সবিতার স্বামী ছিলেন আলাদা ঘরে, মাঝখানে ঘুম থেকে ওঠে দেখেন সবিতার হাত-পা বাঁধা, আর ঘরের পেছনে সিঁধ কাটা। ছবি: সময় সংবাদ |
নড়াইলের লোহাগড়ায় সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে সবিতা রানী বালা (৫৭) নামের এক প্রধান শিক্ষককে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের চরদৌলতপুর গ্রামের রথখোলা পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
সজিব রহমান, ১৩ টা ৫৪ মিনিট, ২১ অক্টোবর ২০২৪
নিহত সবিতা রানী বালা উপজেলার চরদৌলতপুর গ্রামের পরিতোষ কুমার মন্ডলের স্ত্রী। তিনি চরদৌলতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান বিষয়টি সময় সংবাদকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পরিতোষ কুমার মন্ডল ও সরিতা রানী বালা দাম্পত্য জীবনে নিঃসন্তান ছিলেন। স্বামী পরিতোষ পূজা অর্চনা নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন। রোববার রাতে তারা দু'জন আলাদা ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। পূজা করার জন্য স্বামী পরিতোষ কুমার মন্ডল রাত আনুমানিক ৩টার দিকে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলতে গেলে বাইরে থেকে ঘরের দরজা বন্ধ পান।
এই ঘরে ছিলেন সবিতা, সিঁধ কেটে ঢুকে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে ধারণা করছে পুলিশ ও স্থানীয়রা। ছবি: সময় সংবাদ |
এ সময় স্ত্রী সবিতার মুঠোফোনে বার বার ফোন করেও কোনো সাড়া পাননি। পরে প্রতিবেশীদের ফোন করে ডাকেন। বাহির থেকে দরজা খুলে দিলে পরিতোষসহ স্বজন ও প্রতিবেশীরা শিক্ষিকার ঘরে ঢুকে হাত-পা বাঁধা ও গলায় কাপড় পেঁচানো অবস্থায় সবিতার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে চিকিৎসক ডাকলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শিক্ষিকাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী পরিতোষ কুমার মন্ডল সময় সংবাদকে বলেন,
‘ঘরের মধ্যে সব জিনিস এলোমেলো অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পেছনের দিকে গিয়ে দেখতে পাই সিধঁকাটা। আমার স্ত্রীর পরনের গহনা (স্বর্ণের একটি বড় চেইন, দুটি হাতের বালা, একটি আংটি, কানের একজোড়া দুল) পাওয়া যায়নি। আমার সব শেষ হয়ে গেল। আর কেউ রইলো না আমার।’
এ দিকে নিহতের সহকর্মী ও এলাকাবাসী জানান, সদা হাস্যজ্জল ও মিষ্টভাষী ছিলেন সবিতা। এলাকার সবার কাছে তুমুল জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। ২০২৬ সালের আগস্টে অবসরে যাওয়ার কথা ছিল তার।
শিক্ষিকার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি স্বজন, সহকর্মী, কোমলমতি শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান বলেন, রাত পৌনে ৪ টার দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘটনা জানতে পারি। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
তিনি আরও বলেন, স্বামী পরিতোষের বক্তব্য অনুসারে স্বর্ণালংকার ও ল্যাপটপ পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর দুর্বৃত্তরা এসব নিয়ে পালিয়ে গেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। জেলা পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তাসহ পিবিআই ও সিআইডি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
অপরাধীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সূত্র: সময় নিউজ
0 মন্তব্যসমূহ