এই ছবিটি কোলকাতার। ঐ পাশে ঈদের নামাজ হচ্ছে আর এদিকে হিন্দুদের অক্ষয় তৃতীয়ার প্রার্থনা। পাশাপাশি দুই ধর্মের উপাসনার ছবি দেখিয়ে কিছু ‘প্রকৃত সেক্যুলার’ খুব বাহবা দিচ্ছে। কিন্তু এই ছবিটি আসলে অন্য একটি নির্মম সত্য বলছে।
এই সত্যটি হচ্ছে চিরকাল কেবল মন্দির, প্যাগোডা, গুরুদুয়ার, গির্জার সামনেই নামাজ পড়তে দেখলাম- কোনদিন মসজিদের পাশে আরতি হতে দেখলাম না! মসজিদের পাশে বড়দিনের অনুষ্ঠান হতে দেখলাম না। ঈদের নামাজ হোক আর জুম্মার নামাজ, মন্দিরের সামনের রাস্তায়, গুরুদুয়ারের সামনের রাস্তায় কাতার দিয়ে নামাজ পড়ার দৃশ্য খালি আমরা দেখতে পাই। বিপরীতে দুর্গা পুজার সময় শর্ত থাকে, আজানের সময় আরতি বন্ধ থাকবে, মসজিদের সামনে দিয়ে বাদ্য বাজিয়ে যাওয়া যাবে না, মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কিছু করা যাবে না। উপমহাদেশের যতগুলি মন্দির মসজিদ পাশাপাশি একই দেয়ালের এদিক ওদিক দেখতে পাওয়া যায় তার সবগুলিই কমন ইতিহাস হচ্ছে মসজিদটি পরে নির্মিত হয়েছে! অন্তত একটি ঘটনা দেখানো যায় না যেখানে মসজিদ হবার অনেক পরে তারই দেয়াল ঘেঁষে একটি মন্দির তৈরি হয়েছে!
সেক্যুলারিজমের প্রতীক কি শুধুই একতরফা এই দৃশ্যগুলিতেই প্রকাশিত হয়? ভারতের একটি হিন্দু প্রার্থনালয়ের সামনের রাস্তা আটকে ঈদের নামাজ পড়তে পারছে এটি দুটি ধর্মের সৌহার্দ্য কিনা জানি না। তবে এটি শুধু ভারত বলেই সম্ভব। আসলে এটি সম্ভব যে কোন অমুসলিম দেশেই। আপনি মসজিদের সামনে দিবেন 'অষ্টপ্রহর হরিনাম সংকীর্তন' করতে? এমনকি এটা ভারতেরই কেউ কল্পনা করতে পারে? বাংলাদেশের হাইকোর্টের সামনে ভাস্কর্যটিকে উঠে যেতে হয়েছে এই যুক্তিতে যে জাতীয় ঈদগাতে নামাজ পড়তে যাবার সময় নারী ভাস্কর্যটি দেখে মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত লাগবে! বিমানবন্দরের সামনের লালন ভাস্কর্য করা যায়নি এই যুক্তিতে যে এটি দেখে হজযাত্রীদের অনুভূতিতে আঘাত লাগবে! সেই তারা কি করে ছবির এই ‘প্রকৃত সেক্যুলারিজম’-কে হজম করতে পারবে? দুই বাংলার যত উদার মুসলমান ও বামপন্থী হিন্দু আছেন আমাকে বিজেপির আইটিসেলের এজেন্ট বলার আগে একটু খন্ডন করে আমার কথাগুলির ভুল ধরিয়ে দিবেন? সহিষ্ণুতা সৌহার্দ্য কি কেবল একহাতের তালি?
এই সত্যগুলো বলতে গেলে আমি হয়ে যাই ভারতের দালাল আর মুসলিম বিদ্বেষী! এতে আমার কিছু যায় আসে না। সত্য বলতে গেলে একপক্ষ অখুশী হবেই।
Photo: facebook থেকে সংগৃহীত
লেখা Susupto Pathok
0 মন্তব্যসমূহ