বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের জবাব একদিন দিতে হবে - নারায়ণ দেবনাথ

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের জবাব একদিন দিতে হবে - নারায়ণ দেবনাথ

Narayan Debnath

২৭ জুলাই ২০২২  · 

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের জবাব একদিন দিতে হবে।

✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️


সম্প্রীতি মানে ধর্ম যার যার উৎসব সবার এমন নয়।যারা এই কথা বলেন তারা ভাবের ঘরে চুরি করেন।সম্প্রীতি বলতে কোন শব্দ ইসলামে নেই।সম্প্রীতি কথাটা এসেছে সেকুলারদের কাছ থেকে। দুর্গাপূজা আসলেই জননেত্রী শেখ হাসিনা ধর্ম যার যার উৎসব সবার এই মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশে আমরা সব ধর্মীয় উৎসব একসঙ্গে পালন করে থাকি বলেন এবং দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব নয় এটি একটি সার্বজনীন উৎসব বলে আখ্যায়িত করেন।আসলে এই কথাগুলো বলা হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের খুশী করার জন্য।যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী দুর্গাপূজাকে সার্বজনীন বলেন তখন হিন্দুদের বুক গর্ভে ভরে যায়।কিন্তু বাংলাদেশে যখন কোথাও মন্দির ভাঙার ঘটনা ঘটে  তখন তিনি নির্বাক হয়ে যান।অথবা মন্দির ভাঙার পর কোন ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত করে শাস্তি নিশ্চিত করেছেন এমনও কোন প্রমান নেই। গত বছর দুর্গাপূজার সময় যা ঘটেছিল তারপর সারা পৃথিবী নড়েচড়ে বসে কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা ছিলেন অনড় কাউকে কোন নির্দেশ দেননি এমনকি নুনতম সমবেদনাও প্রকাশ করেননি। অথচ যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য তিনি দুর্গাপূজার অনুষ্ঠানকে সার্বজনীন বলে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তাদের সুরক্ষা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রশ্নে তার কোন পদক্ষেপ নেই। কারণ তিনি জানেন এই কথাটি বলে তিনি ইসলাম ধর্মের অবমাননা করেছেন। তিনি জানেন মুসলমানদের জন্য ভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে যোগ দেয়া বা তাদের উৎসবে আনন্দ প্রকাশ করা কিছুতেই বৈধ নয়। ইসলামে ধর্ম আর উৎসব পৃথক করে দেখার কোন সুযোগ নেই। অন্য ধর্মের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করা মানে সে ধর্মের সাথে নিজেকে একাকার করে দেয়া। ইসলামি মতে ধর্ম যার উৎসবও  তার।মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে অমুসলিমদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের স্বীকৃতি নেই বললেই চলে।ইন্দোনেশিয়া একটি মুসলিম দেশ হলেও ঐতিহ্যগতভাবে সেখানে বালি নামে একটি পৃথক দ্বীপ রয়েছে যেখানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাস। সেখানে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কোন বাধা নেই। ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশও এক সময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেশ ছিল।কিন্তু ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগের পর থেকেই বাংলাদেশ জ্বলছে। দেশভাগের পর দেড় কোটি সংখ্যালঘু হিন্দুকে জন্মভূমি ছেড়ে আসতে বাধ্য করা হয়েছিল। বাকি যারা নারির টান ছিড়তে না পেরে থেকে গিয়েছিলেন তারা এখন প্রতি মুহুর্তে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ফলে  অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছেন। এ জীবন আর তারা বয়ে বেড়াতে পাচ্ছেন না। তাদের না আছে ধর্মীয় স্বাধীনতা না আছে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা।প্রতি মুহূর্তে তাদের মৃত্যুভয় তাড়া করে বেড়াচ্ছে।


রোহিঙ্গাদের জন্য শেখ হাসিনার সহানুভূতি অনেক, কিন্তু হিন্দুদের জন্য নেই
রোহিঙ্গাদের জন্য শেখ হাসিনার সহানুভূতি অনেক, কিন্তু হিন্দুদের জন্য নেই


স্বাধীনতার পর এদেশের হিন্দুদের অত্যন্ত সন্তর্পনে বানানো হয়েছে কাফের মালাউনে। সংবিধানে অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম প্রবর্তনের পর বাংলাদেশের হিন্দুদের প্রতিষ্ঠানিকভাবে কাফের মালাউনে পরিনত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর যত নির্যাতন নিপীড়ন হত্যা ধর্ষণ ধর্মান্তকরন মন্দির ভাঙচুর এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনস্টের ঘটনা ঘটেছে তার প্রত্যেকটিতে রাষ্ট্র বৈষম্যমূলক আচরণ করে ধামাচাপা দিয়ে আক্রমণকারীদের উৎসাহ দেয়া হয়েছে। এর পিছনে ধর্মই প্রধান প্রতিপক্ষ।


সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নামে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরসূরি জননেত্রী শেখহাসিনা চোখ বন্ধ করে রেখেছেন। যে ঢাকেশ্বরীর মন্দিরে তিনি প্রতিবছর দুর্গাপূজার সময় যান সেটা আসলে লোকদেখানো। হিন্দুদের মধ্যে একটা এলিট শ্রেণী ছাড়া বাকি সবাই নিশ্চিত প্রতিবছর দুর্গাপূজার সময় জননেত্রীকে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে খুব আদর আপ্যায়ন করা এবং জন্মাষ্টমীর সময় বঙ্গভবনে লাইন লাগান ছাড়া এই এলিট শ্রেনীটি সারাদেশে হিন্দুদের উপর যত বিপর্যয় নেমে এসেছে তার কোন একটি ঘটনায় এরা বঙ্গভবনে গিয়ে নেত্রীর সাথে দেখা করেছেন এমন প্রমান নেই। এই এলিট শ্রেনীটির মধ্যে অনেকেই সরকারি আমলা অথবা বিভিন্ন সুবিধাভোগী। তাদের একটাই কাজ তোষামোদি করে আখের গোছানো। 







 রোহিঙ্গারা যখন এদেশে এসেছিল তখন কিন্তু নেত্রী দৌড়ে গিয়ে চোখের জলে বুক ভাসিয়ে মাদার অফ হিউমেনেটি খেতাব অর্জন করেছিলেন। এখানেই নেত্রীর আসল রূপটি ধরা পড়ে যায়।নেত্রী মানবিক দয়ালু এতে কোন সন্দেহ নেই কিন্তু ধর্ম তাকে নাসিরনগর রামু কুমিল্লা সিলেট রংপুর নড়াইল যেতে দেয়নি। আমরা ভুলে যাইনি নেত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন দেশ চলবে মদিনা সনদের উপর ভিত্তি করে। হাইকোর্টের সামনে থেকে থেমিসের ভাস্কর্য মূর্তি সরানোর পিছনে নেত্রীর নির্দেশ ছিল।পরিনামে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য মূর্তিও কিন্তু  ভাঙচুর হয়েছিল। এমন বহু ঘটনা ঘটেছে নেত্রীর ইচ্ছে থাকলেও ধর্মীয় বিধিনিষেধের কারণে তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেননি।দেশটি এমন হওয়ার কথা ছিলনা। স্বাধীনতা অর্জনে হিন্দুদের অবদান কোন অংশে কম ছিলনা। অথচ যাদের আপনি এখন খুব কাছের মনে করছেন তারা একদিন আপনার সরকারকে গদিচ্যুত করার জন্য ঢাকা অবরুদ্ধ করেছিল,যাকে আপনি তেতুল খেতাব দিয়েছিলেন তার কাছ থেকে আপনি  কওমী জননীর খেতাব নিয়েছেন। আমরা কিন্তু কিছুই ভুলে যাইনি।যারা ধর্মীয় কারনে সর্বস্ব হারিয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন তাদের ভারত সরকার নাগরিকত্ব দিয়েছেন আপনি তার বিরোধিতা করেছেন। এখানে শুধু এটুকুই বলতে চাই এই প্রথম ভারতীয় সংসদে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন নিপীড়ন অগ্নিসংযোগ এবং জোর করে ধর্মান্তরনের উপর ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিবৃতি দিয়ে সংসদকে অবহিত করেছেন। এই ঘটনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।ভারতের সাথে বাংলাদেশের ভাল সম্পর্ক মানে এই নয় যে চির জীবন সেই সম্পর্ক অক্ষুণ্ন থাকবে। ফলে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর এই নির্যাতনের যে কোন সুরাহা হবেনা এমন নয়।


রোহিঙ্গাদের জন্য তিনি চোখের জলে বুক ভাসাতে পারেন। কিন্তু নিজের দেশে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসে  হিন্দুদের জন্য তার কোন প্রতিক্রিয়া নেই।


https://www.facebook.com/debnath.narayan.127/posts/pfbid0AA5WpKoNdzWVH889KQG88BA9yRYhDx3XGJ6avvc1Ru6yu9uK3T2WstdhLy5pc35Tl

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ