মূর্তি ভেঙে যে ধর্মের সৃষ্টি হয়েছিল ১৪০০ বছর পর তাদের মনে হতে শুরু করেছে মূর্তি ভেঙে ইসলাম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সৌদি আরবের প্রাচীন ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সারা পৃথিবীর ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল। ফলে ইসলামের ধর্মীয় সভ্যতা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। ইসলামের ধর্মীয় সভ্যতা পৃথিবীর অন্যকোনো ধর্মের সাথে মিলানো যায় না। হত্যা বিদ্বেষ জোর করে ধর্মান্তকরন মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে পৃথিবীতে কোন ধর্মের অস্তিত্ব টিকে থাকতে পারেনা। মূর্তি না ভেঙেও ইসলামের ঐতিহ্য বজায় রাখা সম্ভব ছিল। আমরা সৌদিবাসী হিসাবে আমাদের অতীতের সাথে গভীর ভাবে একাত্মা হতে চাই। আমরা মুসলমান হলাম কিনা তাতে কিছু যায় আসেনা এটি একটি আরবি ইতিহাস আমাদের অতীত আমাদের ভবিষ্যতের একটি অংশ।আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্য আছে তা আমরা হারাতে পারবনা। আমাদের ইতিহাস নিয়ে গর্ব করা উচিত। যারা আমাদের ঐতিহ্য নিয়ে ভয় পাচ্ছেন মূর্তি দেখে তার পূজা শুরু করে দেব ভাবছেন তাদের দিন শেষের পথে।
সৌদি আরবের একদল বুদ্ধিদীপ্ত মানুষ জাগরন আন্দোলনের মাধ্যমে সৌদি জনগনের স্মৃতি থেকে আরবের ইতিহাস ঐতিহ্য ও পরিচিতির ধারনাকে বদলে দিতে চান।
মুসলমান বিশ্বাস করে কোরান অপরিবর্তনীয় রূপালংকার বা প্রতীকী নয়। কিন্তু সেই বিশ্বাসে ঘুণ ধরেছে। অনেক মুসলমান এখন মনে করেন কোরানের যুগোপযোগী সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু ইসলাম প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যাবধি কোন মুসলিম পন্ডিত এই দু:সাহসিক কাজে এগিয়ে আসেননি। কিন্তু বর্তমান সৌদি বাদশার আমলে সৌদি আরবে যে নব জাগরনের সৃষ্টি হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। সৌদিতে এখন মিউজিক কনসার্ট হয় সিনেমা হল চালু হয়েছে মেয়েদের বোরকা বা হিজাব পরা বাধ্যতামূলক নয়। মেয়েরা এখন একাই বাইরে বেরুতে পারে মাঠে বসে খেলা দেখতে পারে গাড়ি চালাতে পারে এবং বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রেও কোন বিধিনিষেধ নেই। ইদানিং সংরক্ষিত এলাকায় মদের দোকান খোলার অনুমতিও দেয়া হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকে রামায়ণ মহাভারত যোগাসন ভারতীয় ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ে পড়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকেই সৌদি প্রিন্স এই জাগরনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সৌদির পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার তেল নির্ভরতা থেকে অর্থনীতিকে বহুমুখী করা এবং বিদেশি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা।
মক্কার কাবায় প্রতিষ্ঠিত দেবী মূর্তি সৌদি আরবের প্রাচীন ঐতিহ্যের অংশ ছিল।
উজ্জা-লাত ও মানাত এই তিন দেবীকে নারী ক্ষমতায়নের প্রতীক মনে করা হত। এক সময় সৌদিরা নারীকে পবিত্র এবং নারী শক্তিকে স্বর্গীয় হিসাবে উপাসনা করত। কয়েক বছর আগেও আরবের পুরাকীর্তি ও পুরনো ঐতিহ্য নিয়ে কথা বলাকে ঈশ্বরবাদ বা মূর্তিপূজা ফিরিয়ে আনার অপরাধে অভিযুক্ত করা হতো। সম্প্রতি সৌদি প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ সেদেশে মাটি খুড়ে ৮ হাজার বছরের পুরনো মন্দির আবিষ্কার করেছে। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দিন পাল্টেছে সৌদি আরব এখন সুদিনের আশায় চেয়ে আছে। সৌদি তার সম্পদ এবং অতি প্রাচীন সভ্যতা সম্পর্কে কথা বলতে শুরু করেছে।
জাতীয় ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে প্রাচীন আরবের দেব-দেবীদের পুনরায় আবার ফিরিয়ে আনার পক্ষে সোসাল মিডিয়ায় দাবি উঠতে শুরু করেছে। যারা এই ঐতিহ্য নিয়ে সোসাল মিডিয়ায় কাজ করছে তারা দেশের ধর্মীয় পরিচয়কে উহ্য রেখে জাতীয়তাবাদী চেতনায় সৌদি আরবকে তুলে ধরার জন্য এগিয়ে এসেছে। আজকে মূর্তি না ভেঙে ধর্মীয় ঐতিহ্য বজায় রেখে সৌদি আরবের ইতিহাসের রেনেসা নুতন ভাবে আবির্ভূত হওয়ার লক্ষন দেখা দিয়েছে।
রচনাসূত্র: ফেসবুক
0 মন্তব্যসমূহ