একটা প্রশ্ন করতে চাই আপনাদেরকে। তার আগে প্রশ্নটার প্রেক্ষাপট বলে নিই।
বাংলাদেশের দণ্ডবিধিতে ধর্ম ও ধর্মীয় অনুভূতি সংক্রান্ত বেশ কয়েকটা অপরাধের বিধান করা আছে। সেগুলির মধ্যে একটা হচ্ছে, দণ্ডবিধির ২৯৫ ধারা। এই ধারায় বলা আছে যদি কেউ কোন বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষে ধর্মের অবমাননা করার উদ্দেশ্যে ওদের কোন উপাসনাগার ধ্বংস বা বিনষ্ট করে বা সেখানে রক্ষিত কোন ধর্মের বা সম্প্রদায়ের লোক পবিত্র মনে করে এমন কোন বস্তু ধ্বংস বা বিনষ্ট করে তাইলে সেই ব্যক্তিকে দুই বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা বা দুইই শাস্তি দেওয়া হবে। এটা হচ্ছে বাংলাদেশের আইন।
আর এই আইন প্রয়োগের মতো ঘটনা কি? খবরের কাগজে দেখবেন বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় লোকেরা হিন্দুদের মন্দির ও মণ্ডপে হামলা করে প্রায়ই মন্দির বা মূর্তি অথবা দুইই বিনষ্ট করে। বিশেষ করে শরৎকালে এইরকম মূর্তি ভাঙার সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। যারা মন্দির ও মূর্তি ভাঙে, ওরা যে হিন্দু না এবং ওরা যে হিন্দু ধর্মকে আঘাত করার জন্যেই যে এসব করে সেটাও একরকম স্পষ্ট। এইরকম প্রতিটা ঘটনায়ই এই আইনে কারো না কারো শাস্তি হওয়ার কথা। দণ্ডবিধির এই ধারাটা ছাড়াও পেনাল কোডে অন্যান্য বিধানও আছে যেগুলি এইসব ঘটনায় প্রযোজ্য হতে পারে- সেগুলি কথা না হয় আলোচনা নাই করলাম।
এইবার প্রশ্নটা।
বলুন তো, আপনার জীবনে আপনি আপনি বাংলাদেশের কোন আদালতে মন্দির বা মূর্তি ভাঙার জন্যে বাংলাদেশের কোন আদালতে কখনো কারো সাজা হতে দেখেছেন? আপনার বয়স যদি কম হয়ে থাকে, তাইলে আপনার পিতামাতাকে জিজ্ঞাসা করে দেখুন তো, ওরা এইরকম কোন মামলায় কারো সাজা হতে দেখেছেন?
আমার উত্তরটা দিয়ে দিই, আমার বয়স পঞ্চাশ পার হয়েছে অনেক দিন হয়ে গেছে, আমি কখনো মূর্তি বা মন্দির ভাঙার জন্যে কাউকে সাজা পেতে দেখিনি বা সাজার খবরও দেখিনি। (না, কোথাও সাজা হয়েও থাকতে পারে, হয়তো আমরা জানিনা।) আপনি আপনার উত্তরটা দিবেন। না, আমাকে দেওয়ার দরকার নাই- নিজেই নিজের কাছে উত্তর দিন। ভাল থাকবেন। শরতের শুভেচ্ছা।
0 মন্তব্যসমূহ