'SPS শাস্ত্র গবেষণা কমিটি' প্রকাশিত লিফলেট ''আমরা কেন সনাতন ধর্ম অনুসরণ করবো?'' - ডাউনলোড করুন পিডিএফ

 

'SPS শাস্ত্র গবেষণা কমিটি' প্রকাশিত লিফলেট ''আমরা কেন সনাতন ধর্ম অনুসরণ করবো?'' প্রচ্ছদ

SPS শাস্ত্র গবেষণা কমিটি সম্প্রতি একটি লিফলেট প্রকাশ করেছে। এতে 'আমরা কেন সনাতন ধর্ম অনুসরণ করবো?' এই প্রশ্নটির উত্তর বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত দিয়ে প্রামান্য করে উপস্থাপন করা হয়েছে। সনাতন ধর্মের প্রাচীনত্ব, সনাতন ধর্মে সার্বজনীন মানবিক দিক, সনাতন শাস্ত্র বৈজ্ঞানিক, সনাতন ধর্মে কর্মফলের সঠিক হিসেব ও ন্যায়বিচার ইত্যাদি বিষয় আলোচনা করা হয়। সহজ ভাষায় উপস্থাপিত আলোচনা অনেকের জন্য সহজ হবে। শেষে মন্তব্য হিসেবে বলা হয়


যারা ধর্মের মূল সত্য অনুধাবন করতে না পেরে লোভ ও ভয়ের বশবর্তী হয়ে বিভিন্ন মতবাদ বা বিশ্বাস (রিলিজিয়ন) দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং সবচেয়ে প্রাচীন, মানবিক, সর্বজনীন, বৈজ্ঞানিক ও ন্যায়ধর্ম সনাতনকে ত্যাগ করে তাদের প্রতি মহাভারতে একটি স্পষ্ট সতর্কতা রয়েছে, 

"ধর্ম এব হতো হন্তি, ধর্ম রক্ষতি রক্ষিত..."


অর্থাৎ যে ধর্মকে ত্যাগ করে ধর্মই তার বিনাশ করে এবং যে ধর্মকে ধারণ করে ধর্মই চিরকাল তাকে রক্ষা করে।


প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত লেখা পাঠকের পাঠের জন্য প্রকাশ করা হল।-


প্রশ্ন: আমরা কেন “সনাতন ধর্ম” অনুসরণ করবো?


উত্তর: এই প্রশ্নের উত্তর আমরা চারটি ধাপে দেওয়ার চেষ্টা করবো। প্রতিটি ধাপে আমরা ভিন্ন ভিন্ন বিষয় ব্যাখ্যা করে স্পষ্ট করার চেষ্টা করবো যে কেন আমাদের সনাতন ধর্মকেই অনুসরণ করতে হবে?


প্রথম ধাপ: সনাতন ধর্মের প্রাচীনত্ত্ব।


সত্য, ন্যায় ও সুন্দরকে ধারণ করাই 'ধর্ম'। ঋগ্বেদ সংহিতায় (১০/১২১/০৯) তাই বলা হয়েছে, “যে বা দিবং সত্যধর্মা...”। আমরা যেহেতু অনাদিকাল থেকেই এই সত্য, ন্যায় ও সুন্দরকে ধারণ করে আছি সেহেতু আমাদের ধর্মকে “সনাতন” বলা হয়। “সনাতন” অর্থ চিরন্তন যা ছিলো, আছে ও থাকবে। ঋগ্বেদ সংহিতায় (১০/৯০/১৬) স্পষ্ট বলা হয়েছে, “যজ্ঞেন যজ্ঞমযজন্ত দেবাঃ তানি ধর্মাণি প্রথমান্যাস ....” অর্থাৎ; দেবতারা যজ্ঞের দ্বারা যে মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠান সম্পাদন করলেন, তা থেকেই সর্বপ্রথম ধর্মের আবির্ভাব। সনাতন শব্দের অন্য একটি অর্থ শাশ্বত। অমরার্থ-চন্দ্রিকার ৪০তম শ্লোকে নিত্যের প্রতিশব্দ হিসেবে বলা হয়েছে, “শাশ্বতত্ত্ব ধ্রুবো নিত্য সদাতন সনাতনাঃ..” অর্থাৎ, নিত্যের নাম— শাশ্বত, ধ্রুব, নিত্য, সদাতন, সনাতন। গীতায় (১১/১৮) ঈশ্বরকেও “সনাতন” বলা হয়েছে, অর্থাৎ “শাশ্বতধর্মগোপ্তা সনাতনস্ত্বং পুরুষো..”। সেই সনাতন পুরুষ হতে উৎপন্ন ধর্মই অনাদিকাল থেকে সনাতন ধর্ম নামে পরিচিত। তাই মনুসংহিতায় (৪/১৩৮) আমাদের ধর্মকে সনাতন বলা হয়েছে, “এষ ধর্মঃ সনাতনঃ....”। মনুস্মৃতির ১/২৩ -এ আমরা দেখতে পাই বেদকেও সনাতন বলা হয়েছে। ”ত্রয়ং ব্রহ্ম সনাতন...” অর্থাৎ সনাতন ত্রয়ী (বেদ)। শাস্ত্র সিদ্ধান্ত এই যে; আমাদের ধর্ম, শাস্ত্র ও ঈশ্বর সকলই সনাতন ।


শুধু শাব্দিক অর্থই নয় বরং প্রাচীন প্রায় সব সভ্যতাতেই সনাতন সংস্কৃতির চিহ্ন পাওয়া যায় । ভারতীয় সংস্কৃতির বাইরেও মিশরীয় সভ্যতায়ও সনাতন সংস্কৃতির স্পষ্ট চিহ্ন পাওয়া যায়। মিশরীয় সভ্যতার সবচেয়ে শক্তিশালী রাজা ছিলেন Ramses-1, যিনি রামায়ণের রামের সাথে সম্পর্কিত। Ramses-1 এর স্ত্রীর নাম ছিলো সীত্রে যা রামায়ণের রামপত্নী সীতা/সীতে থেকে অনুপ্রানিত। Ramses-1 দশমাথাযুক্ত রাজা Lubaran কে বধ করেন যা রামায়ণের দশমাথাযুক্ত রাবণের সাথে সম্পর্কিত। এছাড়া গ্রীক ইতিহাসবিদ মেগাস্থিনেসের 'ইন্ডিকা' গ্রন্থ থেকে গ্রীক উপকথায় সরাসরি ভারতীয় দর্শনের প্রভাব পাওয়া যায়।


দ্বিতীয় ধাপ: সনাতন ধর্ম সর্বজনীন ও মানবিক।


স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, “ধর্ম এমন একটি ভাব- যা পশুকে মনুষ্যত্বে ও মানুষকে দেবত্বে উন্নীত করে।” অর্থাৎ ধর্ম কোনরকম বিভেদ না করেই সকল জীবের জাগতিক ও পারমার্থিক উন্নতির শিক্ষা দেয়। মনুসংহিতায় (৬/৯২) বলা হয়েছে; ধৃতি(ধৈর্য্য), ক্ষমা, দম, চুরি না করা, শুচিতা, ইন্দ্রিয়সংযম, শুদ্ধ বুদ্ধি, জ্ঞান, সত্য এবং ক্রোধহীনতা- এই দশটি লক্ষণের দ্বারা সনাতন ধর্মের স্বরূপ প্রকাশ পায়। অর্থাৎ, এই দশটি গুণ কারও মধ্যে থাকলে সে সনাতন ধর্মের ঈশ্বরে বিশ্বাস না করলেও সে ধার্মিক। ধর্মের বাণী ত এমনই হওয়া উচিত এবং ঈশ্বরের নির্দেশও এমনই হওয়া উচিত। এখানে কার কি বিশ্বাস সেটাকে গুরুত্ব না দিয়ে সনাতন ধর্মে স্পষ্টত জগতের কল্যাণই নিহিত আছে। বেদ, গীতা ও পুরাণাদি শাস্ত্রে তাই সকল জীবের প্রতিই সমদর্শী হতে বলা হয়েছে। আমাদের প্রার্থনা মন্ত্রগুলোতেও জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সকল মানব ও জীবপ্রজাতির জন্য প্রার্থনার বিধান দেওয়া হয়েছে, যেমন: “সর্বেষাম মঙ্গলম ভূয়াৎ” অর্থাৎ সকলের মঙ্গল হোক, “সর্ব ভবন্তু সুখিনো” অর্থাৎ সকলেই সুখী হোক।



======

কৌতুহলী পাঠক যেন মাত্র চার পৃষ্ঠার এই লিফলেটটি সহজে ডাউনলোড করতে পারেন, সেজন্য এখানে লিংক দেয়া হল। আপনারা ডাউনলোড করুন। মাত্র চার পৃষ্ঠার এই লিফলেটটি প্রিন্টারে প্রিন্ট করে নিয়ে ফটোস্ট্যাট মেশিনে ফটোকপি করে অনেকগুলো কপি তৈরি করুন। আপনার আশেপাশে সচেতন ও অচেতন তরুণ তরুণীদের মধ্যে লিফলেটটি বিলি করুন। হয়তো আপনার এই সামান্য উদ্যোগে কোন একজন বিভ্রান্ত তরুণ/তরুণী সচেতন হয়ে উঠবে।


ডাউনলোড পিডিএফ লিংক

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ