![]() |
হিন্দু নির্যাতন-নিপীড়ন, মঠ-মন্দিরে হামলার প্রতিবাদসহ ৮ দাবি আদায়ে রংপুরে বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে। ছবি: সমকাল |
হিন্দুদের উৎখাত চেষ্টার পরিণতি ভালো হবে না
রংপুর অফিস ও কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ২১:৩৪
হিন্দু নির্যাতন-নিপীড়ন, মঠ-মন্দিরে হামলার প্রতিবাদসহ ৮ দাবি আদায়ে রংপুরে বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে রংপুরের মাহিগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠের সমাবেশে বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেছেন, দেশ থেকে হিন্দুদের উৎখাতের চেষ্টা হলে, তার পরিণতি ভালো হবে না।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে। পরীক্ষা ছাড়াই পাস মিলছে। আন্দোলনের মাধ্যমে অনেক বিষয়ে স্বীকৃতি মিললেও, তিন মাসে সনাতনীদের কোনো বিষয়ের সমাধান হয়নি। এখনও বাড়িঘর লুট এবং হিন্দুদের চাকরি হারাতে হচ্ছে। মনে রাখবেন, যত নিপীড়ন আসবে, সনাতনীরা তত ঐক্যবদ্ধ হবে।
চিন্ময়ের অভিযোগ, রংপুরের পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমাদের হোটেলে থাকতে দেওয়া হয়নি। জেলা প্রশাসক আমাদের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করেননি। সমাবেশে আসার পথে দিনাজপুর ও জলঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাস ফেরত পাঠানো হয়েছে। বাধা দেওয়া হয়েছে কুড়িগ্রামে; রংপুরের কাউনিয়ায় হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার দাবি করছি।
হিন্দুদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা এসব প্রশ্রয় দিলে, বাংলাদেশ হবে ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়ার মতো। কোনো সরকার স্থায়ী ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। বাংলাদেশ আমার মায়ের মতো। আমরা এখানে জন্মেছি, এখানেই থাকব। কোথাও যাব না।
সমাবেশে বক্তৃতা করেন সনাতনী বিদ্যার্থী সংসদের প্রতিষ্ঠাতা বরণ কুশল চক্রবর্তী, চট্টগ্রামের গিরি আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী ওমেশানন্দ গিরি মহারাজ, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের স্বামী বিপ্রানন্দ জী, শ্রী শ্রী গোপীনাথ ব্রহ্মচারী প্রমুখ।
আয়োজকরা জানান, বেলা ৩টায় সমাবেশ শুরু হয়। দুপুরের আগেই মাঠে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ উপস্থিত হন।
এদিকে বিভাগীয় সমাবেশে যাওয়ার জন্য কুড়িগ্রাম থেকে একাধিক পয়েন্টে রির্জাভ করা বাস পুলিশ আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন হিন্দু নেতারা। সরেজমিন দেখা যায়, জেলা শহরের ত্রিমোহনী, ধরলা সেতু, ফুলবাড়ী সেতু, বড়বাড়ী বাজারসহ একাধিক জায়গায় রংপুরগামী রির্জাভ বাস ফেরত পাঠানো হয়। এক পর্যায়ে ত্রিমোহনী বাজারে বাসের যাত্রীরা সড়ক অবরোধ করেন। পরে যৌথবাহিনী এসে পাঁচটি বাস যেতে দেয়।
উলিপুরের যতিনেরহাট গ্রামের বাসিন্দা সুকুমার চন্দ্র বলেন, দুপুর ১টার দিকে আমাদের তিনটি বাস ফেরত দেয়। কেউই সমাবেশে যেতে পারিনি।
এ ছাড়া কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কের কাউনিয়া পয়েন্টে একটি বাসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হন। আহত শিপুল কর্মকার বলেন,
‘আমরা কুড়িগ্রামের রাজারহাট থেকে বাস রির্জাভ নিয়ে রংপুরে যাচ্ছিলাম। কাউনিয়া বাজারে বাসে একদল যুবক হামলা করেন।’
কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি নাজমুল আলম বাস আটকে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
‘শহরের একাধিক পয়েন্টে রুটিন দায়িত্বের অংশ হিসেবে তল্লাশি চৌকি ছিল। রংপুরের মহাসমাবেশ ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তল্লাশি জোরদার করা হয়। তবে কোনো বাস ফেরত দেওয়া হয়নি।’
সূত্র: সমকাল
0 মন্তব্যসমূহ