আমি একজন আইনজীবী৷ পেশাগত কারণে আমাদের সমাজের সেই দিকটা আমাকে প্রতিনিয়ত দেখতে হয় যেটা হয়ত বাকিরা কালেভদ্রে জেনে থাকে। এসকল বিষয়ের মধ্যে "লাভ জিহাদ" এবং "ধর্মান্তরকরণ" অন্যতম।
আজকে এই পোস্ট লেখার কারণ হল সাম্প্রতিক পাওয়া আমার দুই ক্লাইন্ট। ছেলে মুসলিম, মেয়ে হিন্দু। দুজনেই এডাল্ট। শুরুতে তারা নিজ নিজ ধর্মে থেকেই বিয়ে করতে চায় এই বলে আমার কাছে এল। মেয়ে সরকারী চাকুরীজীবী, ছেলে নামমাত্র ব্যবসা করে। ছেলের গালভর্তি দাঁড়ি। পরে কথায় কথায় বের হল ছেলের চাওয়া, মেয়েকে ইসলামিক নিয়মে বিয়ে করবে। কারণ সেটা না করলে তার এই বিয়ে এবং বউ "হালাল" হবেনা! অথচ বিয়ের আগেই হিন্দু মেয়ের সাথে প্রেম, শারীরিক সম্পর্ক সবই করেছে তখন হালাল আর হারামের কথা তার মাথায় আসেনি 🙂
মেয়ে আরেক ধাপ এগিয়ে। ধর্ম তার কাছে বিষয় না। ধর্ম পরিবর্তনেও রাজি। কিন্তু সে এই ছেলেকে ছাড়া বাঁচবে না 🙂
লক্ষণীয় বিষয়, মেয়েটা কত সহজে ছেলেটার জন্য তার ধর্ম ছাড়তে রাজি। অথচ ছেলেটা কিন্তু এত কাহিনীর পরেও তার ধর্ম ছাড়বেনা। অথচ শুরুতে কিন্তু এমন কথা ছিল না। শুরুতে কথা ছিল তারা নিজ নিজ ধর্মে থেকেই বিয়ে করবে। অথচ এখন ছেলে আসল রুপ দেখিয়ে দিয়েছে।
আপনাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ নিজের সন্তানদের ছোট থাকা অবস্থাতেই ধর্মীয় শিক্ষা দিন, নিজেরাও প্রতিদিন না পারুন অন্তত সপ্তাহে একদিন মন্দিরে যান সাথে সন্তানকেও নিয়ে যান। আমরা বেশীরভাগই নিজ ধর্ম সম্পর্কে জানিনা। তাই একটু একটু করে জানার চেষ্টা করি, সন্তানদের জানাই। এখন ইউটিউবের কল্যাণে ঘরে বসে আপনি প্রেমানন্দ মহারাজের মত মানুষের বক্তব্য শুনতে পারছেন। এই সুযোগগুলোকে কাজে লাগান। সনাতন ধর্মের নানান মত আছে। আপনার যেটা ভালো লাগে সেটাই অনুসরণ করুন কিন্তু তারপরেও ধর্মকে আকড়ে ধরার চেষ্টা করুন। আধুনিকতা মানে যে ধর্মহীনতা ও আধ্যাত্মিক পথকে এড়িয়ে চলা না এর উৎকৃষ্ট প্রমাণ হল অ্যাপেলের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস, ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ, ক্রিকেটার ভিরাট কোলি, অভিনেত্রী আনুষ্কা শর্মা সহ আরো বহু আধুনিক মানুষ যখন জীবনের খারাপ সময়ে পৌঁছে গিয়েছিল তখন আধ্যাত্মিকতারই আশ্রয় নিয়েছিল। আমরাও প্রথা অনুযায়ী শেষ জীবনে ধর্ম পালন শুরু করি। কিন্তু এই ট্রেন্ড বদলানো সময়ের দাবি। সময় থাকতে সচেতন হন নয়তো লাভ জিহাদের পরবর্তী শিকার আপনার সন্তানেরা হলে তখন আফসোস করিয়েন না।
0 Comments