একজন হিন্দু যে কারণে তার ধর্মকে শ্রেষ্ঠ মনে করে - জাহাঙ্গীর হোসেন

একজন হিন্দু যে কারণে তার ধর্মকে শ্রেষ্ঠ মনে করে - জাহাঙ্গীর হোসেন
প্রাচীন ভারতীয় প্রত্ন নিদর্শন

:

কলকাতার এক হিন্দু বন্ধু ইনবক্সে বললো, একজন সনাতনী হিন্দু হিসেবে আমি একজন মুসলমানের চেয়ে অনেক সুখী ও গর্বিত! কারণ আমরা হিন্দুরা প্রার্থনায় বলি, "জগতের সকল প্রাণি সুখী হোক" কিন্তু একজন মুমান তাদের প্রার্থনায় বলে, "কেবল মুসলমান সুখী সমৃদ্ধ হোক"! মুসলমান ধর্মে একটা কুকুর বা শুকর নাকাপ ঘৃণিত হলেও, শুকর হিন্দু ধর্মে "বরাহ অবতার", পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভূভক্ত প্রাণি কুকুর আমার ধর্মে হত্যা নিষিদ্ধ, এমনকি দেবতা ভৈরবের বাহন কুকুর। গাভীর দুধপানসহ মায়ের মতো অনেক সেবা নেই বলে, তাকে মাতৃজ্ঞানে শ্রদ্ধা করি আমরা। অথচ মুসলমান তার দুধও খায়, আবার হত্যা করে রান্না করেও খায়। যা হিন্দু ধর্মে নীতিহীন কাজ।

:

কেউ হিন্দু ধর্ম পালন করুক বা ত্যাগ করুক বা পূজো না করুক, তাতে অন্য হিন্দুর কোন টেনশন নেই। কিন্তু একজন মুমান হিন্দু কেন তারই ধর্ম গ্রহণ না করে নিজ ধর্ম পালন করছে, এ কারণে সারাক্ষণ সে টেনশনে মরে, তাকে নিধন করলে নাকি তার সওয়াব, জান্নাত। কিন্তু অন্য ধর্মাবলম্বীকে হত্যা, তার স্ত্রী কন্যা সন্তান সম্পদকে দখল হিন্দু ধর্মে ঘৃণার কাজ, এ কাজ করলে স্বর্গ মাইনাস হবে হিন্দুর।

:

ভারতীয় কেবল হিন্দু নয়, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ সব ধর্ম অহিংস। জৈন, বৌদ্ধরা মানুষ কেন একটা পিপড়া হত্যাকেও মহাপাপ মনে করে। প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের অপরিসীম অংশ ধর্ম ও দর্শনের মধ্যে। হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, জৈনধর্ম, শিখ, চার্বাক, এবং অন্যান্য ধর্মীয় বিশ্বাস এই সময়ের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ ছিল। বেদ, উপনিষদ, মহাভারত, রামায়ণ, পুরাণ এবং অন্যান্য গ্রন্থ ভারতীয়  মহান সাহিত্যের অংশ। এর সাহিত্যিক উপাদানে ধারাবাহিকতার মধ্যে ধর্ম, দার্শনিক বিচার, এবং নৈতিকতা অমূল্য। কলার দিকে, মনিময় মন্দির, আজপাট, গুপ্ত শিল্প, ভারতীয় স্তূপ, চিত্রশিল্প, মঞ্চ নাট্য, সঙ্গীত, এবং নৃত্য প্রাচীন ভারতের ঐতিহ্যের অংশ। হিন্দু ধর্মীয় উৎসব নাচ, গান, আনন্দের অংশ। মুমান ধর্মে উৎসব মানে বলিদান করে মাংস খাওয়া বা ৩০ দিন না খেয়ে একদিনে কেবল খাওয়া আর খাওয়া, এতে আনন্দ বা উৎসব কি বুঝিনা আমি।

:

আজ ও প্রাচীন ভারতীয় সমাজ ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থায় নৃত্য সমাজের উন্নতির এবং পরিচয়ের অংশ। গণিত, অণুবিজ্ঞান, খগোলবিজ্ঞান, চিকিৎসাবিদ্যা, ঔষধ, নৌকা তৈরি, স্থাপত্যবিদ্যা, এবং ধাতুর উৎপাদন প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির অতীতের অংশ ছিল। ভারতের মৌর্য রাজা অশোক বৌদ্ধধর্মের ঐতিহাসিক গ্রহণযোগ্যতা এবং তাঁর সাম্রাজ্য জুড়ে অহিংসা ও শান্তি ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টার জন্য ব্যাপকভাবে পরিচিত! অনেক বিদেশী লালন আখড়ায় বা মায়াপুরে এসে বৈষ্ণবদের মানবপ্রেমে মুগ্ধ হয়ে মায়াপুর থেকে যাচ্ছে কিন্তু কোন ইউরোপীয় বাংলাদেশে এসে বাংলাদেশের মুসলমানদের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে মুসলমান হয়ে থেকে গেছে, এমন কথা শুনিনি। বরং বাংলাদেশ থেকে অনেক মুসলিম শান্তির খোঁজে জীবন বাজী রেখে অন্য দেশে অবৈধ বৈধ যে যেভাবে পারে পালাচ্ছে, যা এখন দিনের মতো সত্যি! 

;

বেদ, রামায়ণ, মহাভারতের মত এপিক কেবল ভারতে নয় বিশ্বসাহিত্যে অনন্য। কিন্তু মুসলমানরা বলে তাদের পবিত্র কুরানের একটা সুরাও নাকি বিশ্বের সকল লোক মিলেও তৈরি করতে পারবে না। আচ্ছা রামায়ণ মহাভারত বাদ দিলাম, রবীন্দ্রনাথের বলাকা বা সোনারতরী কবিতা আরেকটা কেউ তৈরি করতে পারবে? কারণ সব সাহিত্য ভিন্মরূপকে ভিন্ন ভঙ্গিতে লেখা। একটার মতো অন্যটা কখনো হয়না, হবেনা।

:

ভারতীয় সিন্ধু সভ্যতার একটি শহর ধোলাভিরায় যখন কৃত্রিমভাবে নির্মিত জলাধারগুলিতে জলস্তর পৌঁছানোর জন্য স্টেপওয়েলের সিঁড়ি ছিল, আধুনিক লোথালে শৌচাগার নিষ্কাশন ব্যবস্থার প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে, মানে ৩-৪ হাজার বছর আগেও যেখানে আধুনিক স্নানাগার ও শৌচালয় ছিল, ১৪০০ বছর আগেও মুমানরা তার ধারণা জানতো না, পাহাড়ে পায়খানা করে পাথর দিয়ে রেকটাম মুছতো, তা কতটা নন-হাইজেনিক ও বিপদজনক (পাথরে নরম রেকটাম কেটে যাওয়া) ছিল! ভারতের মেহেরগড়ে ৩০০০-২৫০০ খৃস্টপূর্বের একটি মৃৎপাত্র দেখুন, কত নিখুঁত! এসব কারণে ভারতীয় সংস্কৃতির ধারক হিন্দু ধর্মধারী হিসেবে আমি অত্যন্ত গর্বিত! 

:

১ নং চিত্র : ভারতের লোথালের ৩-৪ হাজার বছরের পুরনো শৌচাগার, যার ধারনা ১৪০০ বছর আগের মক্কা মদিনায় ছিলনা! 

:

২ নং চিত্র : ৩০০০ বছর পুরনো মেহেরগড়ের একটি মৃৎপাত্র 

:

(লেখাটি কলকাতার বন্ধু "সু.তু" এর লেখা, মতামত তার একান্তই নিজস্ব, এ মতামতের জন্য পোস্টদাতার কোন দায় নেই, লেখকের তথ্যসূত্র google, wiki   এবং তার নিজস্ব মতামত)



সূত্র : ফেসবুক

Post a Comment

0 Comments