১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের নেপথ্যে ইসলামিক জিহাদ? - সুষুপ্ত পাঠক

১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের নেপথ্যে ইসলামিক জিহাদ? - সুষুপ্ত পাঠক

আমি যদি বলি ১৮৫৭ সালে ইংরেজদের বিরুদ্ধে ‘সিপাহী বিদ্রোহ’ ছিলো সেকালের জিহাদীদের একটি গোপন চক্রান্ত তাহলে অনেকেরই সেটি বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে। কেননা আমাদের পড়ানো ইতিহাস বলে এই বিদ্রোহ বন্দুকের কার্তুজে শূকরের চর্বি মেশানোর প্রতিবাদে হিন্দু মুসলমান মিলিতভাবে শুরু হলে সেটি ইংরেজ পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। কিন্তু এটি কেবলমাত্র শূকরের চর্বিমাখা কার্তুজের তথ্যগত সত্যটি ছাড়া মূল কোন সত্য নয়। আমরা দেখবো কী ভয়ংকর একটি জিহাদী নেটওয়ার্ক এখানে কাজ করেছিলো যা আমাদের দৃষ্টি থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। যে কারণে যে কোন মডারেট কিংবা কমিউনিস্ট ব্যক্তি মাত্রই তুরুপের তাশের মত এটা বলেন যে, আমেরিকা মধ্যপাচ্যে আক্রমন করার আগে কেন জঙ্গিবাদ দেখা যায়নি? এটা যদি ইসলামের অংশ হত তাহলে কেন ৯০ দশকে উপসাগরীয় যুদ্ধের আগে কোথাও জঙ্গিবাদ দেখা যায়নি। আজ এই যুক্তি খন্ডন ও আড়াল করা সত্য অনুসন্ধানে আপনাদের স্বাগত...।


সিপাহী বিদ্রোহ যখন সংগঠিত হয় তখন স্যার সৈয়দ আহমদের বয়স ৪০ এবং তিনি এই বিদ্রোহকে ‘জ্ঞানের বিরুদ্ধে অজ্ঞতার যুদ্ধ’ বলে অভিহত করেছিলেন। কেএ নিজামী লিখিত ‘সৈয়দ আহমদ খাঁ’ বইতে লিখেছেন সৈয়দ সাহেব নবাবী আমলকে অজ্ঞতা ও ইংরেজ আমলকে জ্ঞানের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তার পিতা মুঘল দরবারে চাকরি করতেন এবং সৈয়দ সাহেব নিজে ইংরেজি শিখেননি যে তাকে ইংরেজদের দালাল বলবেন। আলীগড় প্রতিষ্ঠানকে অন্তত কোন কমিউনিস্ট কোনদিন সাম্রাজ্যবাদী বলেছে বলে শুনিনি। কিন্তু বঙ্কিমচন্দ্র, বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথকে সেটা বলতে এরা দ্বিধা করেননি। রাজা রামমোহন রায়ও মনে করতেন ইংরেজ শাসন অন্তত আরো একশো বছর দীর্ঘতা লাভ করলে এদেশে শৃঙ্খলার মধ্যে আসবে তখন ভারতীয়রা আধুনিক শিক্ষা লাভ করেই স্বদেশের পরাধীনতাকে অনুভব করবে। বঙ্কিমচন্দ্র সিপাহী বিদ্রোহের সেই উত্তেজনাময় সময়কালে সরকারী চাকরির জন্য ইংরেজদের কাছে গেলে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো তিনি এই যুদ্ধে কোন পক্ষ জিতবে বলে মনে করেন। বঙ্কিম সরাসরি উত্তর দেন, ইংরেজ পরাজিত হবে জানলে ইন্টারভিউ দিতে ইংরেজদের কাছে আসতাম না। বিদ্যাসাগরদের মত মানুষরা বুঝেছিলেন আপাতত ইংরেজ শাসন ভারতবর্ষের ললাট লিখনের বিকল্প নেই। নবাবী আমলের চেয়ে এটি যে শ্রেয়তর সেটি সমসাময়িক সকলেই অনুধাবন করেছিলেন। সিপাহদের ভারতে মুসলিম শাসনকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টাকে ভারতের প্রথম স্বা্ধীনতা যুদ্ধ বলে দাবীটি কার্ল মার্কস করেছিলেন। ভারতীয় উপমহাদেশে ইংরেজি শিক্ষার ফলে কোলকাতা কেন্দ্রিক যে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উদ্ভব ঘটে তাতে শিক্ষিত হিন্দুদের মধ্যে ইন্টেলেকচুয়ালদের একটি বড় অংশ মার্কসবাদে দিক্ষিত হয়। ফলে তারা ভারতের সমস্ত কিছুই মার্কসবাদী চশমায় দেখতে শেখে।


ভারতে দ্বিতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন বলে ওহাবী আন্দোলনকে কেউ কেউ দাবী করেন এবং কমিউনিস্টদের লেখায় ওহাবী আন্দোলনকে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন বলে স্বীকৃতি দেন। উনিশশতকের তিরিশের দশকে ভারতবর্ষে ওহাবী আন্দোলন শুরু হলে এতে উত্সাহিত হয়ে হাজি শরীয়তুল্লাহ ইংরেজ শাসিত ভারতবর্ষকে ‘দারুল হার্ব’ (কাফের শাসিত দেশ) ঘোষণা করেন এবং ইংরেজ তাড়িয়ে ভারতকে ‘দারুল ইসলাম’ (ইসলামের দেশ) করার বাসনা ঘোষণা করেন। ইসলামী শাস্ত্রমতে দারুল হার্বে মুসলমানদের জন্য জুম্মার নামাজ ও ঈদের নামাজ জায়েজ নেই। তাই শরীতুল্লাহ ভারতের মুসলমানদের জুম্মা ও ঈদের নামাজ পড়তে নিষেধ করে দেন। আপনাদের স্মরণ থাকতে পারে শোলাকিয়া ঈদের নামাজে বোমা মেরেছিলো জেএমবি। কারণ জেএমবিসহ অন্যান্য জঙ্গি দলগুলি বাংলাদেশকে বর্তমানে দারুল হার্ব মনে করে যেখানে ঈদের নামাজ ও জুম্মা পড়া হারাম। এরকম কাজ থেকে যদি মুসলমানরা বিরত না থাকে বা দারুল হার্ব সম্পর্কে সচেতন না হয় তাহলে তাদের ভয় দেখিয়ে সে বিষেয়ে সচেতন করা জায়েজ আছে। দুর্ভাগ্যজনক হলো কমিউনিস্ট লেখকরা এই শরীয়তুল্লাহ সম্পর্কে লিখেন, তিনি দরিদ্র মুসলমান কৃষকদের ধর্মীয় কুসংস্কার মুক্ত করে তাদের মনে জাতীয় চেতনা আনতে সহায়তা করেন...(দ্রষ্টব্য: ওহাবী থেকে খিলাফত, শ্যামাপ্রসাদ বসু, পৃষ্ঠা-৪০)।


ভারতকে ইংরেজ মুক্ত করে ইসলামিক ভারত বানানোর নাম জাতীয় চেতনা? দারুল হার্বকে বিশ্বাস করার নাম ধর্মীয় কুসংস্কার ত্যাগ? গান বাজনা হারাম, হিন্দুদের উত্সবে যাওয়া দেয়া হারাম, বাংলা নামের বদলে আরবীতে নাম রখতে হবে- এরকম শত শত গোঁড়ামী প্রচারের ওহাবী আন্দোলনকে কি করে কমিউনিস্টরা কুসংস্কার মুক্তির আন্দোলন বলে? ওহাবী আন্দোলন যদি নিছকই ইংরেজ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন হবে তাহলে কি করে ওহাবীরা শিখদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছিলো? শিখদের হাতে ওহাবীদের জিহাদ পরস্তা হয়েছিলো ১৮৩১ সালে বালাকোট নামক স্থানে। এই একই ওহাবী মতাদর্শের তিতুমীরকে স্বাধীনতা সংগ্রামী মহান বিপ্লবী দেখিয়ে কেমন করে মার্কসবাদী লেখক মহেশ্বতা দেবী উপন্যাস লিখেন?


এবার আসি সিপাহী আন্দোলনের পেছনে আসলে কারা কাজ করেছে। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার তার ‘ব্রিটিশ প্যারামাউন্টিসি এন্ড ইন্ডিয়ান রেনেশাস’ বইতে এমন কিছু তথ্য যুক্ত করেছেন যা ভারতে আগে অজ্ঞাত ছিলো। তিনি দেখিয়েছিলেন সিপাহীরা ওহাবীদের দ্বারা মারাত্মক প্রভাবিত ছিলেন। উপরে ওহাবীরা কি রকম উগ্র ইসলাম বিশ্বাসী তার কিছু ধারণা দিয়েছি। কাজেই ওহাবীদের দ্বারা হিন্দু সৈনিকদের প্রভাবিত হওয়ার সুযোগ নেই। সিপাহী মুসলিমদেরই মূলত গোপন এজেন্ডা এটি। কারণ সরকারের কাছে জেলা পুলিশ শাসক রেলি যে রিপোর্ট পাঠান তাতে তিনি জানান, ওহাবীরা বাদশা বাহাদুর শাহর সঙ্গে যোগাযোগ করে ওহাবী আন্দোলন সম্পর্কে জানান এবং তারাই শুকরের চর্বি মাখা কার্তুজের গুজব ছড়ায়। এই গুজব ছড়ানোর কাজে কোলকাতার মিশ্রিগঞ্জ মসজিদের খুতবায় জ্বালাময়ী বক্তব্য রাখা হয়। সঙ্গে ‘হিন্দু ভাইদের’ টেনে এনে তাদেরও ধর্ম নষ্ট করার জন্য ইংরেজদের দায়ী করে একটি অভিন্ন ধর্মীয় সংহতি আদায় করার আয়োজন ঘটে এবং সফল হয়। ঐতিহাশিক কেএম আশরাফও সিপাহী বিদ্রোহের পেছনে ওহাবীদের নেপথ্য ভূমিকাকে বড় হিসেবে দেখান। আগ্রা দুর্গ অবরোধকারীদের প্রধান আলাউদ্দিন ছিলেন ওহাবী। সিপাহী বিদ্রোহের বিচারের সময় তদন্তে দেখা যায় অপরাধীদের বহুলাংশে ওহাবী মতবাদী! কী আশ্চর্য এরকম ইতিহাসকে গোপন করে সিপাহী আন্দোলনকে ‘ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম’ নাম দেয়া হয়েছে! এদেশে কমিউনিস্টরা সত্যকে গোপন করেছেন বলব না, বলব মার্কসবাদের চশমায় তারা ভূত দেখেছেন! কিন্তু তারা এদেশের অনেক ক্ষতি করে গেছেন। এদেশের ইতিহাস গবেষণা গ্রন্থের মায় বুদ্ধিজীবীদের নেতৃত্ব তাদের হাতেই ছিলো। শিক্ষিত হিন্দু প্রগতিশীল হিন্দু মানেই রাজনৈতিক বিশ্বাসে কমিউনিস্ট। ইসলামী জঙ্গিবাদের জন্য তাদেরই তত্ত্ব বাজারে বেরিয়েছে নির্যাতন বৈষম্য থেকেই জঙ্গিবাদের সৃষ্টি, এর পেছনে ধর্মের হাত নেই। অর্থাত ইসলামের কোন হাত নেই! তাহলে মুসলিম লীগের হাতে রেপ হয়ে, তরোয়ালের কোপে কল্লা উড়ে যাবার পরও, দেশ থেকে বিড়াড়িত হওয়ার পরও হিন্দুরা জঙ্গি হলো না কেন? এককোটি হিন্দু পূর্ববঙ্গ থেকে পশ্চিমবঙ্গে যোগদান করে তাদের ভোটে তিরিশ বছর কমিউনিস্টরা পশ্চিমবঙ্গ শাসন করেছে। তাদের তো জঙ্গি না হোক, এট লিস্ট হিন্দু মহাসভা বা এই জাতীয় কিছুর সমর্থক হওয়ার কথা ছিলো কমিউনিস্ট তত্ত্ব অনুসারে?


তবে ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজমুদার ও প্রফেসার হান্টার ওহাবী আন্দোনকে নিছক মুসলিমদের আন্দোলন বলেছেন এবং এটি মুসলিম আধিপত্য প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ছিলো একইসঙ্গে হিন্দু বিরোধী আন্দোলনও ছিলো। শুধু তাই না তিতুমীর ও শরীতুল্লার ওহাবী আন্দোলন ছিলো মুসলমান কৃষকদের নিয়ে আন্দোলন। পাঞ্জাবের পাঞ্জাবী কৃষক ও বাংলার হিন্দু বাঙালি কৃষকদের মধ্যে ছিলো এই আন্দোলন নিয়ে সম্প্রদায়গত বাঁধা কারণ ওহাবীদের কট্টর ধর্মীয় অবস্থান। পরবর্তীকালে ওহাবীদের হাতে পাঞ্জাবী কৃষক ও হিন্দু কৃষকদের নাজেহাল নিপীড়নের ঘটনা সে দুর্বত্ব বাড়িয়ে তুলে। যদিও প্রচলিত ইতিহাসে তিতুমীরের দলে হিন্দু মুসলমান কৃষকদের মিলিত অসাম্প্রদায়িক আন্দোলন দেখাতে কমিউনিস্টরা সোচ্চার ছিলেন। শ্যামাপ্রসাদ বসুর মত কমিউনিস্ট লেখকও ওহাবীদের পক্ষে বই লিখেও এক জায়গায় লিখতে বাধ্য হন ওহাবীদের হাতে হিন্দু ও পাঞ্জাবী কৃষক বাড়াবাড়ির শিকার হয়েছিলো (ওহাবী থেকে খিলাফত, শ্যামাপ্রসাদ বসু, পৃষ্ঠা-৫৮)। তাহলে প্রশ্ন হলো এই আন্দোলনের অন্যতম দুই চরিত্র শরীতুল্লাহ ও তিতুমীরকে কেন স্বাধীনতা আন্দোলনকারী হিসেবে আমাদের পড়ানো হলো? তিতুমীরের নামে বাংলাদেশে কলেজ, কোলকাতায় উপন্যাস লেখা হলো? শরীয়তুল্লার নামে কেন বাংলাদেশে একটি জেলা (শরীয়তপুর) রাখা হলো?


ওহাবী আন্দোলন হচ্ছে ১৪০০ বছর আগে আরব দেশে ইসলাম যে জিহাদের মাধ্যমে ইসলামী সাম্রাজ্য স্থাপনের লক্ষ্যে মুসলমানদের আদৃষ্ট করেছিলো তারই ধারাবাহিকতা। কিন্তু সুদীর্ঘকালব্যাপী ইসলামী সাম্রাজ্যবাদ পৃথিবীব্যাপী বিস্তার লাভ করার ফলে তখন ইসলামী রাজ্যগুলির সৈন্যদের উপর জিহাদের দায়িত্ব থাকায় সাধারণ মুসলমানরা রাষ্ট্রকে কর দিয়ে বসবাস করতে করতে জিহাদের শাস্ত্রীয় বাধ্যবাধকতা ভুলে ছিলো। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু থেকে ইসলামী সাম্রাজ্য তথা খিলাফতের পতন শুরু হলে সৌদি আরবের আবদুল ওহাব ‘ওহাবী আন্দোলন’ শুরু করেন যার প্রধান কথাই ছিলো মুসলমানরা জিহাদ থেকে দূরে সরে যাওয়ার ফলেই তাদের পতন হয়েছে অতএব তাদের আবার নবী মুহাম্মদের ইসলামে ফিরতে হবে। খিলাফতে অমুসলিমদের অন্তর্ভূক্তি, নানা রকম দুনিয়াবী আইন করে খলিফারা মুসলমানদের ক্ষমতা হাতছাড়া করেছে এটাই ছিলো আবদুল ওহাবের বক্তব্য। তাই বলা চলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরও পুরোদমে জিহাদের বাজনা বেজে উঠে। সৌদি থেকে ওহাবী আন্দোলন চলে আসে ভারতবর্ষে। এই ওহাবীদের বিস্তার সমগ্র ভারতবর্ষে কেমন করে জাল বিছিয়েছিলো সে সম্পর্কে অমৃতবাজার পত্রিকা ২৫ এপ্রিল ১৮৭২ সংখ্যায় ডাক্তার হান্টারকে উদ্বৃতি করে লিখে, ওহাবীরা সমগ্র ভারতবর্ষের প্রতিটি লোমকূপে প্রবেশ করেছে। তার মানে মুসলমান সম্প্রদায় কতখানি ওহাবী কট্টর ধার্মিকতাকে গ্রহণ করেছিলো বুঝা যায়। তাই খুব সহজে বলা যায় দেশভাগের জন্য পূর্ববঙ্গের মুসলমানদের মুসলিম লীগ হওয়ার পেছনে ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য গণভোটে তাদের সমর্থন ছিলো ইসলামিক বাংলা হওয়ার উদ্দেশ্য থেকে। কেননা আমরা দেখি ওহাবী আন্দোলন পরবর্তী খিলাফত আন্দোলন শুরু হয় ইসলামী খিলাফত রক্ষার্থে। ভারতবর্ষের পরাধীনতা নিয়ে মুসলমানদের মাথাব্যথা নেই কিন্তু তাদের সমস্ত মাথাব্যথা তুরস্কের খিলাফত নিয়ে! আবুল মনসুর আহমদ লিখেছিলেন, মুসলমানরা যখন দেখলো তুরস্কের খিলাফত রক্ষা করা আর সম্ভব নয় তখন তাদের খিলাফত আন্দোলনও শেষ হয়ে গেলো। গান্ধির অসহযোগ আন্দোলনেও তাদের উত্সাহ থাকল না। পরাধীন ভারতবর্ষ নিয়ে প্রকৃতপক্ষে মুসলমানদের কোন আগ্রেই ছিলো না (আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর, আবুল মনসুর আহমদ)। কিন্তু আমাদের ইতিহাসে এসবের তার স্বীকৃতি নেই!


ওহাবীরা পরবর্তীকালে নানা কারণে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে গেলেও যে আইডলজি তারা প্রচার করে গেছে তার ফলে মুসলমানরা ভারতবর্ষে একটি ‘দারুল ইসলাম’ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম লালন করে চলেছে। সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে ওহাবীরা নিজেদের মধ্যে বিভক্ত হয়ে তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে যায়। এক. তাঐউনি (অভিন্নপথ), দুই. পাটনা স্কুল, তিন. আহলে হাদিস (পয়গম্বরের ট্রেডিশন)। বর্তমানে আমরা এই ‘আহলে হাদিসে’র তত্পরতা অনেক বেশি দেখতে পাচ্ছি। 


লিংক

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ