![]() |
চন্দ্রনাথ মন্দিরের প্রবেশদ্বার |
শতাব্দী প্রাচীন হিন্দু তীর্থ স্থান চন্দ্রনাথ মন্দির দখলের চেষ্টা।
✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️
বীর চট্টলার শতাব্দী প্রাচীন চন্দ্রনাথ মন্দির ঐতিহাসিক ভাবেই হিন্দুদের তীর্থভূমি। এর সুপ্রাচীন ইতিহাস ধর্মীয় স্থান হিসাবে এর পরিচিতি নুতন কিছু নয়। কিন্তু সে ইতিহাস আজ মুছে দিতে চায় জেহাদিরা।
হিন্দু ঐতিহ্যের লীলাভূমি চট্টগ্রামকে হিন্দু শূন্য করার প্রচেষ্টা বহুকাল থেকেই চলে এসেছে। কিন্তু প্রতিবারই চট্টগ্রামের হিন্দু সমাজ গর্জে উঠে প্রত্যাঘাত করেছে। চন্দ্রনাথ মন্দিরের ঐতিহ্য ধর্মীয় ভাবাবেগ অনুভূতি হিন্দু অস্তিত্বের ধ্বজা হিসেবে ইতিহাসে প্রতিষ্ঠিত। এ ইতিহাস মুছে যাওয়ার নয়। চট্টগ্রামের হিন্দুরা বরাবরই প্রতিবাদী। এখনো সেখানে হিন্দুদের বিভিন্ন উৎসবে লক্ষাধিক ধর্মপ্রান হিন্দুদের সমাবেশ হয় যা সারা দেশের হিন্দুদের একটি ভরসা। তাই চন্দ্রনাথ মন্দিরের এই দুর্দিনে চট্টলাবাসী নিজেদের অস্তিত্বের প্রশ্নে এগিয়ে আসবেন এটাই প্রত্যাশিত।
প্রশাসনিকভাবে এই সমস্যার সমাধান হবেনা। প্রতিবাদ প্রতিরোধ একমাত্র সমাধান। চন্দ্রনাথ পাহাড় আইনগত ভাবে দেবোত্তর সম্পত্তি। কিন্তু জেহাদিরা আযানের নামে চন্দ্রনাথ মন্দিরকে দখল করতে চায়। সারা পৃথিবীতে যত মঠ মন্দির প্যাগোডা বৌদ্ধবিহার রয়েছে তার দখল কায়েম করার পিছনে রয়েছে ইসলামের ইন্ধন। ইসলাম প্রতিষ্ঠার পর ভারত উপমহাদেশে মন্দির ধ্বংস করে মসজিদ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস সে কথাই প্রমান করে।
সীতাকুণ্ড অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। ধর্মগ্রন্থ ও ইতিহাস মতে এখানে মহামুনি ভার্গব বসবাস করতেন। অযোদ্ধার রাজা দশরথের পুত্র রামচন্দ্র তার বনবাসের সময় এখানে এসেছিলেন। তারা আসবেন জেনে মহামুনি ভার্গব সেখানে স্নানের জন্য ৩টি কুন্ড সৃষ্টি করেছিলেন। এরপর রামচন্দ্র ও সীতা সেই কুন্ডে স্নান করেন। এরপর থেকেই ঐস্থানের নামকরণ হয় সীতাকুন্ড নামে।
সীতাকুন্ডে চন্দ্রনাথ মন্দির ৫১শক্তিপীঠের এক পীঠ। এখানে সতী দেবীর দক্ষিণ হস্ত পতিত হয়েছিল। শক্তিপীঠ হিন্দুধর্মের পবিত্রতম তীর্থস্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে শক্তিপীঠ নামাঙ্কিত তীর্থস্থানগুলোতে দেবীর দাক্ষায়ণী সতীর দেহের নানান অঙ্গ প্রস্তুরীভূত অবস্থায় রক্ষিত আছে এবং প্রস্তুরীভূত প্রতিটি স্থানই একেকটি তীর্থক্ষেত্রে পরিনত হয়েছে।
সতীর দেহ কেন ছিন্নভিন্ন হয়ে ৫১খন্ডে বিভক্ত হয়ে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে পড়েছিল তার ধর্মীয় ব্যাখ্যা হল। সতী দেবী পিতা দক্ষরাজার ইচ্ছার বিরুদ্ধে মহাদেবকে বিবাহ করেছিলেন। সত্যযুগে কোন এক সময় মহাদেবের উপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য দক্ষরাজা এক যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। সেই যজ্ঞে রাজকন্যা সতীদেবী এবং তার বর মহাদেবকে ছাড়া প্রায় সকল দেব-দেবীকে রাজা নিমন্ত্রন করেছিলেন। মহাদেবের অনিচ্ছা সত্বেও সতী মহাদেবের অনুসারীদের সাথে নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন।
কিন্তু সতীদেবী আমন্ত্রিত অতিথি না হওয়ায় তাকে যথাযোগ্য সম্মান দেয়া হয়নি এবং অনুষ্ঠানে রাজা মহাদেবকে অপমান করেন। সতীদেবী স্বামীর অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মাহুতি দেন। এতে মহাদেব অতীব রাগান্বিত হয়ে দক্ষরাজার যজ্ঞ ভন্ডুল করেন এবং সতীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রলয় নৃত্য শুরু করেন। এতে স্বর্গমর্ত্য প্রকম্পিত হতে থাকে। স্বর্গের দেবতারা শংকিত হয়ে মহাদেবের প্রলয় নৃত্য থামানোর অনুরোধ করেন। শেষপর্যন্ত উপায়ন্তর না দেখে বিষ্ণুদেব তার সুদর্শন চক্র দ্বারা সতীদেবীর দেহ ছেদন করেন। এতে সতীমাতার দেহখন্ড সমূহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পতিত হয় এবং পীঠস্থান শক্তিপীঠ হিসাবে পরিচিতি পায়।
চন্দ্রনাথ মন্দিরও সেইরূপ একটি তীর্থস্থান। প্রতিবছর শিবচতুর্দশী তিথিতে এখানে মেলা বসে। তখন সারা পৃথিবী থেকে অগনিত সাধুসন্ত পুন্যার্থীরা চন্দ্রনাথ মন্দিরে দর্শনে আসেন। হিন্দু ধর্মের এই পরম্পরাকে বিনস্ট করার উদ্দেশ্য নিয়ে সেখানে আযানের নামে ভীতি সঞ্চার করে বছর খানেক আগে একটি মসজিদ নির্মানের অপচেষ্টা হয়েছিল কিন্তু জাগ্রত সনাতনীদের প্রতিরোধের মুখে জেহাদিরা পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছিল।
এবারো ধর্মান্ধতা পরাজিত হবে জাগ্রত হবে হিন্দুদের অস্তিত্বের লড়াই। সারা পৃথিবীর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা চট্টগ্রামের পাশে আছে। ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দু পুনর্জাগরন শুরু হয়েছে। কলকাতায় লক্ষকন্ঠে গীতাপাঠ তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তাই চন্দ্রনাথ মন্দিরের পুনর্জাগরনে সারা পৃথিবীর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সব ধরনের সাহায্য নিয়ে চট্টগ্রামের পাশে আছে।
সূত্র: ফেসবুক
0 মন্তব্যসমূহ