ফেইসবুকে ‘কটূক্তি’: আসামিকে নিয়ে যেতে পটিয়া থানায় হামলা

 

আসামিকে ছিনিয়ে নিতে চট্টগ্রামের পটিয়া থানায় স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও জনতার হামলা।
আসামিকে ছিনিয়ে নিতে চট্টগ্রামের পটিয়া থানায় স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও জনতার হামলা।

আসামি সেনাবাহিনীর গাড়িতে আছে ভেবে হামলাকারীরা সেটি ভাঙচুর করে। এতে একজন সেনাসদস্য আঘাত পান।


আসামিকে ছিনিয়ে নিতে চট্টগ্রামের পটিয়া থানায় স্থানীয় মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও জনতার হামলা।


চট্টগ্রাম ব্যুরো, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, Published : 30 Sep 2024, 08:10 PM



 

মহানবী (স.) কে কটূক্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া এক যুবককে তুলে দেওয়ার দাবিতে একদল মানুষ চট্টগ্রামের পটিয়ায় থানায় হামলার পাশাপাশি সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতে হামলা করেছে।


একজন সেনা সদস্য এই হামলায় আঘাত পেয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে থানায় বিচার প্রার্থীদের অপেক্ষার জন্য নির্মিত গোলঘরটি ভাঙচুর করে।


সোমবার বিকেলে ওই ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাসদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মহানবী (স.) কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ওই যুবককে দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর থেকে গ্রেপ্তারের পর পটিয়া থানায় নেওয়া হয়।


গ্রেপ্তার হওয়া পার্থ বিশ্বাস পিন্টু পটিয়া উপজেলার শোভনদণ্ডি ইউনিয়নের বাসিন্দা। স্থানীয়দের অভিযোগ, তার ফেইসবুক পাতা থেকে মহানবী (স.)কে কটূক্তি করে মন্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে।


এ ঘটনায় পটিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. কামরুল ইসলাম রোববার থানায় একটি মামলা করেন। এরপর পটিয়া থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের একটি যৌথ দল চট্টগ্রাম মহানগরের বন্দর থানার উত্তর মাদারবাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।


স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, পিন্টুকে গ্রেপ্তার করে আনার খবর পেয়ে স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও মুসল্লিরা থানার সামনে জড়ো হয়। তারা তাকে তাদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকে।


পুলিশ রাজি না হওয়ায় তারা থানা প্রাঙ্গণে বিচার প্রার্থীদের অপেক্ষার জন্য নির্মিত গোলঘরটি ভাঙচুর করে।


খবর পেয়ে সেনা সদস্যরাও থানায় আসে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সংবাদ কর্মী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ সময় থানার সামনের সড়ক দিয়ে সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি যাচ্ছিল। ওই গাড়িতে সিভিল ড্রেসে এক যুবক ছিলেন। জনতা ওই যুবককে গ্রেপ্তার পিন্টু মনে করে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তারা সেনাবাহিনীর ওই গাড়িটিসহ মোট দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে সেনাবাহিনীর গাড়িটি দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।


ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের পটিয়া সার্কেলের এসপি আরিফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফেইসবুকে দেওয়া পোস্টের কারণে উত্তেজিত জনতা থানার সামনে জড়ো হয়েছিল। কিন্তু আমরা সকালেই ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। তাকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। জনতা আইনগত বিষয় না বুঝেই উত্তেজিত হয়ে উঠেছিল।


“পরবর্তীতে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনেন।”


সেনাবাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর ও এক সেনা সদস্য আঘাত পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ‘ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব’ বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন তিনি।


পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের একজন চিকিৎসক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিকেলে একজন সেনা সদস্য এসেছিলেন। তার হাতে আঘাত ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তিনি চলে গেছেন।”


# প্রথম আলো

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ