![]() |
পুলক ঘটকের ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিণশট |
২৯শে মে ২০২৫ তারিখে পুলক ঘটক তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্ট লিখেন। সেখানে মুসলিমদের আপত্তির মুখে ইউটিউব থেকে 'আয়েশা আদিত্য' নাটকটি সরানো প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন। তিনি লিখেন-
মুসলমানদের 'ধর্মীয় অনুভূতি'তে আঘাত লাগার কারণে নবনির্মিত 'আয়েশা আদিত্য' নাটক ইন্টারনেট থেকে সরিয়ে নিয়ে পরিচালক দুঃখপ্রকাশ করেছেন। অদ্ভুত এক অনুভূতি চালু আছে এই বাংলাদেশে! বলা হয় ধর্মীয় অনুভূতি, অথচ এর নিগুঢ়ে আছে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এবং সাম্প্রদায়িক চেতনা।
এই নাটকের নায়ক ছিল হিন্দু (আদিত্য) এবং নায়িকা মুসলমান (আয়েশা)। মুসলিম মেয়ে হিন্দু ছেলের সঙ্গে প্রেম করা আমাদের মুসলমান বন্ধুদের চোখে ভালো লাগেনি। সুতরাং আঘাত লেগেছে ধর্মীয় অনুভূতিতে।
বিপরীতে হিন্দু মেয়ে মুসলিম ছেলের সঙ্গে প্রেম করার ব্যাপার হলে নাটকটি দেখে হিন্দুদের ভালো লাগতো না; খুশি হতো মুসলমানরা! অর্থাৎ ব্যাপারটা নারীকে নিয়ে অনুভূতি –নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিগত এবং সম্প্রদায়গত। ধর্ম বা পরকালের ভবিষ্যৎ কে জানে? সবাই মেয়ে মানুষের পাহারাদার।
এদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের অনুভূতিতে আঘাতের পরিণতি সবাই জানে। সুতরাং নাটক প্রত্যাহার করতে হয়েছে। সংখ্যালঘুর ধর্ম নিয়ে প্রকাশ্যে আপত্তিকর বক্তব্য হলেও, অনুভূতির ব্যাপার নেই!
এই নাটকের ঘটনায় একটি নির্মম সত্যের স্মৃতি-সংযোগ পাওয়া যায়। গত ১৬ নভেম্বর কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে মুসলমান মেয়ের সঙ্গে প্রেমের অপরাধে হৃদয় রবি দাস নামের এক হিন্দু তরুণকে গণপিটুনি দিয়েছিল তৌহিদী জনতা। এরপর তাকে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেছিল। পরদিন সেনাক্যাম্প থেকে ফেরত এসেছিল ছেলেটির লাশ।
'আয়েশা আদিত্য' নাটকের কাহিনীতে মুসলিম নায়িকার সাথে প্রেম করা হিন্দু নায়কের লাশ পাওয়া গেছে নদীতে। একটি সংবেদনশীল সত্য ঘটনার সাথে নাটকের কাহিনী আংশিক মিলে গেলে ধর্মীয় অনুভূতির মাত্রা বোধকরি বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।
পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে অসাম্প্রদায়িক দেশ আমাদের এই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর উপর সাম্প্রদায়িক আঘাতের প্রতিবাদ করাকেও অপরাধ হিসেবে দেখা হয়। এমন অসাম্প্রদায়িক দেশে মুসলিম মেয়ের সাথে হিন্দু ছেলের প্রেমের বিয়োগান্তক নাটক বানানোর চেষ্টা করা দুঃসাহসী লেখক, পরিচালক ও অভিনেতা জন্ম নিয়েছে এটাই বিস্ময়!
সূত্র: ফেসবুক পোস্ট
0 Comments