ধর্মানুভুতিতে আঘাতের অভিযোগে হিন্দুশূন্য বাংলাদেশ কায়েম করাই লক্ষ্য - নারায়ন দেবনাথ

পূজামণ্ডপে কোরান রেখেছিল ইকবার নামক মুসলমান
পূজামণ্ডপে কোরান রেখেছিল ইকবাল নামক মুসলমান

Narayan Debnath

  · ৩০ জুলা্ই ২০২২

ধর্মানুভুতিতে আঘাতের অভিযোগে হিন্দুশূন্য বাংলাদেশ কায়েম করাই লক্ষ্য।

✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️


সর্বশেষ নড়াইলের ঘটনায়ও প্রমাণ হয়েছে জাহাঙ্গীর ইসলাম নামে এক জিহাদি আকাশ সাহার নামে একটি ভূয়া আইডি খুলে ধর্মানুভুতিতে আঘাতের অভিযোগ এনে পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এর আগে বাংলাদেশে যতগুলো সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে তার প্রত্যেকটি ঘটনা একই ভাবে সংঘটিত হয়েছে। এটি পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে হিন্দুশূন্য করার একটি প্রচেষ্টা যার সাথে দেশের সর্বোচ্চ নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে বিশিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলো জড়িত। কারন প্রতিটি ঘটনা ঘটার পর কোন রাজনৈতিক দল প্রতিবাদে বা প্রতিরোধে এগিয়ে আসেনি। ধর্ম অবমাননা বলতে তারা বুঝে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ গুলোকে যেকোনো ভাবে দেশ ছাড়া করা। ইতিমধ্যে সর্বশেষ জনগননার যে রিপোর্ট রেরিয়েছে তাতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি জামাতসহ সব সাম্প্রদায়িক দলের অলিখিত এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুরই অনুরনিত হয়েছে। সুতরাং এসব ঘটনায় কেউ ধরা পড়লেই যে হিন্দুরা নিরাপদ এমন ভাবার কোন কারন নেই। আমি কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করে প্রমাণ করতে চাই ইসলাম যদি সত্যি একটি অনুভূতিশীল ধর্ম হয়ে থাকে তাহলে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা নিজেদের ধর্মকে অবমাননা করলে কেন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না? এই জন্য আমাকে ইসলাম বিদ্বেষী বলা সহজ কিন্তু ঘটনাগুলো মিথ্যা প্রমাণ করা মোটেও সহজ কাজ নয়।


কোরানে মানুষের পায়খানা রেখেছে হাবিবুর


ঘটনা প্রবাহ সমূহ ঃ-- 

কোন মুসলিম ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরানের উপর মলত্যাগ করলে যদি ধর্মানুভুতিতে আঘাত না লাগে বা কোন মুসলিম কাবা ঘরের উপরে শিবের মূর্তি বসিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করলে যদি ধর্মানুভুতিতে আঘাত না লাগে, অথবা কোন মাওলানা যদি প্রকাশ্যে বলতে পারে করোনা ভাইরাস মুসলিমদের কাছে আসবে না যদি আসে তবে কোরান শরিফ মিথ্যা হয়ে যাবে- এসব বলা এবং করার পরে কি সেই ধর্মের ধর্মানুভূতি বলে কিছু অবশিষ্ট থাকে?থাকে না। কারন বাংলাদেশে কথিত ধর্মানুভুতিতে আঘাতের অভিযোগে যতগুলো ঘটনা ঘটেছে তার অধিকাংশই ছিল মিথ্যা এবং গুজবের উপর ভিত্তি করে ঘটা।এবং তার বলি হয়েছেন নিরিহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা। ধর্মানুভূতি যদি ধর্মকে আঘাত করে থাকে তাহলে কোরানের উপর মলত্যাগের কোন বিচার হল না কেন? কুমিল্লার দাউদকান্দির ভাগলপুর গ্রামের ফকির আব্দুল হাকিম ফরিদুন্নেসা মাইজভান্ডারি ফোরকানিয়া মাদ্রাসার মক্তবে পর পর ১৬টি কোরান শরিফের উপর মলত্যাগ করেছিল হাবিবুর রহমান নামে এক মুসলিম।আপনারা কি কেউ জানেন হাবিবুর রহমানের কি শাস্তি হয়েছিল।কিছুই হয়নি। মাওলানা মুফতি আমির হামজার বিরুদ্ধে কি সরকার ধর্মানুভুতিতে আঘাতের কোন মামলা করেছে?করেনি। গত বছর দুর্গাপূজার সময় কুমিল্লাতে প্রতীমার পায়ের নীচে কোরান রাখার দায়ে ইকবাল নামে এক মুসলিম গ্রেফতার হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে কি কোন ব্যবস্থা হয়েছে? হয়নি। সিলেটের সাল্লার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে কিন্তু কিছুই হয়নি যেমনি ভাবে হয়নি নাসিরনগর ঘটনার ভোলার ঘটনার রংপুরের ঘটনায় রামুর ঘটনায় মুরাদনগরের ঘটনায় সর্বশেষ নড়াইলের ঘটনায়।


কাবার উপর শিবের ছবি ফটোশপ করে রেকেছে জাহাঙ্গীর আলমকাবার উপর শিবের ছবি ফটোশপ করে রেকেছে জাহাঙ্গীর আলম
কাবার উপর শিবের ছবি ফটোশপ দিয়ে রেখেছে মুসলমান জাহাঙ্গীর আলম

উল্লেখিত সমস্ত ঘটনা গুলো সোস্যাল মিডিয়াতে বহুল আলোচিত। কিন্তু বাংলাদেশের কোন মুমিন এদের নিয়ে টুশব্দটি করেনি। বাংলাদেশে ধর্মানুভূতির যতগুলো ঘটনা ঘটেছে তার পিছনে একটাই মটিভ হিন্দুদের দেশ থেকে তাড়ানোর ষড়যন্ত্র। নাসির নগরে গুজব ছড়িয়ে স্মরনাতীতকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটেছিল। টিটু রায় নিরক্ষর ৭বছর এলাকায় নেই। যে পোস্টের কারনে তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা এবং হিন্দুদের উপর হামলা হয়েছিল সেই পোস্টটি করেছিল মাওলানা হামিদী।


রামুতে গুজব ছড়িয়ে হামলা হয়েছিল। এমনি ভাবে চট্টগ্রাম শহরতলী, যশোর, গোপালগঞ্জ, পাবনার সাথিয়া,বরিশালের আগৈলঝরা, পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা ইত্যাদি স্থানে একই কায়দায় গুজব ছড়িয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর ঘটেছে নির্মম অত্যাচার অবিচার। এ পর্যন্ত একটি ঘটনারও বিচার বিভাগীয় তদন্ত হয়নি।


নড়াইলে হিন্দুবিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক হামলার সূচনাকারী মো. জাহাঙ্গীর আলম (কালো টি শার্ট পরা)। সে 'আকাশ সাহা' নামে এক হিন্দু তরুণের নামে মিথ্য ফেসবুক একাউন্ট খোলে এবং সেখান থেকে নবী মোহাম্মদের নামে অশ্লীল পোস্ট দেয়। এর ফলে হিন্দু বিদ্বেষী আক্রমণ শুরু হয়।
নড়াইলে হিন্দুবিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক হামলার সূচনাকারী মো. জাহাঙ্গীর আলম (কালো টি শার্ট পরা)। সে 'আকাশ সাহা' নামে এক হিন্দু তরুণের নামে মিথ্য ফেসবুক একাউন্ট খোলে এবং সেখান থেকে নবী মোহাম্মদের নামে অশ্লীল পোস্ট দেয়। এর ফলে হিন্দু বিদ্বেষী আক্রমণ শুরু হয়।

যে ধর্ম তার অনুগামীদের শিক্ষা দেয় হত্যা ও লুন্ঠনই হল ধর্মীয় কর্তব্য পুন্যের কাজ সে ধর্ম মানবজাতির কলঙ্ক। সেই ধর্মের ধর্মগুরুর জীবনাচার নিয়ে কথা বললে হয় ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেয়া। অথচ এ সবই গ্রন্থের কথা।কিন্তু মুমিন ভাইয়েরা কিছুতেই তা সহ্য করবেন না। ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের উপর মলত্যাগ করলে যদি ধর্মানুভুতিতে আঘাত না লাগে তাহলে লজিক্যালি হযরত মুহন্মদের জীবনচরিত নিয়ে কথা বললে ধর্মানুভুতিতে আঘাত লাগবে কেন?


রূঢ় সত্য প্রকাশে বিশ্বাসী মুমিনরা খুব আহত হবেন জানি। আমার বিরুদ্ধে হয়ত কথিত ধর্মানুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে জুম্মার পর মিছিল হবে ফাঁসির দাবি উঠবে। আহত মুমিনদের প্রতি স্বনির্বন্ধ অনুরোধ থাকবে যারা কোরানের উপর মলত্যাগ করেছিল বা যেই আলেম কোরানকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তার ফাঁসির দাবিতে কি মিছিল করেছিলেন? ভেবে দেখবেন ঠিক বলেছি কিনা।।


https://www.facebook.com/debnath.narayan.127/posts/pfbid024boJ8GKPRsH9bFRiAi6WjAHJApw9L6bq1hdMs8eZLabnznxLLrpVD7hXn4r8NR92l

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ