নতুন বছরের একদম শুরুতে দুজন হিন্দু বোন তাদের গল্প শেয়ার করলো, গল্প না বলে বরং অভিজ্ঞতা বলি। তাদের অভিজ্ঞতা গুলোর ধরণ ‘নতুন’ না, তবে একটু আলাদা তো বটেই। দুজনের অভিজ্ঞতা প্রায় কাছাকাছি, তাই আমি দুটো অভিজ্ঞতাকে পাঞ্চ করে লিখছি। কি সেই অভিজ্ঞতা?
ইউনিভার্সিটি গিয়ে পরিচয় আ'ব্দুল বা রাকিবুলের সাথে। ক্রমে পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব বা বন্ধুত্বের থেকে হয়তো একটু বেশি। আ'ব্দুল বা রাকিবুল সমাজের একটু উঁচু স্তরের মুসলিম তারা আর পাঁচজনের মতো ইসলাম এর দাওয়াত দেয়নি, বা জোরও করেনি যে, চলো বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করি। মডারেট মুসলিম তো, “বুদ্ধি করে দারুন একটা প্রস্তাব” দিয়েছে। কি সেই প্রস্তাব?
“চলো, আমরা দুজনে যে যার মতো কানাডা-আমেরিকা বা ইংল্যান্ড পড়তে যাই। তারপর ওখানে গিয়ে আমরা এক সাথে থাকি, বিয়ে করি। তাহলে তো তোমার ধর্ম চে'ঞ্জ করে মুস'লি'ম হতে হচ্ছে না, তুমি তোমার মতো হিন্দু থাকলে আর আমি আমার মতো মুসলিম। যেহেতু আমরা দেশ থেকে দুজনেই অনেক দূরে থাকবো তাই পরিবার বা সমাজ আমাদের উপর অহেতুক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারবে না। আবার জা'মাই-মেয়ে দুজনেই ওয়েল সেটলড হলে দুই পরিবারই (পড়ুন এক পরিবার, হিন্দু পরিবার) এক সময় মেনে নেবে। আর বাইরের দেশে কেউ তো ধর্ম মানে না বা ধর্ম নিয়ে মাথা ঘামায় না। আমরা ধর্মহীন সমাজে সুখে থাকবো।” উত্তম প্রস্তাব না?
তবে আমি বলবো, বিভিন্ন সনাতনী গ্রুপের মাধ্যমে আমাদের বোনেরা aware হচ্ছে, বাস্তব সম্পর্কে বুঝতে শিখছে, বিভিন্ন পোস্ট তথা অভিজ্ঞতা পড়ে ম'ডারেট-সুশীল মু'সলিমের খারাপ অভিপ্রায় ধরতে শিখছে। তারা প্রশ্ন করেছে, বাচ্চা হলে কি নাম রাখা হবে? সালমা না কি রাধিকা? গোরুর মাংস কি মেনু থেকে বাদ যাবে বা রাঁধতে হবে না তো? অবন্তিকা মুখার্জী সরিয়ে যে অবন্তিকা “খাতুন” লিখতে হবে না তার গ্যারান্টি কে দেবে? শাড়ী ছেড়ে বোরখা পরতে হবে না-এমন নিশ্চয়তা পৃথিবীর কোনো মুসলিম দেবার ক্ষমতা আদৌ রাখে কি?
দুজনেই পত্র-পাঠ অসৎ এবং “নতুন” এই অভিসন্ধিকে REJECT করেছে। হ্যাঁ, এটাও একটা নতুন ধরণের লাভ জিহাদ তথা মরণ ফাঁদ, তবে এটা অনেক ক্ল্যাসিক। এই ফাঁদ গুলো এতটাই বুদ্ধিমত্তার সাথে তৈরী করা হয়েছে যাতে করে আমাদের হিন্দু ছেলে-মেয়েরা বোকা হয়। চারপাশে শুধু একটু খোঁজ নিন, এমন বহু কেস দেখতে বা শুনতে পাবেন। এই ঘটনা গুলো বেশিরভাগ ঘটেছে একটু উচ্চ বা মধ্যবিত্ত তথা শিক্ষিতদের মধ্যে, কতটা নোংরা অভিসন্ধি শুধু ভাবতে থাকুন।
আমাদের সকলের উচিত এই প্যাটার্ন সম্পর্কেও বাড়িতে ছেলে-মেয়ের সাথে আলোচনা করা এবং তাদের সতর্ক করা। এই ট্রাপ কিন্তু অনেকের ক্ষতি করেছে, করছে এবং আগামীতেও করবে। তাই এই খারাপ অভিসন্ধি নিয়েও সুস্থ আলোচনা হোক, এবং সাধারণ হিন্দুরা ম'ডারেট মুস'লি'মদের উদ্দেশ্য বুঝতে শিখুক। একটা বাংলা প্রবাদ আছে, ঢেঁকি কিন্তু স্বর্গে গেলেও ধান ভাঙে বা রসুনের কোয়া বত্রিশটা হলেও * একটা। আসলে আমরা ঘর পোড়া গোরু তো তাই সিঁদুরে মেঘ দেখলেই বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। সাবধান আমার প্রিয় হিন্দু ভাই-বোন। নমস্কার।।
@ Subhasish
1 মন্তব্যসমূহ
কথা সত্যি। প্রথম আলোতে প্রকাশিত এই গল্পটা পড়ুন, যদিও দুজনই মুসলমান। তবুও ঘটনা কিন্তু টার্গেট করে করা। লিংক https://www.prothomalo.com/lifestyle/e1o17nvpjq
উত্তরমুছুন-------==-=-=-=-------
নাজিফা আর রাফসান আজও জানে না ওদের প্রেমটা কীভাবে শুরু হয়েছিল
লেখা: শফিকুল ইসলাম, মস্কো, রাশিয়া
আঁকা: এস এম রাকিবুর রহমান
প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০: ৩০
মেসেজের শব্দে ফোনটা বেজে উঠল। তাকিয়ে দেখি নাজিফা রিপ্লাই দিয়েছে: ‘তোদের দোয়ায় ভালো আছি আমরা। রাফসানের সঙ্গে খারাপ থাকা সম্ভব না!’
নাজিফার উত্তর পড়ে মনে পড়ে গেল বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের সেদিনের কথা। স্যার আসতে বেশ দেরি করছিলেন। সবাই আড্ডায় মত্ত। আমার মাথায় দুষ্টুমি চাপল। ফামিনের সঙ্গে এসব বিষয়ে আমার আবার ভালো জমে। তাই ফামিনকে ডেকে বললাম, ‘আয় একটু মজা নিই।’
—কী বল?
ফামিনকে একটু আড়ালে নিয়ে আস্তে আস্তে আমার পরিকল্পনার কথা বললাম। পরিকল্পনা বলতে আমি নাজিফাকে ডেকে নিয়ে বলব, ‘রাফসান আমাকে বলছে, তোর অনেক কিছুই নাকি তার ভালো লাগে। সে তোকে পছন্দও করে, কিন্তু বলতে পারে না। তোর সঙ্গে একটু কথা বলতে চায়, কিন্তু পারছে না।’
একই কথা একটু ঘুরিয়ে রাফসানকে বলবে ফামিন। শুধু যোগ করবে, অবসরে যেন সে নাজিফাকে মেসেজ পাঠায়।
এ কথা শুনেই ফামিন বলল, ‘তুই কি পাগল, মাথা ঠিক আছে?’ তার হাসি থামছেই না। ‘রাফসানের মতো ভদ্র ছেলে কি এটা মেনে নেবে?’
আমি বললাম, ‘দুইটাই একরকমের আছে। সমস্যা নেই।’
যে কথা সেই কাজ। ফামিন রাফসানের কাছে আর আমি নাজিফার কাছে চলে গেলাম।
আমার কথা শুনে নাজিফা বলল, ‘ও কি সত্যিই বলছে...না না আমার পক্ষে সম্ভব না।’ নাজিফা লজ্জায় লাল হয়ে গেল।
আমি বললাম, ‘এত আশা করে বলল ছেলেটা, তুই কিন্তু মেসেজের রিপ্লাই দিস। আর যা বলার তুই নিজেই তাকে বলিস। আবার আমার কথা কিন্তু বলিস না রাফসানকে, প্লিজ।’
খেয়াল করে দেখলাম, ওয়াশরুমের দিকটায় রাফসানকে একইভাবে বোঝাচ্ছে ফামিন।
সেই ঘটনার পর অনেক দিন কেটে গেল। এ নিয়ে আমাদের আর কোনো কথাও হলো না। তবে নাজিফা-রাফসানের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ করি। পড়ালেখা, গ্রুপ স্টাডি, ল্যাবের কাজে পাশাপাশি থাকে তারা, আলাদা সময় কাটায়।
একসময় গ্র্যাজুয়েশন শেষ হলো। বন্ধুদের কেউ কেউ চাকরিতে ঢুকে গেল। উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গেল কয়েকজন। আমি নিজেও বাইরে চলে এলাম। বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ কমে যেতে থাকল। দিনে দিনে অনেকে বিয়ের পিঁড়িতে বসল। এমনই একদিন হোয়াটসঅ্যাপে ফামিনের কল, ‘এই জানিস, নাজিফা আর রাফসানের বিয়ে হয়ে গেছে।’
শুনে আমি খুব একটা অবাক হলাম না; বরং ভালো লাগা কাজ করল, যাক দুজন মানুষকে এক করার নেপথ্যে আমারও ভূমিকা আছে!
এ কথা বলতেই নাফিজাকে টেক্সট করেছিলাম, ‘দিনকাল কেমন যাচ্ছে রে? কেমন আছিস তোরা?’
-------=-=-=-==-------