ধর্মান্তরিত মেয়েকে মায়ের ত্যাজ্য ঘোষণা

ধর্মান্তরিত মেয়েকে মায়ের ত্যাজ্য ঘোষণার দলিল


ধর্মান্তরিত মেয়েকে মায়ের ত্যাজ্য ঘোষণার দলিল


ধর্মান্তরিত মেয়েকে মায়ের ত্যাজ্য ঘোষণার দলিল




"ধর্ম কে ভালোবেসে নয়; শুধুমাত্র ‌জিহাদী প্রেমিকের প্রলোভনের ফাঁ‌দে পরে বিধবা অসহায় মাকে একা ফেলে গৃহত্যাগ ও বিয়ে ক‌রে‌ ধর্মান্ত‌রিত হ‌য়ে‌ছে ইসলামী বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের ঐ ছাত্রী। কু-সন্তান কন‌্যা‌কে ত‌্যাজ‌্য ক‌রে সক‌লের প্রতি মা‌য়ের বক্ত‌ব্যের প্রতি‌বেদন-


"আমি বন্ধনা দত্ত, স্বামী-মৃত শ্যামল দত্ত চুয়াডাঙা জেলার আলমডাঙা উপজেলার স্থায়ী নিবাসী। আমি একজন হতভাগী নারী যার জীবনে বেঁচে থাকার অবলম্বন বলতে এখন আর কিছুই নেই।  আমার প্রথম স্বামী স্ট্রোক করে মারা যায় যখন আমার একমাত্র মেয়ে সুপ্রীতি দত্ত তমার বয়স মাত্র দুই বছর। মেয়ের ইচ্ছা অনুযায়ী মেয়ের বাবার অভাব পূরণ করতে ২য় বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। মেয়ের কথা ভেবে ২য় সন্তান নেওয়ার  কথা ভাবিনি।


এক মেয়ে এবং স্বামী নিয়ে খুব সুখের সংসার ছিল আমার। কিন্ত সুখ আমার কপালে বেশিদিন সইলো না। স্বামী ক্যান্সার আক্রান্ত হলেন। আমার ভাইদের সাহায্যে ভেলোরে গিয়ে দীর্ঘ দিন চিকিৎসা করাই। কিন্তু আমার স্বামীকে বাঁচাতে পারিনি। 


দুই দুই বার স্বামী হারিয়ে বেঁচে থাকার আশা হয়তো ছেড়েই দিতাম যদি না আমার মেয়েটা থাকতো। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে নতুন করে আবার বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখা শুরু করলাম। ভাইদের সহযোগিতায় আমার স্বামীর রেখে যাওয়া দোকানটা নতুন করে চালু করলাম। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে টুকটাক করে আমি টাকা উপার্জন করেছি মেয়েকে মানুষ করার জন্য।


তমা খুব মেধাবী ছাত্রী ছিল। ও ছিল আমার এবং আমার ভাইদের গর্ব। খুব স্বপ্ন ছিল মেয়ে বড় হয়ে একজন বড় সরকারী অফিসার হবে আর আমাকে সবাই বলবে আমি একজন সফল জননী যিনি স্বামী হারিয়েও বুকে পাথর চেপে মেয়েকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। মেয়ে ইবিতে অর্থনীতিতে ভর্তি হল। মেয়েকে বাবা আর মায়ের ভালোবাসা দিয়ে মানুষ করার চেষ্টা করেছি। বাবার অভাব বুঝতে দেইনি। শুধু আমি না; ওর মামার বাড়ির প্রত্যেকে খুব ভালোবাসতো ওকে। এত ভালোবাসা খুব কম মেয়েই পেয়ে থাকে। 

নিজে কষ্ট করলেও কোনোদিন তমাকে কোন অভাব বুঝতে দেইনি।  দেখতে দেখতে মেয়ের পড়ালেখা শেষের দিকে চলে এলো। মেয়ে আমার ফাইনাল ইয়ারে উঠে গেল। খুব আনন্দ হতো এই ভেবে যে আমার তমা স্বপ্ন পূরণের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে।  


 গত ১৮/১০/২০২২ তারিখ মঙ্গলবার সকালে তমা আমাকে কল দিয়ে জানায় বাড়ি আসবে। কিন্ত সময়মত বাড়ি না আসায় আমি বেশ ভয় পেয়ে যাই এবং আমার ভাইয়ের পরামর্শ অনুযায়ী থানায় জিডি করি। হঠাৎ করে তমা আমাকে কল দিয়ে জানায় সে মুসাফ নামের একজনকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে।   পরদিন ফেসবুকে দেখতে পাই আমার মেয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছে এবং এই সংবাদ ভাইরাল হয়েছে। আমি একটা বিরাট ধাক্কা খাই। 


   আপনারা আসলে বিভ্রান্ত হচ্ছেন।  বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দেখলাম ইসলামি ওয়াজ শুনে আর মুসলিম বন্ধুদের সাথে মিশে ইসলাম ধর্মকে ভালোবেসে সে  ধর্মান্তরিত হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ ভুল। ধর্ম পালন করা অত সহজ ব্যাপার নয়। শুধুমাত্র মুসলমান সমাজের sympathy আদায় করার জন্য এটা একটা সাজানো নাটক। ৮ বছর ধরে সে যদি ইসলাম ধর্ম পালন করে থাকে তাহলে কিছুদিন আগে লক্ষ্মী পূজাতে সারাদিন উপোস করে পাচালি পড়ে পূজা দিত না; প্রতি সন্ধ্যায় পূজা করতো না; দূর্গা পূজার অঞ্জলি দিতো না। তমা আসলে ইসলাম ধর্মকে কখনোই ভালোবাসেনি। যে তার মাকেই ভালোবাসার নাটক করেছে; দিনের পর দিন মন দিয়ে পূজা অর্চণা করেছে সে কিভাবে একটা ধর্মকে ভালোবাসবে? শুধুমাত্র একটা ছেলের জন্য হতভাগী এই মাকে নিঃস্ব করে দিয়ে সে চলে গেছে। 


আমার মেয়ে ছিল আমার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। সেই অবলম্বন আজকে আর আমার নেই। সারা দেশবাসীর কাছে আমার প্রশ্ন আমি কি আমার মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে ভুল করেছি? আমার মেয়েকে অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করে আমি কি ভুল করেছি?


 আমার ভাই বোনদের সম্মতিতে সুস্থ মস্তিষ্কে আজ থেকে আমার মেয়ের পরিচয় আমি মুছে দিলাম। আমি আদালত সহ সারা দুনিয়ার সামনে সুপ্রীতি দত্ত তমাকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলাম।"


Collected

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ