রাখলে ঈমান হারা হওয়ার আশংকা রয়েছে!!
××××××××××
এই বিষয়ে দুইটি পত্রিকার খবর নিচে প্রকাশ করা হল।
প্রথম খবরটি 'আওয়ার ইসলাম' ওয়েবসাইটের। সম্পূর্ণ খবর নিম্নরূপ:-
নতুন নোটে মসজিদ বাদ দিয়ে মন্দিরের ছবি, সমালোচনার ঝড়
নিউজ ডেস্ক, ২৯ মে, ২০২৫, ০৭:৩৫ বিকাল
অবশেষে গুঞ্জনই সঠিক হলো। বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে যে নতুন তিনটি নোট ছেড়েছে এর মধ্যে ২০ টাকার নোটে মন্দিরের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। সেখানে আগে মসজিদের ছবি ছিল। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে নানা মহলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের এই কাজ নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তোলেছেন।
বেশ কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু নতুন নোটের ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে। সেখানে ২০ টাকার নোটে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদের পরিবর্তে দিনাজপুরের কান্তজিউ মন্দিরের ছবি ব্যবহার হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। তবে মাঝখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র অনলাইনে ভেসে বেড়ানো নোটকে গুজব বলে দাবি করেন। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যে তিনটি নোটের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে রয়েছে ২০ টাকার নোট। আর গুঞ্জনই সত্যি হয়েছে সেখানে। মসজিদের ছবি বাদ দিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে মন্দিরের ছবি।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোটের নকশার ছবি প্রকাশ করে। এর মধ্যে বিতর্ক থাকার পরও ২০ টাকার নোটে কান্তজিউ মন্দির ও মহাস্থানগড়ের ছবি দিয়ে নোটের নকশা চূড়ান্ত করা হয়। তবে কোনো নোটে রাখা হয়নি শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে- বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য’ শীর্ষক ডিজাইনে তৈরি এই নতুন নোটগুলো ১ জুন থেকে বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
প্রকাশিত নকশায় দেখা যায়, নতুন ২০ টাকার নোটের এক পাশে স্থান পেয়েছে মধ্যযুগের স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন দিনাজপুরের কান্তজিউ মন্দির। অপরপাশে রয়েছে বাংলার আরেক ঐতিহাসিক স্থান মহাস্থানগড়ের ছবি। অবশ্য ২০ টাকার আগের নোটে ছিল বাগেরহাটের ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ সৌহার্দ্যপূর্ণ সহাবস্থান করে। এই দেশে সব ধর্মের মানুষেরই ঐতিহাসিক স্থাপনা ও ঐতিহ্য রয়েছে। তাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নিদর্শন স্বরূপ ২০ টাকার নোটে ঐতিহাসিক কান্তজিউ মন্দির স্থান পেয়েছে।
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যারা সমালোচনা করছেন তারা বলছেন, ২০ টাকার নোটে আগে যেখানে মসজিদের ছবি ছিল সেখানে তা বাদ দিয়ে মন্দিরের ছবি ব্যবহার করা আপত্তিজনক। নতুন কোনো নোটে মন্দিরের ছবি ব্যবহার করলে হয়ত কোনো আপত্তি থাকত না। কিন্তু সরকার মন্দিরকে কেন মসজিদের বিপরীতে দাঁড় করালো। এটাকে অনেকেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংসের উস্কানি হিসেবে দেখছেন।
এমএইচ/
সূত্র: ourislam24.com
----------
দ্বিতীয় খবরটি 'বিডিটাইপ' ওয়েবসাইটের। তারা লিখেছেন:-
নতুন ২০ টাকার নোটে কান্তজিউ মন্দির: ধর্মীয় সহিষ্ণুতা না সহিংসতার উসকানি?
by Bdtype.com ৫ জুন, ২০২৫
২০ টাকার নতুন নোটে মন্দিরের ছবি: ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বাজারে ছাড়া হয়েছে নতুন নকশার ২০ টাকার নোট, যেখানে ছাপা হয়েছে দিনাজপুরের কান্তজিউ (কান্তনগর) মন্দিরের ছবি। দেশের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের একাংশ এই নতুন নোটে ব্যবহৃত চিত্র নিয়ে তীব্র আপত্তি ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা মনে করছেন, এটি দেশের ধর্মীয় ভারসাম্য নষ্ট করার একটি সূক্ষ্ম চেষ্টা এবং ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক বার্তা বহন করে।
বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ—যেখানে প্রায় ৯৫ শতাংশ নাগরিক ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করেন। এমন প্রেক্ষাপটে জাতীয় মুদ্রার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকে একটি হিন্দু উপাসনালয়ের ছবি স্থান পাওয়াটা অনেকের কাছে ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি অবমাননার শামিল মনে হচ্ছে। এর আগে ২০ টাকার নোটে ছিল মুসলিম ঐতিহ্যের প্রতীক ষাট গম্বুজ মসজিদ, যা ছিল একটি ঐতিহাসিক ও ইউনেস্কো স্বীকৃত নিদর্শন। সেটি বাদ দিয়ে হঠাৎ মন্দিরের ছবি বসানো অনেকের মনে প্রশ্ন তুলেছে—সরকার কী উদ্দেশ্যে এমন কাজ করছে?
ধর্মীয় ভারসাম্য ও ঐতিহ্যের অবমূল্যায়ন?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের উচিত ছিল এমন কোনো নিরপেক্ষ ও ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহাসিক নিদর্শন বেছে নেওয়া যা কোনো ধর্মীয় বিতর্ক তৈরি করবে না। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন অনেক নিদর্শন রয়েছে—
- লালবাগ কেল্লা
- মহাস্থানগড়
- বঙ্গভবন
- মাইজদী কোর্ট ভবন
- সোনারগাঁওয়ের পানাম নগরী
- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও টাওয়ার
- কুদরত-ই-খুদা বিজ্ঞান ভবন
এইসব নিদর্শন দেশ, ঐতিহ্য এবং সাধারণ মানুষের আবেগের প্রতিনিধিত্ব করতে পারত, কোনো ধর্মীয় বিতর্ক ছাড়াই।
ভারতের ঘটনার দৃষ্টান্ত টেনে হুঁশিয়ারি
জনগণ উদ্বিগ্ন যে, ভারতের সাম্প্রতিক ঘটনা—যেখানে একটি ঐতিহাসিক মসজিদ (বাবরি মসজিদ) ভেঙে মন্দির গঠনের জেরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মীয় দাঙ্গা ও প্রাণহানি হয়েছে—তার পুনরাবৃত্তি যেন বাংলাদেশে না ঘটে।
সাধারণ মানুষের ভাষায়:
"যদি আমরা ভারতের মত মসজিদ ভাঙার দৃষ্টান্তে উদ্বিগ্ন হই, তবে আমাদের নিজেদের দেশের ভিতরে মসজিদের ছবি সরিয়ে মন্দির বসানোর ঘটনাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করতেই হবে।"
সরকারের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট বার্তা
বর্তমান সরকার বারবার গণতন্ত্র, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জনতার সেবার কথা বলে ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেশের নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে জনগণের ধর্মীয় আবেগ বা ঐতিহ্য রক্ষার কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। বরং, অনেকেই মনে করছেন,
"তারা দেশের চেয়ে নিজেদের পকেট গরম করতেই বেশি ব্যস্ত।"
সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই—এই দেশ জনগণের, সরকারকে ক্ষমতায় এনেছে জনগণ, এবং যদি জনগণের অনুভূতির মূল্য না দেওয়া হয়, তবে সেই একই জনগণই আবার সেই সরকারকে বিদায় জানাতেও দ্বিধা করবে না।
উপসংহার
সরকারের উচিত অবিলম্বে এই ইস্যুতে বিবৃতি দেওয়া এবং ভবিষ্যতে এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে জনগণের ধর্মীয় ও সামাজিক আবেগকে প্রাধান্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া। ২০ টাকার নোটের এই বিতর্ক আমাদের মনে করিয়ে দেয়,
"জাতীয় ঐক্য রক্ষা করতে হলে ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া জরুরি—তা সংখ্যাগরিষ্ঠের হোক বা সংখ্যালঘুর।"
সূত্র: bdtype.com
0 Comments