নড়াইলে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত: আওয়ামী লীগ নেতাকে অব্যাহতি

নড়াইলে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত: আওয়ামী লীগ নেতাকে অব্যাহতি
মো. আকতার হোসেন

নড়াইলে অধ্যক্ষ লাঞ্ছিত: আওয়ামী লীগ নেতাকে অব্যাহতি

  নড়াইল প্রতিনিধি,  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম


Published: 01 Jul 2022 09:57 PM BdST Updated: 01 Jul 2022 10:07 PM BdST


নড়াইলে কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় সহকারী অধ্যাপক মো. আকতার হোসেনকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।


আকতার হোসেন সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।


উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অচিন কুমার চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত নোটিশে এই আদেশ দেওয়া হয়।


ধর্ম অবমাননা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৭ জুন সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরানো হয়। সে সময় আওয়ামী লীগ নেতা আকতার হোসেন সেখানে ছিলেন।


নোটিশে বলা হয়েছে, 


“আপনি উক্ত কলেজের একজন শিক্ষক ও ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আপনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরিশেষে দেখা যায়, আপনার উপস্থিতিতে উক্ত কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জুতার মালা পরিয়ে বের করে আনা হয়, যা নিন্দনীয়। শিক্ষক সমাজকে হেয়প্রতিপন্ন করার শামিল।


“বিভিন্ন প্রকার পত্র-পত্রিকায় ও মিডিয়ায় আপনাকে জড়িয়ে সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে, যার দায় আপনি এড়াতে পারেন না। আমরা মনে করি সভাপতি হিসেবে আপনি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।”


আকতার হোসেনের পরিবর্তে সহ-সভাপতি মশিয়ার রহমানকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে নোটিশে।


এদিকে জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে আগামী শনিবার দিন ঠিক করা হয়েছে, জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুবায়ের হোসেন চৌধুরী।


স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ১৭ জুন সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্র ভারতের বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়ার পরদিন কলেজে গেলে কিছু মুসলমান ছাত্র তাকে ওই পোস্ট মুছে ফেলতে বলেন।


এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস পুলিশে খবর দেন। এরই মধ্যে ‘অধ্যক্ষ ওই ছাত্রের পক্ষ নিয়েছেন’ এমন কথা রটানো হলে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। অধ্যক্ষ ও দুজন শিক্ষকের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদেরও সংঘর্ষ বাধে।


সে সময় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে কলেজের ছাত্র ও স্থানীয়রা স্বপন কুমারের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়।


তখন পুলিশ ওই ছাত্রের সঙ্গে অধ্যক্ষকেও থানায় নিয়ে যায়। তবে অধ্যক্ষকে আটক করা হয়নি বলে জানান নড়াইল সদর থানার ওসি মোহাম্মদ শওকত কবীর।


এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শেখ মোরছালিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ১৭০ থেকে ১৮০ জনকে আসামি করে নড়াইল থানায় মামলা করেন।


মামলা করার পর সোমবার রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলেন মির্জাপুরের সৈয়দ রিমন আলী, মির্জাপুর বাজারের মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী শাওন খান ও মধ্যপাড়ার মো. মনিরুল ইসলাম।


bangla.bdnews24

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ