এক বিদেশী মুসলিম/ ইসলাম প্রচারকের সাথে কথোপকথন

নমস্কার,

আজকের একটা ঘটনা বলি যেটি আপনাদের অভিজ্ঞতা নিতে কাজে লাগবে।


আজ আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মন্দির স্থাপনের অধিকার আদায়ের জন্য যাচ্ছিলাম। যাওয়ার পথে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে দিয়ে যাচ্ছি তখনই সেই মসজিদের ইমাম এবং একজন ব্যক্তি সালাম দিলেন।


স্বভাবতই তাদের সালামের উত্তর দেওয়া উচিত নয় বলে আমি সেটা এভোয়েড করে নমস্কার দিলাম। নমস্কার দিলাম এই জন্য যাতে তারা তাদের সনাতনীদের সালাম দেওয়ার পর কেমন অনুভূতি হয় আমাদের সেটা বোঝে। আর ওদের সালামের উত্তর আমাদের দেওয়া উচিত নয় কারণ তার অর্থ দাঁড়ায় 'আল্লাহ আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত করুক'। তো যেহেতু আল্লাহ আমরা মানি না, তাই এটা আমাদের করা অনুচিত।


এবার ইমাম বললো ঐ লোকটা মরক্কো থেকে আসছেন। আমি অতিথিপরায়ন আচরণে বললাম 'Welcome to Bangladesh '। ইমাম বললেন উনি বাংলা, ইংরেজি কিছুই বোঝেন না। ইমাম জিজ্ঞেস করলেন আমি কোথায় যাচ্ছেন। আমি বললাম মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য যাচ্ছি। তখন ইমাম ঐ ব্যক্তিকে আরবিতে বলছিলেন আমি হিন্দু, নন-মুসলিম, কাফের। শব্দ ৩ টি বুঝে আমিও বললাম হ্যাঁ যেমনটা আপনারা নাস্তিক(Atheist)।😁


ইমামের মুখ দেখে বুঝলাম তিনি বুঝে গেছে তাদের পরিকল্পনা খাটবে না আমার উপর। তিনি বিদেশীকে বললেন আমার সাথে কথা বলে লাভ নেই। কিন্তু বিদেশী ত আরো চেষ্টায় তৎপর, কারণ তার এদেশে আসার উদ্দেশ্য ত সফল করতে হবে, সাথে জান্নাতের হূরের লোভ ত আছেই।😁


তখন তিনি আরবিতে কিছু বললেন তারপর ইমাম সেটা আমাকে বাংলায় বললেন...আল্লাহ, ভগবান ত একজনই, তিনি আমাদের সুস্থ রাখেন, আমাদের জ্ঞান প্রদান করেন। আমি উত্তরে বললাম হ্যাঁ ঈশ্বর ত অবশ্যই একজন এবং আমি তাকেই মান্য করি এবং ঈশ্বর ব্যতীত কোন আল্লাহ বা অন্য ভগবানের অস্তিত্ব নেই সেটিও জানি। ইমামের মুখ থেকে শব্দ বের হলো 'নাউজ...ল্লাহ'।😁


এরপর বিদেশী আমাকে কলমা পড়ার দাওয়াত দিলেন 😆। আমি ২ টি বিষয় বললাম... 


  • ১। ঠিক আছে, তবে আপনাদের আগে একটু ঈশ্বর স্তুতি মন্ত্র আমার সাথে পাঠ করতে হবে। 
  • ২। আপনাদের কলমার অর্থেই ত ঝামেলা আছে। আপনারা একবার বলছেন আল্লাহ ছাড়া কেউ উপাস্য নয়, আবার বলছেন রাসুল তার দূত বলে মানতে হবে!! তাহলে মূলত কে উপাস্য হলো?! আর আপনাদের আল্লাহ যদি এতই শক্তিমান হয় তবে তার বার্তাবাহক হিসেবে রাসুল পাঠাতে হচ্ছে কেনো? আবার শুধু আল্লাহর আদেশই শেষ না মেনে রাসুলের আদেশকে সুন্নত হিসেবে মানছেন কেনো? তারমানে ত আল্লাহর সাথে রাসুলকে উপাসনা করে ফেলছেন যা আপনাদের ভাষায় শীরক।


তাদের ভাবার সময় দিলাম, তারা দুজনে কথা বলেও উত্তর আনতে পারলো না।


তারপর আমি বললাম বরং আমাদের পবিত্র বেদে কী বলা হচ্ছে শুনুন...

একমাত্র ঈশ্বর মহান এবং তিনিই উপাসনার যোগ্য। তিনিই সকল জ্ঞান ও কর্মের উৎস। [অথর্ববেদ ১০|৭|৩৮] 


তারপর ইমাম তাকে বুঝিয়ে বলে যত দ্রুত সম্ভব আমাকে বিদায় দিলেন। আমি বললাম আরো কিছু জানার থাকলে বলবেন। আর হ্যাঁ সনাতনের পথে ফিরে আসুন। ঈশ্বর আপনারদের মধ্যে শুভ বুদ্ধির উদয় করুন। 


বি.দ্রঃ- 

  • ১। এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে নিজেকে প্রস্তুত করুন এবং ঠান্ডা মাথায় খন্ডন করুন। 
  • ২। মাথা গরম করা যাবে না, আর অবশ্যই পরিস্থিতি বুঝে কথা বলা শুরু করবেন। যদি পরিস্থিতি বেগতি হয় তবে সেই সময়ের জন্য এভোয়েড করুন।
  • ৩। নিজেকে সত্য সনাতন বৈদিক ধর্মের আলোকে গড়ে তুলুন, কিছু নির্বাচিত মন্ত্র রেফারেন্স হিসেবে মনে রাখুন। পৌরাণিকতার সাথে খন্ডন করতে গেলে ওদের আক্রমণ করতে পারবেন হয়তো তবে নিজেকে প্রতিহত করতে পারবেন না। 
  • ৪। এভাবে তাদের প্রতিহত করলে তারা বুঝতে পারবে তাদের বদ উদ্দেশ্য আর বেশিদিন ধরে রাখা সম্ভব হবে না। কারণ সনাতনীরা জেগেছে। 


সবাইকে আবারো নমস্কার

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ