প্রেমের ফাঁদে প্রাণ দিতে হল হিন্দু তরুণীর

প্রেমের ফাঁদে প্রাণ দিতে হল হিন্দু তরুণীর
পুষ্পমালা দাস

সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার ইসলামকাটি গ্রামের দিন মজুর সুকলাল দাস ও কণিকা দাসের কন্যা পুষ্পমালা দাস। দিন মজুর পিতা-মাতা অনেক কষ্টে তাকে লেখাপড়া করায়। তার কলেজ শিক্ষক মামাও তাকে সাধ্যানুযায়ী প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করে। সে স্কুল-কলেজ পেরিয়ে ২০১৬ সালে ভর্তি হয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে। বাবার সহযোগিতার পাশাপাশি নিজে টিউশনি করে অনার্স পাশ করে মাষ্টার্স পড়তে থাকে। এমন সময় পরিচয় হয় একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের মুসলিম শিক্ষার্থী জিয়াউর রহমান (জিয়া)-এর সাথে। জিয়া তাকে প্রতিনিয়ত প্রেমের প্রস্তাব দিত কিন্তু সে প্রত্যাখ্যান করত, এভাবে প্রতিনিয়ত তাকে বিরক্তি করতো। 


এভাবে বেশ কিছুদিন চলার পর সে প্রেমের কাছে হার মেনে যায় এবং তাদের মেলামেশায় আস্তে আস্তে তার কাছে জিয়া খুব বিশ্বস্ত ও প্রিয় ভাজন হয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে জিয়া পুষ্প'র সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে । বিষয়টি পুষ্প-এর বাবা-মা জানতে পারে এবং তাকে এ ধরণের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে বলে। প্রথমে সে কোন ভাবেই বুঝতে চায় না। কিছুদিন পুষ্পকে গ্রামের বাড়ীতে রাখা হয় এবং এ ধরণের সম্পর্কের খরাপ পরিণতি সম্পর্কে বোঝানো হয়। পুষ্প তখন জিয়ার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় এবং এ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দেয়। পুষ্প বিয়ে করার জন্য অন্য ছেলে দেখতে বলে। পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলে দেখা চলতে থাকে। ইতোমধ্যে দলিত সংস্থা, খুলনায় ৪০০০০-৪৫০০০/- টাকা মাসিক বেতনে চাকুরির সুযোগ আসে। চাকুরির কারণে এবং উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে আবার খুলনায় চলে আসে। সে উক্ত সংস্থায় ৭/৮ মাস চাকুরি করে। তারপর চাকুরি ছেড়ে দিয়ে তার উপার্জিত টাকা পয়সা নিয়ে ঢাকায় চলে যায়। জিয়া তার সাথে আবার যোগাযোগ করে বিগত ৩ মাস পূর্বে বিয়ে করে। বিয়ের সময় ধর্ম পরিবর্তনের কথা বলে। তার অনেক মুসলিম বান্ধবীরাও তাকে ধর্ম পরিবর্তন করতে বলে। কিন্তু সে ধর্ম পরিবর্তন করতে চায় না।

 

আত্মহত্যা করার আগে লেখা চিঠি
আত্মহত্যা করার আগে লেখা চিঠি


 তাই নোটারী পাবলিক এর মাধ্যমে বিবাহ করে দুই জন এক সাথে ঘর সংসার করতে থাকে । পুষ্প তার ভাই বোন এবং মায়ের সাথে প্রায়ই কথা বলতো এবং তাদের খোঁজ খবর নিতো । গত ১৩ ই জুন ২০২৫ তারিখে তার মায়ের সাথে শেষ কথা হয় । তারপর ১৪ ই  জুন দিবাগত রাত আনুমানিক ১.৩০ মিনিটে ঢাকার ভাটারা থানা থেকে মোবাইল ফোনে তার বাবাকে জানায় পুষ্প আত্মহত্যা করেছে । জানা গেছে যে, গলায় শাড়ি পেচিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে ফাঁসি দিয়েছে । ঘটনার রাতে জিয়া ও পুষ্প পাশাপাশি দুই কক্ষে ছিলো এবং দরজা খোলা ছিলো। তার মৃত্যু দেহ ঝুলন্ত অবস্থা থেকে জিয়া শাড়ি কেটে খাটের উপর রেখে বিষয়টি রাড়ির  মালিক এবং থানায় জানায় তার ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায় । কিন্তু তার ব্যবহৃত মোবাইলটি পাওয়া যায়নি । জিয়াকে থানায় পিতা মোবাইল হাতে স্বাভাবিক অবস্থায় দেখতে পারে । তার বাবা পুষ্পমালা আত্মহত্যা করেছে এটা বিশ্বাস করতে পারে না । তার বাবা সুকলাল দাস মনে করেন যে, জিয়া তাকে ঠান্ডা মাথায় খুন করছে । অত্র ঘটনার মামলা হয়েছে ঢাকার ভাটারা থানায়, যার নং-১১, তারিখ- ১৫/০৬/২৫ ইং ।


১৯/০৬/২০২৫ ইং


সূত্র: ফেসবুক


আরও পড়ুন

Post a Comment

0 Comments