ফুলবাড়ীতে প্রতিমা ভাঙচুরের পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজ্জাদ হোসেনসহ উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আজ দুপুরে উপজেলার রায়পাড়া গ্রামে, ছবি: প্রথম আলো |
সংবাদদাতা, কুড়িগ্রাম, প্রকাশ: ০২ মে ২০২৩, ১৯: ৪৯
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় চারটি পারিবারিক মন্দিরে ঢুকে আটটি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতের কোনো একসময় উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোরকমণ্ডল সীমান্তের রায়পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
রায়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা বীরেন চন্দ্র বর্মণ জানান, তাঁর বাড়ির উঠানে রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে তিন যুগ ধরে গ্রামের সবাই পূজা-অর্চনা করে আসছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় তাঁরা মন্দিরে প্রার্থনা করেন। আজ সকালে মন্দিরে এসে দেখতে পান, মন্দিরের ভেতরে প্রতিমাগুলো কেউ ভেঙে রেখে গেছে। আগে কোনো দিন তাঁদের গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি দাবি করেন। তাঁদের ধারণা, আজ ভোররাতের দিকে দুর্বৃত্তরা প্রতিমাগুলো ভাঙচুর করেছে।
রায়পাড়া গ্রামের ভবেশ চন্দ্র বর্মণ ও ধীরেন্দ্র নাথ বর্মণ বলেন,
একই রাতে চারটি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কিত। এ ঘটনায় তাঁরা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করলে মামলা নেওয়া হবে।
ঘটনার পর আজ দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজ্জাদ হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন দাস, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা, গোরকমণ্ডল ক্যাম্পের বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ভাঙচুর করা প্রতিমা, ছবি: প্রথম আলো |
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অনিল চন্দ্র রায় বলেন,
ভোটের আগে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তরা মন্দিরে হামলা করে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে তারা আবার এমন অপরাধ করার সাহস দেখাবে।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাছেন আলী বলেন,
সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে সংঘবদ্ধ চক্রটি মন্দিরে হামলা করে আতঙ্ক তৈরির অপচেষ্টা করছে। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা অবশ্যই সরকারবিরোধী লোক।
কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজ্জাদ হোসেন বলেন,
তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ।
ইউএনও সুমন দাস বলেন, সনাতন সম্প্রদায়কে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
সূত্র: প্রথম আলো
0 মন্তব্যসমূহ