কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আট দফা দাবিতে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার গণসমাবেশ |
সমকাল প্রতিবেদক, প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪ | ২১:৫২ | আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৪ | ২১:৫৩
সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন, জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সংসদে প্রতিনিধিত্ব, পার্বত্য শান্তি চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে দেশের ৪০টি ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের প্ল্যাটফর্ম ‘সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা’।
শনিবার (২ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক গণসমাবেশ থেকে এসব দাবি জানান সংগঠনগুলোর নেতারা।
তাদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো- দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ ও বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন করা, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন করা, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন কার্যকর করা এবং রাষ্ট্র ও সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব ও মর্যাদা নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিওর সভাপতিত্বে এবং সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার উপ-সমন্বয়ক মনীন্দ্র কুমার নাথের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নিম চন্দ্র ভৌমিক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ বড়ুয়া, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হেমন্ত কোরাইয়া, ইসকনের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র ব্রহ্মচারী প্রমুখ। সংখ্যালঘু মোর্চার আট দফা তুলে ধরেন নির্মল রোজারিও।
সমাবেশে সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত সব অপরাধীকে অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করারও দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের অঙ্গীকার নিয়ে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হলেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন, ঘরবাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-মঠমন্দির দখল, ধর্ম অবমাননার কথিত অভিযোগে গ্রেপ্তার, নানা ট্যাগ লাগিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে ধর্মবিদ্বেষমূলক প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। সহিংসতার বিরুদ্ধে মামলা করার অপরাধে ভুক্তভোগীরা ঘরবাড়ি ছেড়ে পরিবার-পরিজনসহ পালিয়ে অন্যত্র আত্মগোপনে যেতে হচ্ছে। এসময় তারা ৪ আগস্ট পরবর্তী সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনা জাতিসংঘের অধীনে তদন্তের দাবি জানান। গণসমাবেশ থেকে রাণা দাশগুপ্ত ও চিন্ময় ব্রহ্মচারীসহ সব সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক- এ তিন পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের মধ্য দিয়ে এই সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ শেষে শহীদ মিনার থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি দোয়েল চত্বর প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্য গিয়ে শেষ হয়।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ-ইসকনসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রায় ৪০টি সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন।
সূত্র: সমকাল
0 মন্তব্যসমূহ