রংপুরে সনাতনীদের সমাবেশ, পথে পথে বাধার অভিযোগ নিয়ে বাংলাদেশের কয়েকটি পত্রিকার খবর ও ছবি

রংপুরে সনাতনীদের সমাবেশ, পথে পথে বাধার অভিযোগ
রংপুরে সনাতনীদের সমাবেশ, পথে পথে বাধার অভিযোগ

রংপুরে সনাতনীদের সমাবেশ, পথে পথে বাধার অভিযোগ


রংপুর প্রতিনিধি, প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৪ এএম আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৪ এএম


সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আট দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দেশব্যাপী সমাবেশের ধারাবাহিকতায় রংপুরে বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে এ সমাবেশ হয়। সমাবেশ মাঠে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা থেকে সনাতনীরা মিছিল নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশে আসার পথে বাধা দেওয়াসহ হামলার অভিযোগ করা হয়েছে সমাবেশস্থল থেকে।


সমাবেশে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, 


‘৫ আগস্টের পর অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে, আন্দোলনের কারণে পরীক্ষা ছাড়াই পাস মিলছে, আন্দোলনে অনেক বিষয়ে স্বীকৃতি মেলে। অথচ তিন মাস হয়ে গেল আমাদের বিষয়ে কোনো সমাধান হয়নি। এখনো হিন্দুদের বাড়িঘর লুট করা হচ্ছে, হিন্দুদের চাকরি যাচ্ছে; যা কষ্টদায়ক। তাই বলতে চাই, সনাতনীদের এ দেশ থেকে উৎখাতের চেষ্টা হলে পরিণতি ভালো হবে না। সনাতন ধর্মের সব সংগঠন আজ ঐক্যবদ্ধ, তাই দেখে অনেকে ঈর্ষান্বিত হয়ে সমাবেশে আসতে বাধা প্রদান করছেন। কিন্তু তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, সাধুরা সমবেত হয়েছেন সনাতনীদের দাবি আদায়ে। সনাতনীদের ওপর যতই নিপীড়ন হবে, আমরা তত বেশি ঐক্যবদ্ধ হব।’


তিনি বলেন, 


‘রংপুরের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করতে গেলে আমাদের সঙ্গে রংপুরের কোনো লোক না থাকায় তিনি দেখা করেননি। তিনি একজন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়ে আমাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। এ ঘটনা আমাদের খুব আহত করেছে। শুধু তাই নয়, দিনাজপুর ও জলঢাকা থেকে আসা বাস ফিরিয়ে দিয়েছে তারা। কুড়িগ্রাম, কাউনিয়ায় বাধা দেওয়া হয়েছে। আমাদের কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমরা সমাবেশের মঞ্চ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’


চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী সব সনাতনীর উদ্দেশে বলেন, 


‘আমরা যদি এসব প্রশ্রয় দিই, প্রশ্রয় দিলে এই বাংলাদেশ ইরাক হবে, লিবিয়া, সিরিয়ার মতো হবে। তাহলে কোনো সরকার স্থায়ী ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। বিদেশি শক্তি এখনই থাবা দেওয়ার প্রচেষ্টা করছে। তাই বলতে চাই, আমার মা আমাদের কাছে যেমন, এই মাতৃভূমিও আমার মায়ের মতো। আমরা এখানে জন্মেছি, এখানেই থাকব। কোথাও যাব না।’


তিনি বলেন, 


‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এ দেশে কেউ সংখ্যালঘু না, সবাই বাংলাদেশি। সেই কথার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে চাই, সনাতনীরা কোনো নির্দিষ্ট দলের কিংবা রাজনৈতিক দলের সমর্থন করে না। আমাদের ন্যায় অধিকার যারা নিশ্চিত করবে আমরা তাদেরই ভোট দেব। আমরা রাষ্ট্রবিনির্মাণে সহযোগিতা করতে চাই। আমরা উপদেষ্টা হতে চাই না। আমরা ক্ষমতা চাই না।’


সূত্র: দেশ রূপান্তর


-০-০-০-০-০-০-


রংপুরে সনাতনীদের সমাবেশ, ছবি: এক্স
রংপুরে সনাতনীদের সমাবেশ, ছবি: এক্স


বাংলাদেশে ফের পথে জনতা, বাধা এড়িয়ে রংপুরে সনাতনীদের সমাবেশ

আট দফা দাবিতে বাংলাদেশের রংপুরে সমাবেশ করল ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’।

Authored By: সৌমী দত্ত, Produced By: সুমন মাঝি, Published on: , 23 Nov 2024, 10:46 am


ই সময়, ঢাকা: আট দফা দাবিতে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের পরে রংপুরেও লাখো জনতার সমাবেশ করল ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’। এই সমাবেশ আটকাতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করেছিল অভিযোগ। বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক তরফে জানানো হয়, রংপুর জেলা স্কুলের মাঠে সমাবেশ করতে দেওয়া যাবে না। সভার জন্য বরাদ্দ করা হয় নির্ধারিত এলাকার থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরের একটি মাঠ। তবে সেখানেও সমাবেশের ক্ষেত্রে ২৭ দফা শর্ত দেওয়া হয়।


বলা হয়— ব্যাপক জনসমাগম হতে দেওয়া যাবে না। আগতদের বাধা দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। সমাবেশে আসার পথে হামলারও অভিযোগ মিলেছে কাউনিয়া উপজেলা থেকে। আহত হন ১৫–২০ জন। তবে, এই বাধা অতিক্রম করেও কানায় কানায় পূর্ণ ছিল মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠ। যা দেখে ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’ বরিশাল-সহ আরও তিনটি বিভাগীয় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


এ দিন মাহিগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। বলেন, 


‘গত ৫ অগস্ট দেশের বৈষম্য দূর করতে শহিদ হয়েছে আবু সাইদ, মুগ্ধরা। তাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে দেশ কি বৈষম্যমুক্ত হয়েছে? এখনও দেশে বৈষম্য রয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হিন্দুরা।’


তাঁর দাবি, একাত্তরে দেশ স্বাধীনের আন্দোলনে যাঁরা ভারতে পালিয়ে জীবন বাঁচিয়েছিলেন, তাঁদের ৭০ শতাংশই হিন্দু। তাঁদের বাড়ি-ঘরে লুটপাট চলেছিল। স্বাধীনতার এত বছর পরেও ওই ধারা অব্যাহত রয়েছে।


বাংলাদেশের সংবিধানের মূল চারটি নীতি অটুট রাখার দাবি জানিয়ে ব্রহ্মচারী বলেন, 


‘হিন্দুরা কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থক নয়। আগামীতে যে দল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে পারবে সনাতনীরা সেই দলকে ভোট দেবেন। তিন কোটি সনাতনী আজ ঐক্যবদ্ধ।’ চট্টগ্রামে সনাতন ধর্মের লোকদের ওপর নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ব্রহ্মচারী। বলেন, ‘আমাদের ৮ দফা দাবি মেনে নিন। ৫ অগস্টের পর অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু আমাদের বিষয়ে কোনও সমাধান হয়নি। বরং এখনও হিন্দুদের বাড়িঘর লুট করা হচ্ছে, হিন্দুদের চাকরি যাচ্ছে। সনাতনীদের এ দেশ থেকে উৎখাতের চেষ্টা হলে পরিণতি ভালো হবে না। আমরা এখানে জন্মেছি, এখানেই থাকবো। কোথায় যাবো না।’


সমাবেশে লোকজনকে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ব্রহ্মচারীর। তাঁর দাবি, 


‘দিনাজপুর- নীলফামারি থেকে আমাদের লোককে আসতে দেওয়া হয়নি। বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আমরা যদি এগুলোকে প্রশ্রয় দিই, তা হলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়ার মতো হবে। তা হলে কোনও সরকার স্থায়ী ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।’


সমাবেশ থেকে ৮ দফা দাবি জানানো হয়েছে—১. সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুত ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন। ২. অবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন। ৩. সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন। ৪. হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে ‘হিন্দু ফাউন্ডেশনে’ উন্নীত করা। ৫. ‘দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন’ প্রণয়ন এবং ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পন আইন’–এর যথাযথ বাস্তবায়ন। ৬. সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য উপাসনালয় তৈরি ও প্রতিটি হস্টেলে প্রার্থনা কক্ষ বরাদ্দ করা। ৭. ‘সংস্কৃত ও পালি শিক্ষাবোর্ড’ আধুনিকীকরণ এবং দুর্গাপূজায় ৫ দিন ছুটি–সহ প্রতিটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবে প্রয়োজনীয় ছুটির ব্যবস্থা করা।


সূত্র: এই সময়


-০-০-০-০-০-০-


এই ভূমি নিয়ে ‘খেলতে’ দেওয়া হবে না: রংপুরে সনাতন সমাবেশে ঘোষণা
এই ভূমি নিয়ে ‘খেলতে’ দেওয়া হবে না: রংপুরে সনাতন সমাবেশে ঘোষণা

এই ভূমি নিয়ে ‘খেলতে’ দেওয়া হবে না: রংপুরে সনাতন সমাবেশে ঘোষণা


“৫ অগাস্টের পর থেকে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা আমাদের উপর নির্যাতন চালিয়ে আসলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।”


শুক্রবার রংপুরের মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে সনাতন জাগরণ মঞ্চের বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী।


রংপুর প্রতিনিধি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, Published : 22 Nov 2024, 10:09 PM, Updated : 22 Nov 2024, 11:49 PM


বাংলাদেশকে নিয়ে চক্রান্ত করা হচ্ছে অভিযোগ এনে রংপুরে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের সমাবেশ থেকে বলা হয়েছে, জীবন থাকতে এই ভূমি নিয়ে কাউকে খেলতে দেওয়া হবে না।


দেশে হিন্দুদের ওপর ‘একের পর এক নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও’ সরকার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করা হয়েছে সেখানে। বলা হয়েছে, হিন্দুরা কাউকে ‘ভয় পায় না’।


শুক্রবার বিকেলে রংপুর বিভাগীয় সমাবেশে এসব কথা বলেন সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী।


তিনি বলেন, 


“৫ অগাস্টের পর থেকে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা আমাদের উপর নির্যাতন চালিয়ে আসলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের উপর একের পর এক নির্যাতন করা হচ্ছে। বাড়ি-ঘর জায়গা জমি দখল করা হচ্ছে।


“যেখানে আন্দোলন হচ্ছে সেখানেই সরকার দাবি মেনে নিচ্ছে। অথচ তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও সরকার আমাদের আট দফা দাবি মেনে নিচ্ছে না। অথচ আন্দোলন করার অপরাধে আমাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দেওয়া হচ্ছে।”


যারা সনাতনীদের বিভক্ত করার চেষ্টা করবে তাদেরকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে চিন্ময় বলেন, 


“এই দেশে আমাদের জন্ম, আমরা জীবিত থাকতে আমাদের এই ভূমি নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না।”


মহানগরের মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এই সমাবেশকে ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই নানা আলোচনা চলছিল।


সমাবেশে অংশগ্রহণ করতে যাওয়ার পথে কুড়িগ্রামে বাসে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে দুপুরের দিকে এ ঘটনায় ২০ জন আহত হয়েছেন বলে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা দাবি করেছেন।


কুড়িগ্রাম শহর থেকে রংপুরগামী রুটের বাসগুলো যেতে দেওয়া হলেও রিজার্ভ করা বাসগুলো যেতে দেওয়া হয়নি। বাসগুলোকে ঘুরিয়ে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন।


দুপুরের দিকে জেলা শহরের ত্রিমোহনী বাজারে বাস আটক করলে যাত্রীরা নেমে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পাঁচটি বাস ছেড়ে দেয়।


এর ঘণ্টাখানেক পরে ত্রিমোহনী মোড়ে আরও তিনটি রিজার্ভ করা বাস আসে। সেগুলো ফেরত পাঠানো হয় বলে অভিযোগ করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।


রংপুরের মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে সনাতন জাগরণ মঞ্চের বিভাগীয় সমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেয়।
রংপুরের মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে সনাতন জাগরণ মঞ্চের বিভাগীয় সমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেয়।


তবে রংপুরে সমাবেশস্থল ছিল লোকে লোকারণ্য। আর বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ সদস্যরা রাতে তাদেরকে হোটেল থেকে বের করে দিয়েছে।


চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, 


“এই সরকার পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। আমরা কোনো প্রহসন মেনে নেব না। এই দেশে তিন কোটিরও বেশি হিন্দু রয়েছে তারা কোনো ভয় পায় না। চট্টগ্রামে আমাদের অনেককে নির্যাতন করা হয়েছে। সব সরকারের আমলে আমরা নির্যাতিত হয়েছি, আর হতে চাই না।”


উগ্রবাদী গোষ্ঠী সনাতনীদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ এনে তিনি বলেন,


“সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ধর্মীয় কারণে আমাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।”


সনাতনীরা কোনো রাজনৈতিক দলের ‘দালাল নয়’ মন্তব্য করে ইসকনের নেতা বলেন, 


“আমাদেরকে নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলবেন না। আমরা সরকারের বিপক্ষে নই। যারা আমাদের আট দফা দাবি মেনে নেবেন, তাদেরকেই আমরা ভোট দেব।


“আমাদেরকে জঙ্গি বলা হচ্ছে। আমরা জঙ্গি নই।”


আট দাবি


সমাবেশে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের পক্ষ থেকে তাদের আট দফা দাবি তুলে ধরা হয়। ১৭ নভেম্বর এই মোর্চার আত্মপ্রকাশ হয়। তাদের দাবিগুলো হল-


  • ১. সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন।
  • ২. অবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন।
  • ৩. সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন।
  • ৪. হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে ‘হিন্দু ফাউন্ডেশনে’ উন্নীত করাসহ বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মীয় ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে রূপান্তর।
  • ৫. ‘দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন’ প্রণয়ন এবং ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন।
  • ৬. সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোতে সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ ও প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনা কক্ষ বরাদ্দ করা।
  • ৭. ‘সংস্কৃত ও পালি শিক্ষাবোর্ড’ আধুনিকায়ন।
  • ৮. দুর্গাপূজায় ৫ দিন ছুটিসহ প্রতিটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবে প্রয়োজনীয় ছুটির ব্যবস্থা করা।


সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ জোটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শ্রীমৎ কুশল বরণ, ফরিদপুরের রাধাগোবিন্দ মন্দিরের ব্রহ্মচারী শ্রীপাদ গোপীনাথ, চট্টগ্রামের ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের ব্রহ্মচারী লীলারাজ গৌর দাস, চট্টগ্রামের তপোবন আশ্রমের অধ্যক্ষ রবিশ্বরানন্দ পুরী মহারাজ, ভারত সেবাশ্রমের বিপ্রনন্দ মহারাজ এবং রংপুরের বাবু দ্বীপকর।



সূত্র: বিডিনিউজ২৪


-০-০-০-০-০-০-



কুড়িগ্রামে হিন্দুদের সমাবেশগামী বাসে ‘হামলা’, গাড়ি আটকে দেওয়া অভিযোগ
কুড়িগ্রামে হিন্দুদের সমাবেশগামী বাসে ‘হামলা’, গাড়ি আটকে দেওয়া অভিযোগ


কুড়িগ্রামে হিন্দুদের সমাবেশগামী বাসে ‘হামলা’, গাড়ি আটকে দেওয়া অভিযোগ


শুক্রবার রংপুরের মাহিগঞ্জ কলেজে বিভাগীয় সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ।


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, Published : 22 Nov 2024, 05:54 PM


হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবি-দাওয়া নিয়ে রংপুরের একটি সমাবেশে অংশগ্রহণ করতে যাওয়ার পথে কুড়িগ্রামে বাসে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।


শুক্রবার দুপুরের দিনে এ ঘটনায় ২০ জন আহত হয়েছেন বলে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা দাবি করেছেন।


তাদের অভিযোগ, সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য যেসব বাস রিজার্ভ করা হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে কয়েকটিকে আটকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর কতগুলো বাসে আটকে দেওয়ার পর যাত্রীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেগুলো যেতে দেয়।


তবে কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি নাজমুল আলম বাস আটকানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, 


“নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে আমরা শহরের একাধিক পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে সব ধরনের যানবাহন চেক করছি।”


হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা বলছেন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে ‘হিন্দু ফাউন্ডেশন’-এ উন্নীত করাসহ আট দফা দাবিতে শুক্রবার রংপুরের মাহিগঞ্জ কলেজে বিভাগীয় সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ।


কুড়িগ্রাম জেলা সনাতন জাগরণ মঞ্চের প্রধান সমন্বয়ক রাজিব সরকার অপু বলেন, 


“একটি বাস কুড়িগ্রামের রাজারহাট থেকে রংপুরের দিকে যাচ্ছিল। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কের কাউনিয়া পয়েন্টে বাসে একদল লোক হামলা চালায়। এতে ৩০ জন আহত হন। তাদের কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।”


হামলায় আহত শিপুল কর্মকার বলেন, 


“আমরা রাজারহাট থেকে বাস রির্জাভ নিয়ে রংপুরে যাচ্ছিলাম। এ সময় কাউনিয়া বাজারে আমাদের বাস আটকে একদল যুবক অর্তকিত হামলা করে।”


এ ব্যাপারে জানতে রংপুরের কাউনিয়া থানার ওসি এস এম শরীফকে মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।


কুড়িগ্রাম শহরের ত্রিমোহনী, ধরলা সেতু, ফুলবাড়ী সেতু, বড়বাড়ী বাজারসহ একাধিক জায়গা থেকে রংপুরগামী মেইল যাত্রীবাহী বাসগুলো যেতে দেওয়া হলেও, রির্জাভ করা বাসগুলো যেতে দেওয়া হয়নি। বাসগুলোকে ঘুরিয়ে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন।


দুপুরের দিকে জেলা শহরের ত্রিমোহনী বাজারে বাস আটক করলে যাত্রীরা নেমে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পাঁচটি বাস ছেড়ে দেয়।


কুড়িগ্রাম শহরের শিক্ষার্থী শিমুল দাস বলেন, 


“আমাদের সনাতন জাগরণ মঞ্চের পাঁচটি বাস পুলিশ আটকে দেয়। এক ঘণ্টা আমরা বিক্ষোভ করলে পরে যেতে দেয়। আমাদের এভাবে হয়রানি কেন করছে? এটাই কি বৈষম্যবিরোধী চেতনা?”


এর ঘণ্টাখানেক পরে ত্রিমোহনী মোড়ে আরো তিনটি রিজার্ভ করা বাস আসে। সেগুলো ফেরত পাঠানো হয় বলে অভিযোগ করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।


উলিপুর উপজেলার যতীনের হাট গ্রামের বাসিন্দা সুকুমার চন্দ বলেন, 


“বেলা ১টার দিকে আমাদের তিনটি বাস আটকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আমরা রংপুরের সমাবেশে যোগ দিতে পারছি না। আমাদের জোর করে বাস থেকে নামানো হয়েছে।”


সনাতন জাগরণ মঞ্চের কুড়িগ্রাম জেলার প্রধান সমন্বয়ক রাজিব সরকার অপু বলেন, 


“আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা এবং বাস যেতে না দেওয়া দুঃখজনক। আমরা কাকে বিচার দেব?”


কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি নাজমুল আলম বলেন, 


“যেহেতু রংপুরে একটি মহাসমাবেশ হচ্ছে কেউ অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটাতে না পারে এজন্য বাস, ট্রাকসহ সব যানবাহন চেক করা হচ্ছে। এটা নিরাপত্তা বিধান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সরকারি দায়িত্ব।”


সূত্র: বিডিনিউজ২৪


-০-০-০-০-০-০-



বাধার পরও রংপুরে সনাতনী জাগরণ জোটের বড় সমাবেশ
বাধার পরও রংপুরে সনাতনী জাগরণ জোটের বড় সমাবেশ


বাধার পরও রংপুরে সনাতনী জাগরণ জোটের বড় সমাবেশ | হামলায় আহত ২


রংপুর প্রতিনিধি ও কালবেলা প্রতিবেদক, প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৪ এএম, প্রিন্ট সংস্করণ


নানা বাধাবিপত্তি পেরিয়ে রংপুরে সনাতনী জাগরণ জোটের বিভাগীয় মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৮ দফা দাবিতে ডাকা এ মহাসমাবেশ রূপ নেয় জনসমুদ্রে। বিভাগের আট জেলা থেকে অংশ নেওয়া সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঢল ছড়িয়ে পড়ে সমাবেশস্থল থেকে আশপাশের পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত।


মহাসমাবেশে যাওয়ার সময় কাউনিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাস আটকিয়ে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। এতে দুজন গুরুতর আহত হন। তারা হলেন লালমনিহাটের দুরাকুটি এলাকার বাসিন্দা নীল মোহন ও কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সথারপাড়া এলাকার শিপন কর্মকার। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে হামলাকারীদের পরিচয় জানা যায়নি।


জোটের নেতাদের দাবি, রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন রাজনৈতিক উচ্ছৃঙ্খল জনগোষ্ঠী ও প্রশাসনিক বাধাকে উপেক্ষা করে মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে রূপান্তরিত হয়েছে। সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে ইন্টারনেট স্লো করে দেওয়া হয়েছে। তবে নিজেদের অধিকার আদায়ে সনাতনীদের অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য রংপুরের মহাসমাবেশকে ঠেকানো যায়নি।


গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে নগরীর মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে জড়ো হতে শুরু করেন সমাবেশে আসা মানুষজন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জনস্রোতও বাড়তে থাকে। বিকেল ৩টায় সমাবেশ মঞ্চে ওঠেন জোটের নেতারা। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সমাবেশের উদ্বোধন করেন জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী।


সমাবেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, 


বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ হলো হিন্দু। এ সময় ১ কোটি শরণার্থীর মধ্যে ৭০ শতাংশ ছিল হিন্দু, যাদের বাড়িঘরে হামলা হয়েছে, লুটপাট হয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকার পরিবর্তনের তিন মাস পরও দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন নেই। এখনো কিছু জায়গায় হিন্দু বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চলছে। এখনো চাঁদাবাজি ও চাকরিচ্যুতি চলছে। এর অর্থ হলো উগ্রবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকার ও রাজনৈতিক গোষ্ঠীর একটি অংশ সম্মিলিতভাবে সনাতনী সংখ্যালঘুদের এ দেশ থেকে উচ্ছেদের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।


চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, 


সনাতনীদের আওয়ামী লীগ, বিএনপি কিংবা জাতীয় পার্টির তকমা দিয়ে বিভক্ত করে রাখা হয়েছে। ঐক্যের সুবাতাস বইছে। এখন আমাদের কেউ বিভক্ত করতে চাইলে আমরা তাকে ছুড়ে ফেলব। বিভক্তকারীকে কোনো স্থান দেওয়া হবে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের সমাবেশস্থল জিলা স্কুল মাঠ থেকে পরিবর্তন করা হয়েছে। পুলিশ সুপারের নির্দেশে হোটেল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। সৈয়দপুর, জলঢাকা, দিনাজপুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত শত শত বাস পথে আটকে রাখা হয়েছে। সনাতনী মহাসমাবেশে যোগ দেওয়ার কারণে হামলার শিকার হয়েছেন দুই-তিনজন। তাদের রংপুরের পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।


রংপুরের লোক সঙ্গে না থাকায় জেলা প্রশাসক দেখা না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। এ ছাড়া সংবিধান সংস্কারে কমিটিতে সনাতনীদের প্রতিনিধি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সংবিধানে ধর্মীয় আইন, পারিবারিক আইন, সাম্য, ন্যায়, মর্যাদা ও নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে আমাদের অবস্থান যদি সুনিশ্চিত করা না হয়, তাহলে কোনো পরিবর্তন মেনে নেওয়া হবে না।


সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও সনাতনী বিদ্যার্থী সংসদের প্রতিষ্ঠাতা বরণ কুশল চক্রবর্তী, চট্টগ্রামের গিরি আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী ওমেশানন্দ গিরি মহারাজ, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের স্বামী বিপ্রানন্দ জী ও শ্রীশ্রী গোপীনাথ ব্রহ্মচারী প্রমুখ।


এর আগে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাসমাবেশ করার অনুমতি পায়নি সনাতনী জাগরণ জোট। এর পরিবর্তে শহরের বাইরে মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে মহাসমাবেশ আয়োজনের অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। ধর্মীয় উসকানিমূলক বা রাষ্ট্রবিরোধী বা হিন্দু নির্যাতনের মিথ্যা তথ্য না ছড়ানোসহ ১৫টি শর্তে তাদের মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে জনসভা করার অনুমতি দেওয়া হয়।


রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল কালবেলাকে বলেন, 


তারা মহাসমাবেশ করার জন্য জিলা স্কুল ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু আমরা সর্বসম্মতিক্রমে মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে আয়োজন করার অনুমতি দিয়েছি। জিলা স্কুল শহরের প্রাণকেন্দ্র হওয়ায় কোনো ধরনের সমাবেশ ঘিরে শহরজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। জিলা স্কুল মাঠে বিভিন্ন ধরনের সভা-সমাবেশ ঘিরে নগরবাসীর ভোগান্তি নিয়ে অনেক অভিযোগও আছে।


গত বৃহস্পতিবার মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের হোটেলে থাকতে না দেওয়ার অভিযোগ তোলেন সংগঠনটির মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। যদিও পরে তাদের হোটেলে থাকতে দেওয়া হয়েছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, 


‘আমরা ভোরে রংপুর এসেছি। আমার এ কথা বলতে কষ্ট লাগছে যে, আমাদের সারা বাংলাদেশের কৃতী সন্তানরা ভোরে হোটেলে উঠেছে। সন্ধ্যায় হোটেল ম্যানেজমেন্ট জানাল, পুলিশ প্রশাসন চায় না আমরা এখানে থাকি। আমাদের হোটেল ছেড়ে দিতে বলছে। আমরা বাংলাদেশে কোন পর্যায়ে অবস্থান করছি। হিন্দুরা কী পর্যায়ে নিপীড়িত হচ্ছে, এটা বোঝার জন্য আর কোনো ক্লাস বা প্রুফ দরকার হয় না।


তিনি বলেন, 


এখানকার পুলিশ সুপার নাকি নির্দেশ দিয়েছেন আমাদের হোটেল ছেড়ে দিতে। অথচ আমরা দুই দিনের বুকিং দিয়ে অর্ধেক পেমেন্টও করেছিলাম। তারপর কয়েক দফা বিভিন্ন লোকজনকে দিয়ে কথা বলানোর পর থাকতে দিয়েছে।


হোটেল ছাড়তে বলার বিষয়টি স্বীকার করেছেন হোটেল তিলোত্তমা ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার মজনুর রহমান। তিনি বলেন, 

ছাড়তে বলা হয়েছে, কিন্তু ওভাবে বলা হয়নি। গতকাল (বৃহস্পতিবার) তাদের (পুলিশ) হোটেলটা খুব দরকার ছিল। এটা পুলিশের প্রতিষ্ঠান, এখানে ওদের কিছু লোক থাকার কথা ছিল। পরে তাদের অন্য জায়গায় রাখছে। ওনারা (সনাতনী) ৩৪ জন এখানেই ছিলেন।


হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নিন্দা ও প্রতিবাদ: রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের সমাবেশের অনুমতি শেষ মুহূর্তে প্রত্যাহার, পরে চার-পাঁচ মাইল দূরে সমাবেশের স্থান নির্ধারণ, জোটের মুখপাত্রের হোটেলে থাকার অনুমতি বাতিল এবং সমাবেশে যোগদানেচ্ছু সনাতনীদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ। গতকাল রাতে এক বিবৃতিতে ঐক্য পরিষদের তিন সভাপতি উষাতন তালুকদার, ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।


বিবৃতিতে বলা হয়, রংপুর জিলা স্কুল মাঠে শুক্রবার বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে শেষ মুহূর্তে সেই মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি প্রত্যাহার করা হয় এবং সেখান থেকে চার-পাঁচ মাইল দূরে রংপুর পুরাতন শহর মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে এই সমাবেশের স্থান নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া গতকাল (বৃহস্পতিবার) গভীর রাতে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র প্রভু চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীসহ তার সঙ্গীদের কোনো কারণ না দেখিয়ে হোটেলে থাকার অনুমতি বাতিল করা হয়। এর পরও সনাতনী সম্প্রদায় সদলবলে সমাবেশস্থলে আসার পথে নানা জায়গায় তাদের বাধা দেওয়া হয়। যোগদানেচ্ছু সনাতনীদের ওপর কালকিনীতে হামলা চালিয়ে অনেককে আহত করা হয়।


ঐক্য পরিষদ নেতারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এহেন ঘটনা বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করবে। তারা ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী হামলাকারীদের জাতীয় স্বার্থে অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি হামলায় আহতদের সুচিকিৎসার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। বিবৃতিতে নেতারা বলেন, জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ তাদের ন্যায়সংগত অধিকার এবং এই অধিকারে হস্তক্ষেপ করা নীতিবিরুদ্ধ ও আইনবহির্ভূত অপরাধের আওতায় পড়ে।


সূত্র: কালবেলা


-০-০-০-০-০-০-


রংপুরে মহাসমাবেশে যেতে বাধার অভিযোগ | কুড়িগ্রামে আহত ৩০


রংপুর ব্যুরো ও কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম


রংপুরে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ জোটের বিভাগীয় মহাসমাবেশে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার আট দফা দাবিতে মহানগরীর মাহিগঞ্জ কলেজ মাঠে আয়োজিত মহাসমাবেশে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে। সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, এ সমাবেশে আসার পথে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় তাদের বহনকারী পরিবহণে হামলা চালানো হয়েছে। কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে হামলায় ৩৫ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সমাবেশে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।


মহাসমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশজুড়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা নানা অত্যাচার-নির্যাতন ও সহিংস ঘটনার শিকার হচ্ছে। ভয়ভীতির মধ্যে তারা জীবনযাপন করছেন। সরকারের কাছে তারা এসব বন্ধের দাবি জানান। অন্যথায় দেশজুড়ে জাগরণ জোট ও এর অঙ্গসংগঠন তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে। বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ জোটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সনাতন? বিদ্যার্থী সংসদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শ্রীমৎ কুশল বরণ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইসকনের সাংগঠনিক সম্পাদক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। বক্তব্য দেন ফরিদপুরের রাধাগোবিন্দ মন্দিরের ব্রহ্মচারী শ্রীপাদ গোপীনাথ, চট্টগ্রামের ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের ব্রহ্মচারী লীলারাজ গৌর দাস, স্বামী বিদ্যানন্দ, স্বামী ওমেষানন্দ, লীলা রাজ প্রভু, রণনাথ মহারাজ, জোট রংপুরের সমন্বয়ক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য্য প্রমুখ।


কুড়িগ্রাম জেলা সনাতন জাগরণ মঞ্চের প্রধান সমন্বয়ক রাজিব সরকার অপু বলেছেন, 


দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কের কাউনিয়া পয়েন্টে একটি বাসে দুর্বৃত্তরা হামলা চালালে ৩০ জন আহত হন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতরা চিকিৎসাধীন। আহত শিপুল কর্মকার বলেন, কুড়িগ্রামের রাজারহাট থেকে বাস রিজার্ভ নিয়ে রংপুরে যাচ্ছিলাম। কাউনিয়া বাজারে আমাদের বাস আটকে একদল যুবক অতর্কিত হামলা করে। এতে ৩০ জন আহত হন। 


সূত্র: যুগান্তর


-০-০-০-০-০-০-


সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত খবর:-

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ