‘প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজেই মূর্তি ভাঙেন বীরেন’

জমি দখলে নিতে দেবী সরস্বতীর মূর্তি ভেঙে বিরোধীয় জমিতে রাখেন বীরেন চন্দ্র বর্মন। ছবি: সমকাল
জমি দখলে নিতে দেবী সরস্বতীর মূর্তি ভেঙে বিরোধীয় জমিতে রাখেন বীরেন চন্দ্র বর্মন। ছবি: সমকাল


পঞ্চগড় প্রতিনিধি, প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪ | ০৬:৫৪ | আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪ | ০৬:৫৫


জমি-সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এবং জমি দখলে নিতে দেবী সরস্বতীর একটি মূর্তি ভেঙে বিরোধীয় জমিতে রাখেন বীরেন চন্দ্র বর্মন নামের এক ব্যক্তি। ঘটনার সত্যতা প্রকাশ পাওয়ায় নিজের বসানো মূর্তি নিজেই ভেঙেছেন বলে ভুল স্বীকার করে মুচলেকা দেন তিনি। 


ঘটনাটি পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়নের ছেপড়াঝার এলাকার। শনিবার (২ অক্টোবর) দুপুরের দিকে আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে এই মুচলেকা দেন বীরেন চন্দ্র।


পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ছেপড়াঝার এলাকার অনিল চন্দ্র বর্মনের ছেলে বীরেন চন্দ্রের সঙ্গে স্থানীয় আনছারুল ইসলামের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। বিরোধীয় জমি দখলে নিতে এবং আনছারুলকে ফাঁসাতে শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাতে বীরেন চন্দ্র একটি মূর্তি ভাঙচুর করে ওই জমিতে রাখেন।


মুচলেকায় বীরেন চন্দ্র বর্মন উল্লেখ করেন, 


‘আমি আমার ক্রয়কৃত জমি মো. আনছারুল ইসলামের গোত্রের জমির অংশ দখল পাওয়ার জন্য গত শুক্রবার রাতে আমার নিজ জ্ঞানে কৌশল অবলম্বন করিয়া আমার হিন্দু সম্প্রদায়ের মূর্তি স্থাপন করি এবং নিজে মূর্তিটি ভেঙে দেই। ইহা আমার ভুল হয়েছে। আমার এরুপ কাজের জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’ 

 

বীরেনের দেওয়া মুচলেকা
বীরেনের দেওয়া মুচলেকা


তোড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহ বলেন, 


জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বীরেন তার বাড়ির মূর্তিটি রাতের আধারে বিরোধীয় জায়গায় বসিয়ে নিজেই মূর্তির অংশ বিশেষ ভেঙে ফেলেন। এটা নিয়ে সকালের দিকে সেখানে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। এটা কোনো ধর্মীয় ইস্যু নয়, বীরেন নিজের স্বার্থের জন্য এটা করেছেন।


আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু মুসা বলেন, 


ঘটনার পর ইউএনও স্যারসহ ঘটনাস্থলে যাই। পরে বীরেন চন্দ্র উপস্থিত স্থানীয় মানুষদের সামনে নিজের ভুল স্বীকার করেন। জমি নিয়ে বিরোধের বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান আহ্বানে সালিশ বৈঠকের কথা বলা হয়। কোনো পক্ষ এ ঘটনার লিখিত অভিযোগ করেনি।


আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাফিউল মাজলুবিন রহমান বলেন, 


ঘটনাস্থল থেকে ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে মূর্তি ভাঙার বিষয়টি জানানো হয়েছিল। খবর পেয়ে পুলিশসহ ঘটনাস্থলে যাই এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলি। মূলত হিন্দু সম্প্রদায়ের ওই ব্যক্তি জমিকেন্দ্রিক বিরোধের অ্যাকশন নিতে এমন কৌশল করেছিলেন। পরে তিনি ভুল স্বীকার করে মুচলেকা দেন। ধর্মীয় বিষয়কে কাজে লাগিয়ে এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক বলে জানান ইউএনও।



সূত্র: সমকাল

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ