ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত প্রসঙ্গে ফরিদ ছিফাতুল্লাহ

ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত প্রসঙ্গে ফরিদ ছিফাতুল্লাহ


মৃত্যুর পর গায়ে থুতু দেয়ার জন্য তাঁর মরদেহ বাইরে রেখে দেওয়া হয়েছিল।


যদি জিজ্ঞেস করি কে সর্বপ্রথম বাংলা ভাষাকে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা করার প্রস্তাব রাখেন? 



তিনি ছিলেন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত।


সেই ইতিহাস আমরা অনেকেই মনে রাখিনি। 


ইতিহাসে যিনি আড়ালেই থেকে গেলেন!


পাকিস্তান স্বাধীন হয় ১৯৪৭ খ্রীষ্টাব্দের ১৪ই আগস্ট। 


মাত্র ছয় মাসের মাথায় করাচিতে ২৩শে ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ খ্রীষ্টাব্দে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে যিনি স্পষ্ট ভাষায় দাবি তুলেন, "বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করা হোক" 

সেই মানুষটির নাম 'ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত'


ধীরেন্দ্রনাথ দত্তই সর্বপ্রথম বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তুলেছিলেন। ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সেই দাবি পাকিস্তান পার্লামেন্টে প্রত্যাখ্যাত হয় এবং সেই থেকেই ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়। 


ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পাকিস্তান পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, 


"পূর্ব পাকিস্তানের ৬ কোটি ৯০ লাখ মানুষের মধ্যে ৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাংলায় কথা বলে, তাই আমার বিবেচনায় বাংলা হওয়া উচিত রাষ্ট্রভাষা।" 


তার ওই বক্তব্যকে জিন্নাহর 


"উর্দু, একমাত্র উর্দুই হবে রাষ্ট্রভাষা" ঘোষণার প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ বলে গণ্য করা হয়। সুতরাং ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে ‘ভাষা আন্দোলনের পথিকৃৎ’ বললে অত্যুক্তি হবে না।


আমরা উনাকে মনে রাখিনি ঠিকই, অথচ পাকিস্তানের শাসকেরা তাঁকে মনে রেখেছিল!


ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে ১৯৭১ খৃষ্টাব্দের ২৯শে মার্চ পাক-আর্মিরা ধরে নিয়ে ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে নিষ্ঠুরভাবে হ'ত্যা করে। ৮৪ বছর বয়সী মানুষটিকে হাত-পা ভে'ঙে প'ঙ্গু এবং দুই চোখে কলম ঢুকিয়ে অন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মৃত্যুর পর গায়ে থুতু দেয়ার জন্য তাঁর মরদেহ বাইরে রেখে দেওয়া হয়েছিল। 


বিনম্র গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ-এর মধ্য দিয়ে আমরা সকল ভাষা সৈনিক, বীর মুক্তিযুদ্ধের সূর্য সেনানীদের বর্তমান প্রজন্মের কাছে পরিচিত করি এবং শিশুদের সঠিক ইতিহাস জানাতে উদ্ভুদ্ধ করি ।


- সংগৃহীত



সূত্র: ফরিদ ছিফাতুল্লাহ'র পোস্ট

Post a Comment

0 Comments