স্কুল-কলেজ, অফিস ও অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে গীতামন্ত্র পাঠের প্রয়োজন পরে। এই অনুষ্ঠানে নিম্নোক্ত মন্ত্রগুলোর যে কোনটি আবৃত্তি করা যেতে পারে। প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত সময় অনুসারে পাঠে শ্লোক সংখ্যা কম-বেশি করা যেতে পারে।
১। পরমেশ্বর স্মরণে শুরুতেই বলুন।
ওঁ তৎ সৎ
(১ বার অথবা, মতান্তরে ৩ বার)
২। গুরু প্রণাম মন্ত্র: (যেকোন একটি অথবা, সময় হলে ৩টিই)
গুরুব্রহ্মা গুরুবিষ্ণু গুরুর্দেব মহেশ্বরঃ।
গুরুরেব পরং ব্রহ্ম তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ ।
অথবা
অখণ্ডমণ্ডলাকারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম্ ।
তৎপদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ ॥
অথবা
অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য জ্ঞানাঞ্জন শলাকয়া।
চক্ষুরুন্মীলিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরবে নমঃ ॥
৩। পিতৃ প্রণাম মন্ত্র:
পিতাস্বর্গ পিতাধর্ম পিতাহি পরমং তপঃ।
পিতরি প্রীতিমাপন্নে প্রীয়ন্তে সর্বদেবতাঃ ॥
৪। মাতৃ প্রণাম মন্ত্র: (যেকোন একটি অথবা, সময় হলে ৩টিই)
যৎ প্রসাদাৎ জগৎদৃষ্টং পূর্ণকামো যদাশীষা।
প্রত্যক্ষ দেবতায়ৈ মে তুভ্যং মাত্রে নমো নমঃ
অথবা,
মাতা ধরিত্রী জননী দয়ার্দ্র হৃদয়া সতী।
দেবীভ্যো রমণী শ্রেষ্ঠা নির্দোষা সর্বদুঃখ হরা ॥
অথবা,
আরাধ্যা পরমা মায়া দয়া শান্তিঃ ক্ষমা গতিঃ।
স্বাহা স্বাধা চ গৌরী চ পদ্মা চ বিজয়া জয়া।।
৫। শ্রীকৃষ্ণ প্রণাম মন্ত্রঃ
হে কৃষ্ণ করুণাসিন্ধো দীনবন্ধো জগৎপতে।
গোপেশ গোপিকাকান্ত রাধাকান্ত নমোহস্তুতে ॥
অথবা,
ওঁ কৃষ্ণায় বাসুদেবায় হরয়ে পরমাত্মনে।
প্রণতঃ ক্লেশনাশায় গোবিন্দায় নমো নমঃ ॥
৬। শ্রীভগবান্ স্মরণে পাঠ আরম্ভ : (১ বার অথবা, মতান্তরে ৩ বার)
ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়
৭। শ্লোক:
যুক্তাহারবিহারস্য যুক্ত চেষ্টসা কর্মসু।
যুক্তস্বপ্নাববোধস্য যোগো ভবতি দুঃখহা ॥ ১৭
ইয়ুক্ত আহার-বিহারছ্য ইয়ুক্ত চেষ্টছ্য কর্মডু।
ইয়ুক্ত-স্বপ্ন-অববোধছ্য ইয়োগো ভবতি দুঃখহা ॥ ১৭
সরলার্থঃ যিনি পরিমিত আহার-বিহার ও পরিমিত প্রয়াস করেন, যার নিদ্রা ও জাগরণ নিয়মিত, তিনি যোগ অভ্যাসের দ্বারা সমস্ত জড় জাগতিক দুঃখের নিবৃত্তি সাধন করতে পারেন
৮। মঙ্গল মন্ত্র:
ওঁ সর্বেষাং মঙ্গলং ভূয়াৎ সর্বে সন্তু নিরাময়া।
সর্বে ভদ্রাণী পশ্যন্ত মা কশ্চিৎ দুঃখভাক ভবেৎ।।
*মতান্তরে— (অথবা),
সর্বে সুখীনঃ ভবন্ত সর্বে সন্তু নিরাময়াঃ।
সর্বে ভদ্রাণী পশ্যন্ত মা কশ্চিৎ দুঃখতাক ভবেৎ।।
সরলার্থ: সকলের মঙ্গল হউক, সকলে নিরাময় হউক, সকলে উত্তম বিষয় ও বস্তু দর্শন করুক, কেউ যেন দুঃখভাগী না হয়।
৯। ক্ষমা প্রার্থনা:
ওঁ যদক্ষরং পরিভ্রষ্টং মাত্রাহীনঞ্চ যদ্ ভবেৎ।
পূর্ণং ভবতু তৎ সর্বং তৎ প্রসাদাৎ জনার্দন ॥
*মতান্তরে তৎ প্রসাদাৎ ...... (অথবা, সুরেশ্বর, জগৎগুরো)
১০।
ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ
আধ্যাত্মিক, আধিদৈবিক ও আধিভৌতিক— এই ত্রিবিধ বিঘ্নের শাস্তি হউক।
বি.দ্র. ভারতবর্ষের বিভিন্ন কর্পোরেট অফিসের কার্যক্রমের শুরুতে উপনিষদের নিম্নোক্ত শ্লোকটি পাঠ করে কার্যক্রম শুরু করে থাকেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তেমন লক্ষ্য করা যায় না, তবে চর্চার প্রচলন করা যেতে পারে। নিম্নে শ্লোকটি প্রদান করা হলো-
ওঁ সহ নাববতু ! সহ নৌ ভুনক্তু ! সহ বীর্যং করবাবহৈ।
তেজস্বি নাবধীতমস্তু, মা বিদ্বিষাবহৈ।।
ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ
(তৈত্তিরীয় উপনিষদ ২/১ )
(নাববতু = নৌ+অববতু; নাবধীতমস্তু = নৌ+ অধিতম্ +অস্তু)
সরলার্থঃ হে পরমেশ্বর! তুমি আমাদেরকে সমভাবে রক্ষা কর, সমভাবে বিদ্যা দান কর, আমরা যেন সমভাবে সামর্থ অর্জন করতে পারি, আমাদের লব্ধ বিদ্যা সফল হউক, আমরা যেন পরস্পরকে বিদ্বেষ না করি।
0 মন্তব্যসমূহ