ভারতবর্ষে হিন্দুর ইতিহাসকে মুছে দেওয়ার এই খেলা অনেক পুরোনো - শ্রী দিলীপ কর্মকার

ভারতবর্ষে হিন্দুর ইতিহাসকে মুছে দেওয়ার এই খেলা অনেক পুরোনো -  শ্রী দিলীপ কর্মকার

ভারতবর্ষে হিন্দুর ইতিহাসকে মুছে দেওয়ার এই খেলা অনেক পুরোনো । বিগত ৮৫০ বছর ধরেই হিন্দুদের ইতিহাসকে মুছে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে । স্বাধীনতার পর বামপন্থী ও কংগ্রেসীরা একে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে প্রয়োগের কথা ভেবেছে ।এর নাম দিয়েছে 'বৈজ্ঞানিক মার্ক্সবাদ'। ভারতের ইতিহাস থেকে  বেছে বেছে বাদ দেওয়া হয়েছে  রাজা অনঙ্গ সিং, রাজা জয় সিং, পাঞ্চাল রাজ আদিত্য মোহন, চোল রাজ রাঘবেন্দ্র চোল, রাজা পরমার্থীব দেব, রাজা বিজয় সিং, রাজা সর্বথাসিদ্ধ কৌশল, রাজা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য, রাজা অজাতশত্রু, রাজা সূসীমান গৌড় প্রভৃতিদের । আর তাদের  সৃষ্টিশীলতা ও শিল্পসূষমাকে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে তুঘলক, ঘোরী, আইবক, শক, হুন, পাঠান, মোগল কিংবা কুষানদের মতন  বেদুইনের মাঝে । যাদের কাছে অত্যাচার, মাথাকাটা, গলাকাটাটাই ছিল একমাত্র শিল্প । 


অবাক এই দেশের মানুষেরাও, তারা কোনদিন প্রশ্নটুকুও তোলেনি, এই অত্যাচারী ও বর্বর জাতিগুলো শিল্পী ও সৌন্দর্যপীপাসু হল কি করে? কবে থেকে ? ভারতের মাটিতে পৌছেই তারা হঠাৎ আর্কিটেক্ট হয়ে উঠেছিল, এটা ভারতের মাটির গুনে? নাকি  ঐতিহাসিকদের দাবার চাল সাজানোর গুনে ?  একবারও কি ভারতের মানুষের মনে হয়নি, এরা  এদেশে লুঠ করতে এসেছিল নাকি  শিল্পসৃষ্টি করতে ? কি দরকার ছিল কুতুবউদ্দিন আইবক এর এদেশে কুতুব মিনার বানাবার ? 


বামপন্থী ঐতিহাসিকরা যখন সৌধ ও  স্থাপত্যের বাটোয়ারা করছিল তখন ভাবতে পারেনি যে ইতিহাস কোনদিন কথা বলবে । পলেস্তারা-চূন-সূড়কি খসে পড়বে 'দীওয়ান ই আম'  এবং 'দীওয়ান ই খাস'  এর । দেওয়ালের চূন-সূড়কি খসে বেড়িয়ে আসবে দেওয়াল  জুড়ে দেবনাগরীয় অক্ষরে বড় বড় করে লেখা গীতার বানী, বিক্রমাব্দের সময়সীমা । প্রমাণ হয়ে যাবে  দিল্লির  'দীওয়ান ই আম'  কিংবা  'দীওয়ান ই খাস' কোনও আকবরের সৃষ্টি নয় । সেগুলির অন্য কোন ও  নাম আছে । এবং সেই  স্থাপত্যগুলির স্রষ্টা মহারাজ বিক্রমাদিত্য । কি বলে  ইরফান হবিব-রোমিলা থাপারেরা ?  একবার কার্বনটেস্ট হয়ে যাক? প্রত্নতাত্ত্বিকদের এখানে একবার দেওয়া হোক ছাড়পত্র ? 


বিক্রমাদিত্যর অন্য এক সৃষ্টিকে এভাবেই তুলে দেওয়া হয়েছে মুসলিম শাসকদের নামে । সেটি  কুতুব মিনার । বলা হয়েছে সেটি কুতুবউদ্দিন আইবকের সৃষ্ট এক বিজয় স্তম্ভ । হাস্যকর ব্যাপার এটাই যে  কুতুবউদ্দিন আইবক এমন একজন রাজা যিনি কোনো দিন যুদ্ধ জয় করেন নি । রোমিলা থাপারেরা কি বলতে পারেন কোন জয়ের স্মারক হিসেবে তিনি এটি বানিয়েছিলেন ? 


আসলে কুতুব মিনার নয় এটি  বিষ্ণু স্তম্ভ । আমরা রাজা বিক্রমাদিত্যর নবরত্ন সভার কথা জানি । সেই নবরত্ন সভায় অন্যতম অলঙ্কার ছিলেন  বৈজ্ঞানিক বরাহমিহির । তাঁর অন্য নাম ছিল ঋষি  মিহিরাচার্য । এই মিহিরাচার্যের বিজ্ঞান সাধনার ক্ষেত্র হিসেবে এবং  সূর্যরশ্মির জ্যামিতিক বিশ্লেষণ এর স্বার্থে নির্মিত হয়েছিল এই বিষ্ণু স্তম্ভ । মোট ২৪ ভাগে(পিঠ) বিভক্ত এই মিনার  প্রতিটি দিনের ২৪ টি ঘন্টার নিরুপন করে । সূর্য ওঠার মূহুর্তে মিনারের সর্বোচ্চ অংশটি আলোকিত হয় । বেলা বাড়ার সাথে সাথে  সূর্যের আলো ঘন্টার হিসেবে  ২৪ টি পিঠকে ছুঁয়ে চলে । দুপুর বারোটায় সূর্য যখন মধ্যগগনে  তখন  সম্পূর্ণ মিনার একসাথে সূর্যালোকে আলোকিত হয় । বেলা বারোটার পর থেকে সূর্যালোক ক্রমশঃ মিনারে  সঙ্কুচিত হতে থাকে । সূর্য ডোবার মূহুর্তে শুধুই মিনারের সর্বোচ্চ পিঠটি আলোকিত থাকে । রাজা বিক্রমাদিত্যর রাজত্ব কালে এই মিনারটিই প্রতিটি  দিনের সময়ের হিসেব রাখতো । ঘড়ির অভাব পূরন করতো । এরই সাথে  থাকা অন্য লৌহ মিনারটির তিনি নাম দিয়ে ছিলেন গরুড় স্তম্ভ । এই  লৌহ মিনারটি  ঐ অঞ্চলে ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি করেছিল । যা বরাহমিহির এর বিজ্ঞান গবেষণায় এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করত । এবার  বলুন বামপন্থী ঐতিহাসিকরা, কুতুবউদ্দিন আইবক নামের এক  লুটেরার এত উন্নত বৈজ্ঞানিক বুদ্ধি থাকলে সে দেশ লুঠ করে বেড়াবে কেন ?  খেজুরে বুদ্ধি শুধু কুতুবউদ্দিন আইবক এর নয় ।খেজুরে বুদ্ধি আপনাদের ও । নাহলে  এরকম বাঁদরের গলায় মুক্তোর হার পড়াবার মতন  কাঁচা দুর্বুদ্ধি আপনাদের মাথাতে আসবেই বা কেন ? 


একইভাবে প্রমাণ ফুটে বেড়োচ্ছে হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে অবস্থিত শেখ চিল্লি মিনারটির ও ।  শেখ চিল্লির ছাপ মারা এই মিনারের চূন-সূড়কি খসে পড়ে দেখা যায়  শুধু  গীতার বানী ও কৃষ্ণ অর্জুনের রথারূঢ়  চিত্র । এবং বিক্রমাব্দের সন ও তারিখ । প্রশ্ন  শেখ চিল্লি কি ইসকন দীক্ষিত ছিলেন । নাকি  বামপন্থী ঐতিহাসিকরাই প্রবঞ্চক? প্রত্নতাত্ত্বিক সেলিনা লোভেজ এর মতে এটিও রাজা  বিক্রমাদিত্যর সৃষ্টি । যার নাম বদলে দেওয়া হয়েছে ।


অর্থাৎ বেছে বেছে শুধু হিন্দুদের ইতিহাসকে লুকিয়ে দেওয়া হয়েছে । কারন চৈনিক সাম্রাজ্যবাদীরা, ইসলামিক সাম্রাজ্যবাদীরা, সেকুলার বাদী ও মিশনারিরা জানে যে যতদিন ভারতে হিন্দুরা কনফিউজড থাকবে ততদিনই তাদের রমরমা । এটি  একটি আন্তর্জাতিক চক্র । যারা হিন্দুদের কাছা খুলবার জন্য সদা ব্যস্ত । হিন্দুদের গৌরবকে মুছে দাও, হিন্দুদের সাম্প্রদায়িক বানিয়ে দাও, হিন্দুদের নিজেদের ঐতিহ্য ও পূর্বপুরুষদের ঘৃনা করতে শেখাও । তবেই তো শক্তিশালী হবে সেকুলার বাদ, মার্কসবাদ, মাওবাদ, ইসলামাবাদ কিংবা মিশনারিবাদ । হিন্দুদের রূখতে এ এক সার্বিক জোট । ভারতে হিন্দুত্বকে শেষ করতে দালালরা তৎপর । হিন্দুদেরকেই এগিয়ে এসে নিজেদের ইতিহাস চিনে নিতে হবে ।


লিখেছেনঃ শ্রী দিলীপ কর্মকার।


সূত্র: ফেসবুক

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ