পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে সেনাবাহিনী। |
নিজস্ব সংবাদদাতা, বোয়ালমারী, ফরিদপুর, প্রকাশিত: ১৯:২৮, ২৮ অক্টোবর ২০২৪
বোয়ালমারীতে মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে বিক্ষোভ
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে মহানবী হযরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগে হৃদয় পাল (১৮) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। খবর পেয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, থানা পুলিশের একটি টিম ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির আশ্বাস দিয়ে সেনা হেফাজতে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কাদিরদী ডিগ্রি কলেজ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কাদিরদী কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী হৃদয় পাল ফেসবুকে মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি করে একটি স্টোরি আপলোড করেন। এ খবর জানাজানি হলে কাদিরদী কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে অধ্যক্ষের রুমে নিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। মুহূর্তে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে আসপাশের কয়েকটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা কলেজ চত্বরে জড়ো হয়ে হৃদয় পালকে তাদের হাতে তুলে দিতে দাবি জানাতে থাকে। এ সময় অধ্যক্ষের কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্র জনতা। ক্ষিপ্ত জনতা মারমুখী হয়ে পড়লে সাতৈর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাফিউল আলম মিন্টু ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত বিক্ষোভ কারিদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।
খবর পেয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান চৌধুরী, বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো গোলাম রসুল, থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পৌঁছে বিক্ষোভকারিদের সাথে কথা বলেন। পরে সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভ কারিদের দাবি মেনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেনাসদস্যরা হৃদয় পালকে বের করে সেনা ক্যাম্পে নেওয়ার সময় উত্তেজিত ছাত্র জনতা জুতা স্যান্ডেল ও ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে।
অভিযুক্ত হৃদয় পাল বলেন,
‘আমি মোবাইল ব্যবহার করি না, আমার নামের ফেসবুক আইডি দু বছর আগে হ্যাক হয়েছে। হ্যাক হওয়া আইডি থেকে দু বছর আগে মহানবী সা. কে নিয়ে একটি আপত্তি জনক পোস্ট করে অন্য কেউ। ইতোপূর্বে এ বিষয়ে থানা পুলিশ তদন্ত করে আমার সম্পৃক্ত পায়নি। এর পর থেকে আমি মোবাইল ব্যবহার করি না।’
এ ব্যাপারে কাদিরদী কলেজের অধ্যক্ষ নুরুজ্জামান মোল্যা বলেন,
‘মহানবী সা.কে নিয়ে কটুক্তি করায় একটি উদ্ভুত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইউএনও, পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।’
বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভির হাসান চৌধুরী বলেন, ‘কাদিরদী কলেজের শিক্ষার্থী হৃদয় পালের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই, বিক্ষোভকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে তাকে সেনা হেফাজতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী তদন্ত পূর্বক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহয়তায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
এম হাসান
সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ
-০-০-০-০-
ঘটনার ভিডিও দেখতে এই পোস্টে ক্লিক করুন
0 মন্তব্যসমূহ