মন্দির কেন মসজিদ হল সে ইতিহাস এখন আর কেউ মনে করে না
✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️
মন্দির ধ্বংস করা বা বিগ্রহ ভাঙা ইসলামী সংস্কৃতির একটি বৈশিষ্ট্য। মন্দির ধ্বংস শুধু যে বিদেশি সুলতান মাহমুদ ও তৈমুর লঙরা করেছে এমন নয় এদেশীয় শিরোজ শাহ তুঘল আওরঙ্গজেব দাক্ষিনাত্যের আহমদ শা ও আদিল শায়েদের মধ্যেও মন্দির ভাঙা প্রবনতার কোন অংশে কম ছিল না। তারা সবাই হিন্দুর বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে আক্রমণ করেছিল হিন্দুস্থান মেতে উঠেছিল হত্যা ও ধ্বংসের তান্ডব নৃত্যে। ধর্মের নামে কোটি কোটি বিধর্মীদের হত্যা করেও তাদের কোন অনুশোচনা ছিলনা ছিল আনন্দ আর উল্লাস। কারন তাদের সবার একটাই উদ্দেশ্য ছিল ইসলামের জয়ের ধ্বজাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
যুগে যুগে ইসলামের এই অগ্রযাত্রা রাজনীতির কুটকৌলে আজও অব্যাহত আছে।কেউ রমনা কালী মন্দির ধ্বংস করে ইসলামের অগ্রযাত্রাকে তরান্বিত করেছেন কেউ আবার ধ্বংসপ্রাপ্ত রমনা কালি মন্দির পুনঃনির্মাণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইসলামের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। আবার কেউ (নরেন্দ্র মোদী) ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরকে নির্মাণ করে সনাতন ধর্মের পরম্পরাকে জাগিয়ে তুলেছেন।
তৈমুর লঙ বিধর্মীদের হত্যা ধর্ষণ ধর্মান্তকরণ করে ইসলামকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন আবার কেউ এযুগে নিজের সন্তানের নাম তৈমুর রেখে ইসলামের বর্বরতার ইতিহাসকে অক্ষয় করে রেখেছেন। কেউ আবার (নরেন্দ্র মোদী) আওরঙ্গজেবের নামে দিল্লির একটি রাস্তার নাম পাল্টে এপিজে আব্দুল কালামের নামে রেখে ভারতীয় পরম্পরাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
বাবর দিল্লি থেকে ৬৬৮কিমি দূরে গিয়ে অযোধ্যাতে রাম মন্দির ভেঙে বাবরি মসজিদ তৈরি করেছিল। আওরঙ্গজেব দিল্লি থেকে ১৭২কিমি দূরে মথুরায় কৃষ্ণ মন্দিরের উপর মসজিদ তৈরি করেছিল। আওরঙ্গজেব দিল্লি থেকে ১৩১২কিমি দূরে গিয়ে সোমনাথ মন্দির ভেঙে তার উপরে মসজিদ তৈরি করেছিল। পঃ বঙ্গের মুর্শিদাবাদে ৪০০০ মন্দির ভেঙে সেই মন্দিরের পাথর দিয়ে কাটারা মসজিদ তৈরি হয়েছিল। বৃটিশ আমল থেকেই সেই মসজিদে নামাজ পড়া বন্ধ রয়েছে এখনো সেখানে কেউ নামাজ পড়ে না। ভাঙ্গা মন্দিরগুলো যে সবই পুনঃস্থাপিত হয়েছে এমন নয়। যেখানে পুনঃনির্মিত হয়েছে সেখানে বিনা রক্তপাতে হয়েছে। কোথাও মুসলিম সম্প্রদায়ের কেউ হতাহত হয়নি। এখানেই সনাতন ধর্মের মাহাত্ম্য।
বহু জায়গায় মন্দির সংলগ্ন মসজিদ এখনো দন্ডায়মান। প্রতিটি মসজিদের নীচে যে মন্দিরের স্থাপত্য রয়েছে ইতিহাস তার স্বাক্ষী। বাবরি মসজিদ খনন করেও ইতিহাসের প্রমাণ প্রমাণিত হয়েছে।
যে সমস্ত মন্দির ভেঙে সেখানে মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল যা আজও মসজিদ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত সে ইতিহাস ভারতের খুব বেশি মানুষ জানেন বলে মনে হয় না। কাশীর বিশ্বনাথ মন্দিরে এখনো জ্ঞানপাপী মসজিদ বর্তমান রয়েছে। ঠিক তেমনি বারানসীর বিন্দুমাধব মন্দির ভেঙে হয়েছে আলমগীর মসজিদ। ভোজশালায় সরস্বতী মন্দির ভেঙে হয়েছে কমাল মওলা মসজিদ। কেরালায় আরাথলী মন্দিরের অস্তিত্ব এখন আর নেই। সেখানে হয়েছে চেরামন জুমা মসজিদ। কুতুবমিনারের রায় পিথৌরা মন্দির হয়েছে কুতুব আল ইসলাম মসজিদ। অযোধ্যায় রাম মন্দির শুধু পুনঃরুদ্ধার হয়েছে পরিবর্তে সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে রাম মন্দিরের অদূরে তৈরি করে দিতে হয়েছে বাবরি মসজিদ। মালদার আদিনাথ মন্দির এখন আদিনা মসজিদ নামে পরিচিত। আজমেরে সরস্বতী মন্দির এখন আরই দিনের ঝোপরা মসজিদ। সোমনাথ শিব মন্দির পুনঃরুদ্ধার হয়েছে। সিদ্ধপুর রুদ্র মহালয় মন্দির এখন হয়েছে জামে মসজিদে। বোধন জৈন হিন্দু মন্দির দেবল মসজিদ নামে পরিচিত। শ্রীনগর কালীমাতা মন্দির হয়েছে খানকাহ এ মওলা মসজিদ। আহমদাবাদ ভদ্রকালী মন্দির রূপান্তরিত হয়ে হয়েছে জামে মসজিদে। বিদিশা বিজয় সূর্য মন্দির হয়েছে বিজা মন্ডল মসজিদে। জৈনপুর আটলা দেবী মন্দির এখন হয়েছে ইরদগাহ মসজিদ। এরমধ্যে শুধু রাম মন্দির ও সোমনাথ মন্দির পুনঃরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে।
বাকি মন্দির পুনঃরুদ্ধারে এখনো কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেই।
এতদিন কেউ জানতেই পারেনি ইতিহাসের এইসব তথ্যগুলো।
তাহলে এতদিন ইতিহাসের প্রমাণ সামনে আসেনি কেন? কারণ দেশভাগের পরে মুঘলদের উত্তরসূরিরা ভারতকে তার ৫ হাজার বছরের পরম্পরা থেকে বঞ্চিত করতে চেয়েছিল। ইতিহাসে তাজমহল, কুতুবমিনার, লাল কেল্লা কারা তৈরি করেছিল তা পড়ানো হত কিন্তু কারা কখন কেন সোমনাথ মন্দির কাশী বিশ্বনাথ মন্দির অযোধ্যা কৃষ্ণের জন্মস্থান এবং নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ভেঙেছিল তা পড়ানো হত না। ইতিহাস থেকে তারা শিক্ষা নেয়নি বলে ইতিহাস ফিরে এসেছে নব দিগন্তে আশার দীপ্ত শপথ নিয়ে।
হিন্দুদের তীর্থস্থান কেদারনাথ মন্দিরের উন্নয়নের জন্য ২০১৩ সালে তৎকালীন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেস সরকারের কাছে অনুরোধ করেছিলেন। তখন কংগ্রেস সরকার নরেন্দ্র মোদীর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল। আজকে কংগ্রেস হিন্দুত্ববাদী হতে চায়। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধী নিজেকে একজন হিন্দু দাবি করে বলছেন আমরা হিন্দুত্ববাদীদের সরিয়ে একটি হিন্দুরাজ কায়েম করব। ইতিমধ্যে নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়ে কেদারনাথ মন্দিরের উন্নয়নে ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে মন্দিরের উন্নয়ন করে গত বছর সেখানে পূজো দিয়ে এসেছেন। হিন্দুত্ববাদী হতে গেলে যে হিন্দু পরম্পরাকে লালন করতে হয় স্বাধীনতার ৭৩ বছর পর কংগ্রেসের সেকথা মনে পড়েছে। অপর এক নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে হিন্দু প্রমাণ করার জন্য বলছেন আমি একজন ব্রাহ্মণ। হিন্দু ধর্ম ব্রাহ্মণকে শেখাতে এসো না। কারণ নরেন্দ্র মোদী একজন সিডিউল কাস্ট। আমি সারা বছর চণ্ডীপাঠ করি। গোটা বইটা মুখস্ত। (গোয়ার জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)। আবার এই নেত্রীই মাথায় হিজাব পড়ে ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ করে এবং অবলীলায় লাই লাহা ইল্লাল্লাহু বলে নিজেকে একজন খাটী ধর্মপ্রাণ হিসাবে তুলে ধরেন।
যে জাতি তার ইতিহাস ভুলে যায় তার ভবিষ্যৎ অন্ধকার। ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে তার নিজস্ব গতিতে। এতদিন সুপরিকল্পিত ভাবে ভারতের অতীত ইতিহাস ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা হয়েছিল। ভারতবর্ষের মূল ভূ-খণ্ডে অষ্টম শতাব্দী থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত মুসলিম শাসন যেভাবে সনাতন ধর্ম সংস্কৃতি কৃষ্টিকে ধ্বংস করার চেষ্টা হয়েছিল কিন্তু কোন নির্যাতনই সনাতন ধর্মকে বিলুপ্ত করতে পারেনি।
(লেখাটি পুরনো কিন্তু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জানা খুব প্রয়োজন)
0 মন্তব্যসমূহ