একসাথে থাকতে চাই,একসাথে বাঁচতে চাই একটু সম্মানের সাথে

নড়াইলে হিন্দুদের উপর মুসলমানদের হামলা প্রসঙ্গে হ্যামলেট সাহা ঢাকা প্রেসক্লাবে বক্তব্য দিচ্ছে

               হ্যামলেট সাহা

            নড়াইল লোহাগড়া। 

✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍✍️


হিন্দুদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ৪৮ ঘন্টা পরও নড়াইল থমথমে। গ্রামে কোন মহিলা নেই ভয়ে সবাই কেউ বাপের বাড়ি কেউ খুলনা চলে গিয়েছে। গ্রামে পুলিশ পাহাড়া তার মধ্যেই গোয়াল ঘর থেকে গরু নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ নীরব দর্শক। সন্ত্রাস পীড়িত সাহা পাড়ার এক শিক্ষিত যুবক হ্যামলেট সাহা ঢাকায় এসে প্রেসক্লাবের সামনে এক মানব বন্ধনে দাড়িয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে সন্ত্রাসের ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে বলছিলেন, যাদের সাথে একসাথে বড় হয়েছি একসাথে খেলেছি তারাই আজ হঠাৎ করে অচেনা হয়ে গেছে। যে লোক আমার কাছে তার ভাতিজার জন্য একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে বলেছে সেই লোকই পরের দিন আমার বাড়ির হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে। আমায় গালি দিয়ে বলেছে এদেশ নাকি আমার না। অথচ এই দেশের জন্য আমার ঠাকুর দাদু ৭১ সালে এদেশের জন্য যুদ্ধ করেছে। যারা আমায় গালাগাল করেছে তারা সবাই আমার পরিচিত জন একসাথে খেলেছি একসাথে চা খেয়েছি। কিন্তু এখন তারা সবাই অপরিচিত। আমি মিডিয়ার মুখ খোলায় আমাকে অন্তত ২০টি ফোন করে গলা কেটে নেয়ার হুমকি দিয়েছে।


ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, নড়াইলের ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। অথচ আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে যত ঘটনা ঘটেছে তার একটি ঘটনারও বিচার বিভাগীয় তদন্ত হয়নি শাস্তি হয়নি। দুই/তিন মাস পুলিশী তৎপরতা থাকে তারপর সব ঠিক হয়ে যায়। কারন প্রশাসন জানে যারা দাঙ্গার ঘটনার সাথে জড়িত তাদের কেশাগ্রস্পর্শ করার ক্ষমতা তাদের নেই। গত দুর্গাপূজার সময় সারাদেশে যেভাবে হিন্দু প্রতীমা মন্ডপ ভাঙচুর হয়েছে রংপুরের জেলে পাড়া জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে তারপর সারা পৃথিবী ব্যাপী বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনসহ অসাম্প্রদায়িক সমাজ জেগে উঠেছিল তাতে যে এই সরকার খুব একটা বিপাকে পড়েছিল তেমনটি মনে হয়নি। এবারেওযে খুব একটা কিছু হবে এমন ভাবার কোন কারন নেই।


ক্রন্দনরত হিন্দু মা, নড়াইল
ক্রন্দনরত হিন্দু মা, নড়াইল

একটা সম্ভাব্য প্রতিকার হতে পারে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও করে আমরন অনসনে বসে ভারতের ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা করা।শুধু স্বধর্মীয় বলে নয় প্রতিবেশী হিসাবে ভারতেরও কর্তব্য রয়েছে পড়শী দেশে যাতে সংখ্যালঘুরা শান্তিতে থাকতে পারে তার ব্যবস্থা করা।শুধু মুখে বললেই হবেনা পৃথিবীর সব হিন্দুরাই ভারতীয়।তারা ফিজিতে থাকুক বা বাংলাদেশে তাদের সকলের কাছেই পূন্যভূমি হল ভারত।তাদের শেকড় ভারতের মাটিতে প্রোথিত।প্রতিবেশী হিন্দুরা যদি অত্যাচারের শিকার হন,তাহলে তারা অবশ্যই ভারতে আসবেন তাদের আমরা সসম্মানে ভারতের নাগরিকত্ব দেব।শরনার্থীরা হলেন আমার জিগর কা-টুকড়া।কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দুরা বলছে এটি আমার দেশ এখানেই আমার জন্ম এদেশ ছেড়ে আমি যাব কেন?একসাথে থাকতে চাই একসাথে বাঁচতে চাই,একটু সম্মানের সাথে।


নারায়ণ দেবনাথ

১৮ জুলা্ই ২০২২

https://www.facebook.com/debnath.narayan.127/posts/pfbid02jyA7iMMt2P8PmmA9ceYKmwxbHM9kjdxmrqtZqUsnFQ1duZ71ErJqUhVXpCTDhuAjl

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ