সাধারণত আমাদের যেসকল বোনেরা মুসলিম ভাইদের প্রেমে পড়ে, তারা সেই প্রেমিক পুরুষদের জিজ্ঞাসা করে, ‘‘তোমাদের ধর্মে তো ৪টি বিবাহ করার অনুমতি আছে, তুমিও কী ৪টি বিবাহ করবা?’’ উত্তরে মুসলিম ভাইয়েরা বলেন, ‘‘আমাদের ধর্মেও ১টি বিবাহ করার নির্দেশ করা হয়েছে, তবে যাদের ৪টি বউ লালন-পালনের ক্ষমতা আছে এবং প্রথম স্ত্রী অনুমতি দিলে তবেই ৪টি বিবাহ করতে পারে।’’
এই উত্তর শুনে হিন্দু মেয়েরা খুশিতে গদগদ হয়ে যায়। তাই আসলেই নির্দেশনাটা কেমন সেটি জানা প্রয়োজন।
কোরআন বলছে, ‘‘তোমরা বিয়ে করো নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে; দু’টি, তিনটি অথবা চারটি। আর যদি ভয় করো যে, তোমরা সমান আচরণ করতে পারবে না, তবে একটি।’’
- সূরা: আন-নিসা, আয়াত: ৩।
অর্থাৎ ইসলাম ধর্মানুসারে মুসলিম পুরুষদের দুজন, তিনজন বা চারজন নারী বিবাহ করাই মুখ্য। যদি কোনো মুসলিম পুরুষ ৪ জন স্ত্রীর প্রতি সমান ভালোবাসা, অর্থ বা আচরণ না দিতে পারে তাহলে সে ১জন নারী বিবাহ করবে। আর একাধিক বিবাহের ক্ষেত্রে প্রথম স্ত্রীর অনুমতির প্রয়োজন আছে কি না-এই বিষয়ে ইসলামিক স্কলারদের মত হলো, স্ত্রীর অনুমতির প্রয়োজন নাই। কেননা, কোরআন বলছে,
‘‘পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক।’’ [1]
‘‘নারীদের ওপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে।’’ [2]
আল্লাহ্ কর্তৃক প্রদত্ত পুরুষের এই শ্রেষ্ঠত্বের জন্য কোনো বিষয়ে নারীর অনুমতির প্রয়োজন নাই।
[1] সূরা: আন-নিসা, আয়াত: ৩৪
[2] সূরা: আল-বাকরা, আয়াত: ২২৮
পুরুষের থেকে নারীর বুদ্ধি কম হয়। সহীহ মুসলিম বলছে,
‘‘প্রশ্নকারিনী জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! জ্ঞান-বুদ্ধি ও দ্বীনে আমাদের কমতি কিসে? তিনি বললেন: তোমাদের জ্ঞান-বুদ্ধির ক্রটি হলো দু-জন স্ত্রীলোকের সাক্ষ্য একজন পুরুষের সাক্ষ্যের সমান; এটাই তোমাদের বুদ্ধির ক্রটির প্রমাণ।’’ (১৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)।
মুসলিম ভাইয়েরা সনাতনী নারীদের আরো একটি বিষয়ে প্রলুব্ধ করে যে, ইসলামে নারী ও পুরুষ সমান অধিকার রয়েছে। কিন্তু কোরআন বলছে,
‘‘একজন পুরুষের অংশ দুইজন নারীর অংশের সমান।’’
- সূরা: আন-নিসা, আয়াত: ১১।
এছাড়া ইসলাম ধর্মানুসারে কোনো বিষয়ে নারীর সাক্ষ্যদানও পুরুষের অর্ধেক। কোরআন বলছে,
‘‘পুরুষ লোকের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, যদি দু’জন পুরুষ না পাওয়া যায়, তাহলে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রী লোক।’’
-সূরা: আল-বাকরা, আয়াত: ২৮২
মুসলিম পুরুষ নারীকে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ব্যবহার করতে পারবে। কোরআন বলছে,
‘‘তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের শস্যক্ষেত্র। সুতরাং তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যে প্রকারে ইচ্ছে গমন করো।’’
-সূরা: আল-বাকরা, আয়াত: ২২৩
স্বামীর চাওয়া মাত্রই স্ত্রীকে সহবাসের জন্য প্রস্তুত হতে হবে, এমনকি যানবাহনের মধ্যে থাকা অবস্থাতেও। সুনানে ইবনে মাজাহ বলছে,
‘‘স্ত্রী শিবিকার মধ্যে থাকা অবস্থায় স্বামী তার সাথে জৈবিক চাহিদা পূরণ করতে চাইলে স্ত্রীর তা প্রত্যাখ্যান করা অনুচিত।’’ (২.১৮৫৩)।
সহীহ মুসলিম বলছে,
‘‘স্বামী যখন স্ত্রীকে বিছানায় আহবান করে এবং সে না আসায় তার স্বামী তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে রাত্রি যাপন করে, সেই স্ত্রীর প্রতি ফেরেশতাগণ ভোর হওয়া পর্যন্ত লা’নাত করতে থাকে।’’ (৩৪৩৩, হাদীস একাডেমি)।
বিবাহের পর তালাক/ডিভোর্স দেওয়ার ক্ষেত্রেও নারীর নিজের স্বামী কাছেই তালাকের অনুমতি নিতে হবে। নারী চাইলেই তালাক দিতে পারবে না। সহীহ হাদিস বলছে,
‘‘রাসূলুল্লাহ বলেছেন, যে নারী বিনা কারণে স্বামীর নিকট তালাক চায়, সে জান্নাতের গন্ধও পাবে না।’’
-আবূ দাঊদ: ২২২৬, তিরমিযী: ১১৮৭, ইবনু মাজাহ: ২৫০০, দারিমী: ১৩১৬ ইত্যাদি।
নারী গৃহে অবস্থান করবে, সকলের সামনে নিজেকে প্রদর্শন করবে না। কোরআন বলছে,
‘‘তোমরা নিজ গৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাক-জাহেলী যুগের মতো (অর্থাৎ ইসলাম-পূর্ব যুগের নারীদের মতো) সৌন্দর্য প্রদর্শন করো না।’’
- সূরা: আল-আহযাব, আয়াত: ৩৩
নারী কোনো জাতির নেতৃত্ব দিতে পারে না। সহীহ বুখারী বলছে,
‘‘সেই জাতি কখনই সফলতা প্রাপ্ত করবে না যারা তাদের শাসনভার কোনো নারীর হাতে অর্পণ করে।’’ (৬৬১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)।
© শাস্ত্রপৃষ্ঠা
0 মন্তব্যসমূহ