নিজস্ব প্রতিবেদক, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫ ৩:১২ অপরাহ্ন
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় ১৯ বছর বয়সী ইতি দাস নামের এক অনার্স পড়ুয়া ছাত্রী, তার বন্ধুর সাথে রেস্তোরাঁয় নাস্তা করতে গিয়ে বখাটেদের বুলিংয়ের শিকার হন। পরে এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে একপর্যায়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
৩রা জানুয়ারি, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ইতি দাসের পরিবার তাকে তার বাসভবন থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইতি দাস দাসপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সমির দাসের মেয়ে এবং বরিশাল বিএম কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
জানা গেছে, সরস্বতী পূজা উপলক্ষে ইতি দাস তার বন্ধুর সাথে বাইরে বের হন এবং দুপুর ১২টার দিকে তারা ঢাকাইয়া ফাস্টফুড রেস্তোরাঁয় যান। সেখানে জাতীয় পার্টির নেতা মহসিন হাওলাদারের ছেলে রিদয় রায়হান তাদের দেখে হেনস্তা করেন। উভয়ের পরিবারকে নিয়ে আসতে বলেন। জনসম্মুখে গালাগাল এবং আজেবাজে কথা বলায় ইতি কান্না করতে থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এসময় রিদয় ইতি দাসের জাতিধর্ম নিয়েও কুৎসিত মন্তব্য করেন।
রেস্তোরাঁর এ ঘটনার পরে ইতি দাসের এক বন্ধু বাউফল থানায় গিয়ে এসআই শাহিনকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এরপর তাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিন, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ইতি দাস বাড়ি ফিরে নিজের কক্ষে চলে যান। রাতে খাবারের সময় তাকে ডাকতে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পান।
রিদয় রায়হান দাবি করেন, তিনি তাদের “আপত্তিকর অবস্থায়” দেখে পরিবারকে ডেকে নিতে বলেছিলেন। তিনি আরও জানান, পরে পুলিশ এসে বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়েটি কান্না করতে করতে বাড়ি চলে যায়।
বাউফল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহিন বলেন, এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড হচ্ছে রিদয়। গতকাল থানায় এক ছেলে এসে বলে আমাদের মোটরসাইকেল আটকে রেখেছে। আমি গিয়ে মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। তখন রিদয় আমাকে বলে এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখানে যে মেয়ে সংক্রান্ত বিষয় আছে তা জানতাম না। আমি মেয়েটির পরিবারকে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি কিন্তু তারা এখনও করেনি।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, ইতি দাসের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী পাঠানো হয়েছে এবং এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্র: বিডিডাইজেস্ট
0 Comments