বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন বিষয়ে আরিফ জেবতিকের ফেসবুক স্ট্যাটাস |
কিছু কিছু ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সরকারের মেসেজ খুব ক্লিয়ার। যেসব বিষয়ে মেসেজ ক্লিয়ার সেই বিষয়ে মেসেজ একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দেয়াটাও আওয়ামী লীগ খুব ভালোভাবে পারে।
যেমন ধরেন পদ্মাসেতুর নাটবল্টু।
পদ্মাসেতুর নাটবল্টু যে পবিত্র জিনিস, সেটা নিয়ে মুচরামুচরি করা যাবে না, সেটা প্রথমদিনই মেসেজ ক্লিয়ার করে দিয়েছে। এখন এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পুরা পদ্মাসেতুরে আপনি পার্ক বানাইয়া দিয়ে দেখতে পারেন, সবাই ঘুরবে বেড়াবে ফুচকা খাবে কিন্তু নাটবল্টুতে হাত দিবে না। পদ্মাসেতুর নাটবল্টুতে হাত দিলে নিজের নাটবল্টু আস্ত থাকবে না, সেটা ক্লিয়ার মেসেজ।
একই ভাবে অনলাইনে কারে অবমাননা করলে ৭ বছর জেল হবে কারে চুদির ভাই বলে গালি দেয়া যাবে, পাবলিকের মাথায় এটা পরিস্কার ভাবে ঢুকিয়ে দেয়া আছে।
এখন হিন্দুদেরকে মারা হবে কি রাখা হবে, এই ব্যাপারে আওয়ামী লীগ কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে নাই। আওয়ামী লীগ সেই সিদ্ধান্ত যতদিন নিবে না ততদিন এই হিন্দু মারা চলতেই থাকবে।
কিছুদিন আগে এক অধ্যক্ষকে জুতা পরিয়ে কলেজ থেকে বের করার ভিডিওটা আরেকবার দেখেন। সেখানে দাঙাবাজ মানুষের চাইতে পুলিশ অনেক বেশি ছিল। এখানে অধ্যক্ষরে জুতা পরানোর ঘটনা না হয়ে বিরোধী দলের একটা অনুষ্ঠান হচ্ছে, এরকম হলে এই পুলিশরাই কিন্তু শুটিয়ে লাল করে দিত। কারন তাঁদের কাছে মেসেজটা ক্লিয়ার আছে যে কারে কখন পেটাতে হবে। যেহেতু হিন্দু অধ্যক্ষ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা ক্লিয়ার না, তাই এত এত পুলিশ থাকতেও তারা কোনো হস্তক্ষেপে যায় নি বরং জুতা পরানোতে পরোক্ষ সাহায্য করেছে।
নড়াইলের ঘটনায় ইউএনও'র ফেসবুক স্ট্যাটাসটা দেখেন। ( ধরে নিচ্ছি এটা ইউএনও'র একাউন্ট)। ইউএনও বা তৃণমূল প্রশাসনের কাছে বার্তা পরিস্কার না যে হিন্দু রাখা হবে নাকি ভোগে লাগানো হবে। তাই তৃণমূল প্রশাসন ধর্মে ও জিরাফে সমান তালে তাল দিয়ে যায়।
ধরেন, আওয়ামী লীগ আজকে বলল যে , নাহ, দেশে ডাইভার্সিটি, ইকুইটি আর ইনক্লুশন দেখানো দরকার। হিন্দু মারা বন্ধ। এই সিদ্ধান্ত নেয়ার সাথেসাথে দেখবেন সব মিডিয়া সাম্প্রদায়িক হামলার বড় বড় নিউজ করা শুরু করেছে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট হাইকোর্ট নিয়ে মিছিল বাদ দিয়ে হিন্দু মারা নিয়ে মিছিল বের করা শুরু করবে। পূর্বতন হামলার আসামী কয়েকটাকে ধরে রেবের হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় এনে প্রেস কনফারেন্স করা হবে। হেফাজতের যেসব নেতা এখনও জেলের বাইরে আছে, তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে মিটিং করে তারপর ফতোয়া দিবে যে হিন্দুরা আমাদের আমানত। কেউ বলে ফেলতে পারে যে এদের উপর হামলা করলে বিবি তালাক হয়ে যাবে। মানে পুরো একটা ইন্টিগ্রেটের মার্কেটিং কমিউনিকেশন ( আইএমসি) যাবে দেশজুড়ে। তেড়েমেড়ে ডান্ডা।
তাই নড়াইলের ঘটনায় মাশরাফিকে কিংবা ডিসি,ওসি, ইউএনওকে সিঙ্গেল আউট ব্লেইম দেয়াটা হচ্ছে মূল সমস্যাকে এড়িয়ে যাওয়া।
আই রিপিট,
হিন্দুদেরকে মারা হবে কি রাখা হবে, এই ব্যাপারে আওয়ামী লীগ কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে নাই। আওয়ামী লীগ সেই সিদ্ধান্ত যতদিন নিবে না ততদিন এই হিন্দু মারা বন্ধ হবে না চলতে থাকবে, সেটা বুঝা যাবে না।
https://www.facebook.com/jebtik/posts/pfbid02FksKoqUxBJePZJ5KwWLC3Q6QdDsU5eUhAz5zdxfJSX3unngQzrSorYEJYgPWcFPul
0 মন্তব্যসমূহ