সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন হয়। ঢাকা, ৬ আগস্ট, ছবি: প্রথম আলো



প্রতিবেদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৪, ২১: ২৬


সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন হয়েছে। এতে অংশ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক নেতা বলেছেন, তাঁরা যে দেশ নির্মাণ করতে চান, তা কোনো বিভেদের দেশ নয়। স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনের অধিকার ক্ষুণ্ন করার কোনো চেষ্টা ছাত্রসমাজ সহ্য করবে না।


আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই মানববন্ধন হয়। দুপুরের পর থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীসহ অনেকেই এতে অংশ নেন।


মানববন্ধনে অংশ নেন সদ্য কারামুক্ত ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, উপাসনালয় ও স্থাপনায় হামলা-ভাঙচুরের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, 

‘আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনের অধিকার ক্ষুণ্ন করার কোনো চেষ্টাকে ছাত্রসমাজ সহ্য করবে না। আমাদের লড়াই সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে। ছাত্রসমাজ দেখিয়ে দিয়েছে, ফ্যাসিবাদ যত শক্তিশালীই হোক, তার পতন হবেই হবে।’


মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল শাখার সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা বলেন, শেখ হাসিনার পতনের পর ঢাকায় যখন উল্লাস চলছিল, গ্রামে তখন সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে নির্বিচার হামলা-নিপীড়ন চলছিল।


উমামা ফাতেমা আরও বলেন,


 ‘গত ১৫ বছরে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের সুবিধাভোগী আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছেন, কিন্তু তাঁর সন্ত্রাসীরা দেশে আছে। আওয়ামী লীগ যাতে ভবিষ্যতে আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে পারে, তার ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরির জন্য এই নিপীড়ন ঘটানো হচ্ছে। এই চক্রে আমরা পা দেব না।’


মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ইসরাত জাহান বলেন,


‘আমাদের হিন্দু ভাই-বোনেরা আতঙ্কে আছেন। তাঁদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ও স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হচ্ছে। এই অপশক্তি কারা? আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এদের রুখে দেওয়া। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ওপর হামলার বিচার দ্রুততম সময়ে হতে হবে। অস্থায়ী সরকারই যাতে এটি করে। আমাদের ভাইবোনদের রক্ষা করা শহীদদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করব। আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। এই দেশে স্বৈরাচার ও তাদের দোসর ছাড়া সবাই থাকবে। সবাই দাঙ্গাবাজদের প্রতিরোধ করুন।’


বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে কোনো দখলদারির রাজনীতি চলবে না বলে উল্লেখ করেন ইসরাত জাহান। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না কোনো রাজনৈতিক দল বা ছাত্রসংগঠন হল দখল করুক।’


কেউ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে চাইলে তাঁর পিঠের চামড়া থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক মেহেদী হাসান৷ তিনি বলেন, 


‘গতকাল আমাদের হিন্দু ভাইবোনদের বসতবাড়ি, উপাসনালয় ও স্থাপনায় হামলা হয়েছে। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আওয়ামী লীগের দোসররা এসব চোরাগোপ্তা হামলা করছে। আমরা কোনো সংখ্যাগরিষ্ঠ বা সংখ্যালঘু হিসাব করে আন্দোলনে নামিনি, নেমেছি বৈষম্যের বিরুদ্ধে। যারা সাম্প্রদায়িক হামলা করছে, তাদের রুখে দিতে হবে। আমরা সবাই বাংলাদেশি। আমরা সবাই একটি শরীরের অঙ্গ। হিন্দু ভাইদের ওপর আক্রমণ হলে আমাদের শরীর ভালো থাকবে না।’


সূত্র: প্রথম আলো

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ