উপবাস কি জিনিস? আমরা কেন উপবাস রাখি? উপবাস কাহাকে বলে? এর সংজ্ঞা কী?

উপবাস কি জিনিস? আমরা কেন উপবাস রাখি? উপবাস কাহাকে বলে? এর সংজ্ঞা কী?

মাঝে মধ্যে মুসলিমদের কাছ থেকে শুনতে হয় উপবাস কী জিনিস? সনাতন ধর্মাবলম্বীরা কেন উপবাস রাখে? অনেকে উপবাস থাকা অবস্থায় ফলমূল খায়। উপবাস কি খাওয়া দাওয়া করে করা যায়? যদি যায় তাহলে উপবাসের মর্যাদা বা মর্ম কীসের? এই ধরণের প্রশ্ন নিয়ে কয়েকজন প্রাজ্ঞ ব্যক্তির সামনে উপস্থিত হলে তারা নিচের উত্তরগুলো প্রদান করেন। আশা করি প্রশ্নকারীরা উপবাস কী জিনিস, খাওয়া না খাওয়া বা অনশন করার সাথে এর সম্পর্ক কী, তা সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে বুঝতে পারবেন।


**********


মানুষ যখন কোনো ব্রত পালন করে তখন সেটা সর্বোচ্চ সংযমের সাথে, শুদ্ধতার সাথে পালন করার চেষ্টা করে। আমরা আমাদের জন্মদিবস পালনের সময় যেরূপ বিশেষভাবে পরিপাটি হই, বিশেষ আহারের ব্যবস্থা করি, সেইরূপ ভগবানের জন্মদিবস উপলক্ষ্যে বিশেষভাবে সংযম করে তার জ্ঞানকে ধারণ করার চেষ্টা করি। এই যে সংযম, অর্থাৎ নিজের অন্তকরণ শুদ্ধ রাখার চেষ্টা, সেটি বিবেচনা করেই উপবাস থাকা হয়। এখানে জোর-জবরদস্তির কিছু নেই। বরং এই সংযমটাই আনন্দের সাথে গ্রহণ করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্মৃতি এবং পুরাণাদিতে উপবাসের উল্লেখ আছে।


যেমন: গরুড় পুরাণ: পূর্ব খন্ড/১৩১/৩; গৌতমীয় তন্ত্র: ৩৩/১৩০-১৩৩; হরিভক্তিবিলাস: ১৫ ইত্যাদি।


**********


সনাতন ধর্মের মূল তত্ত্বই সংযম এবং ত্যাগ। সংযম, ত্যাগ, করুণা, প্রেম এগুলোর মধ্যে যে অসীম শান্তি/আনন্দ নিহিত আছে আমরা দু-এক দিন উপবাস করে সেটা লাভ করার চেষ্টা না করে বরং ভোগ থেকে বিরত থাকার কষ্ট অনুভব করি। আমরা শান্তি বা আনন্দ শুধু ভোগে খুজি। কিন্তু আমরা এটা ভুলে যাই যে, ভোগে তো শুধু ভোগ্য দ্রব্যের তৃপ্তিই পাওয়া যায়। চিরন্তন আনন্দ/শান্তি তো নিজের মধ্যেই খুজতে হয় কোন রকম বাহ্যিক দ্রব্যাদির সাহায্য না নিয়েই।


**********


ঈশ্বর সন্তুষ্ট হন সংযম, শুচিতা, অহিংসা, মৈত্রী, জ্ঞান, করুণা সহ বিভিন্ন কল্যানকর ব্রতে, কারন তিনি নিজে ধর্মধ্বজ , ধর্মরক্ষক, সমস্ত শুভশক্তির পুঞ্জীভূত রূপ।


তাই যেকোন পূজোর দিন শুদ্ধবস্ত্রে, শুদ্ধচিত্তে , আহারসংযম করে তাঁর উপাসনা করা হয় ;


**********

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ