বিবেক জাগ্রত হোক! - রিতা রায় মিঠু

 

মাণিকগঞ্জে ধ্বংসপ্রাপ্ত দুর্গা প্রতিমা আগস্ট ২০২২

মাণিকগঞ্জে ধ্বংসপ্রাপ্ত দুর্গা প্রতিমা আগস্ট ২০২২

মাণিকগঞ্জে ধ্বংসপ্রাপ্ত দুর্গা প্রতিমা আগস্ট ২০২২


২৭ আগস্ট ২০২২


মাণিকগঞ্জে অলরেডি কাঁচামাটির দুর্গা প্রতিমা কে বা কারা  ভাঙচুর করে ফেলেছে! নিশ্চয়ই তারা কুমিল্লার ইকবালের মতো মানসিক ভারসাম্যহীন অথবা দুষ্কৃতকারী!

মাণিকগঞ্জের ছেলে সজল কর্মকার ভাঙা মূর্তির ছবি আমায় পাঠিয়েছে। এটা শুরু।


নিশ্চয়ই এরপর আরও মূর্তি ভাঙচুর হবে, আমরা হয় চুপ থাকবো নয়তো ভাঙা মূর্তির ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে আবহাওয়া গরম করবো।


আবহাওয়া গরম থাকতে থাকতেই  পূজা শুরু হবে। পাঁচ দিন ব্যাপী পূজো, হাতে পাঁচ দিন সময় পাবে ইকবালের মতো মানসিক ভারসাম্যহীনেরা।


প্রতিদিন কোথাও না কোথাও প্রতিমা ভাঙচুর হবে। 


এমনও হতে পারে, ভোর রাতে পুলিশি পাহারার মধ্যেই ইকবালেরা মসজিদ থেকে পবিত্র কোরআন শরীফ তুলে এনে অসুরের কোলে বসিয়ে দিয়ে পাড়া রটিয়ে দিবে,  পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননা হয়েছে বলে।


সাথে সাথে এলাকার মেম্বার, এলাকার এমপির সেক্রেটারি চলে আসবেন মন্ডপে, তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা দেয়া হবে Ji-ha-der! 

দলে দলে ছুটে আসবে ধার্মিক জনতা। আরেকটি কুমিল্লা সৃষ্টি হবে। প্রাণ যাবে নতুন নতুন মানুষের, ধর্ম অবমাননার লেলিহান আগুনে পুড়বে আরও মন্ডপ!

চুন খেয়ে মুখ পুড়লে দই দেখে ভয় করে!


আমার আজকাল দুর্গাপূজা এগিয়ে এলেই আনন্দের পরিবর্তে ভয় লাগে!


তাই বলি, প্রতিমা ভাঙচুরের ছবি আমায় কেউ দিও না। আমি ভয় পাই।


প্রতি বছর বাংলাদেশে দুর্গাপূজার সময় ইকবালদের মানসিক সমস্যা বেড়ে যায়, সারাদেশে ইকবালরা জেগে ওঠে।


প্রতিমার দেহ মাটিতে লুটায়, যতন সাহার দেহ মাটিতে লুটায়, শান্তর দেহ পুকুরে ভেসে ওঠে,

সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে বিচার হয় না ইকবালদের, অথবা মানসিক ভারসাম্যহীনতার সার্টিফিকেট নিয়ে ইকবালরা বেঁচে যায়।


আগেও আমি লিখেছি, নিজের দেশে যদি সবাইকে নিয়ে  স্বাধীনভাবে দুর্গাপূজা উদযাপন না করতে পারেন, পুলিশি পাহারায় দুর্গাপূজা করতে হয়, সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকতে হয় কখন কোথা দিয়ে ইকবালরা মন্ডপে ঢুকে প্রতিমার কোলে কোরআন শরীফ রেখে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধিয়ে দেয়, অথবা ভয়ে থাকতে হয় অষ্টমীর সকালে মন্ডপে গিয়ে প্রতিমা আস্ত দেখবো না-কি মাথা ভাঙা দেখবো, 

এত হেলা অশ্রদ্ধা অপমান বুকে নিয়ে প্রতিমা দিয়ে দুর্গাপূজা করা কেন?


এক বছর অন্তত ঘট পূজা করুন।


গত বছর দুর্গাপূজার সময় সারা দেশে হিন্দুদের জীবনে যে ঝড় বয়ে গেছে, তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে দুর্গাপূজা করাই উচিত নয়।


গত বছর ইকবালদের হাতে যতগুলো নিরপরাধ প্রাণ হারিয়ে গেছে, তাদের সম্মানেই নাহয় এই বছর ঘট পূজা করুন।


লাঠি দিয়ে প্রতিরোধ করার সামর্থ্য নেই, তাই বলে আত্মসমর্পণ করার তো কোনো মানে নেই।


ভিক্ষার অন্নে পোলাও না খেয়ে, আত্মসম্মান নিয়ে নিজ ঘরে খুদের জাউ খাওয়া শ্রেয় বলে মনে করি।


জয় মা দুর্গা, দুর্গতিনাশিনী।  তুমি সকলের বিবেক জাগ্রত করো।


‌https://www.facebook.com/ritaroymithu/posts/pfbid02M3mFitXwUy7J9KWbWwaCko1HK7UTdcciaVTiCoHd6oQKXveGcCefQGZSMCZm6wzql


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ