লাভ জিহাদের একটি ঘটনা ও কিছু পরামর্শ

আমাকে একটু হেল্প করুন। আমি একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি।  আমার সাথে আমার এক সিনিয়রের সম্পর্ক হয়। কিন্তু সে মুসলিম। আমরা দুইজনেই এমনিতে কথা বলতাম জানতাম আমাদের কিছু হবে না কিন্তু ধীরে ধীরে আমরা একজনকে একজন ভালোবেসে ফেলি। কিন্তু আমি অন্য ধর্মে যাবো না তাকে জানিয়ে দি। সে নিজেও জানে আমি আমার ধর্মকে অনেক ভালোবাসি। তাই সে আমাকে কিছু বলে না। আমি অনেকবার ব্রেকাপ করতে চেয়েছি। কিন্তু ওকে ছাড়া থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আর সেও আমাকে ছাড়বে না আমি ওকে অনেক গালি দি নিচু নিচু কথা বলি কিন্তু সেও আমাকে ছাড়বে না। তাই আমরা একবার ডিসিশন নি আমরা বিয়ে করবো।  তাই আমরা নিজে নিজে বিয়ে করার পরিকল্পনা করি। যেহেতু আমাদের সম্পর্ক কেউ মেনে নিবে না তাই আমি মহাদেবের একটা মুর্তি সামনে রাখি। ওকে মালা পড়াই আর ও আমাকে পড়ায় আমরা সাত পাক দিয়ে মন্ত্র পড়ে আর ও আমাকে সিন্দুর পড়ায় দেয়। তাও মহাদেবের সামনে। আর আমরা অগ্নিকে সাক্ষী রাখি। কিন্তু কোন পুরোহিত ছিলো না। আমরা নিজেরাই করি। এখন আমাদের কি বিয়েটা হয়েছে? তাকে এই ব্যাপারে বললে সে বলে যেহেতু মহাদেবকে সাক্ষী রেখেছি তাই বিয়ে হয়েছে।



পরামর্শ:


# একজন অন্যজনকে ছাড়তে না পেরে এভাবে বিবাহ করতে হবে কেন? আপনি বলেছেন, মহাদেবকে সামনে রেখে নিজেরা মালা পরে নিয়েছেন। অর্থাৎ আপনার প্রিয় মানুষটির সনাতন ধর্মের রীতিনীতি গ্রহণে আপত্তি নাই। তাই আমার মনে হয় আইনি প্রক্রিয়ায় তা সম্পন্ন করে তারপর কোনো মন্দিরে বিবাহ করতে পারেন। তা না হলে দিন শেষে আপনার ইসলাম মত গ্রহণ করতে হবে এবং থাকতে হবে। 


আপনি চাইলে এই বিষয়ে বাংলাদেশ অগ্নিবীর পেইজে নক করে সাহায্য নিতে পারেন। আইনি প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে বিবাহ পর্যন্ত ওরা করে দিবে। 


আর আপনার এই সাক্ষী রাখা বিবাহ শাস্ত্র অনুসারে হয়নি। সনাতন ধর্মের বিবাহ মুসলিমদের মতো কবুল বলায় সীমাবদ্ধ নয়।



# এটা লাভ জিহাদের একটা অংশ। এমন অহরহ ঘটনা ঘটে। শেষমেষ তারাই জয়ী হয়।


যাই হোক আপনাকে এইসব বোঝালে এখন আর বুঝবেন না। প্রথমত এটা আপনাদের বিয়ে হয়নি। দ্বিতীয়ত দুইজন দুইমতে থাকলে আপনাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ কী??


যাই করুন আবেগ বাদ দিয়ে বিবেক দিয়ে ভাবার অনুরোধ রইলো দিদি।


# আপনার প্রশ্নের উত্তর আমার মূল কমেন্টে ক্লিয়ার করে বলা আছে, “আপনার বিবাহটা হয়নি।” বিবাহের পূর্বে যার যার ধর্মে থাকা যায়, কিন্তু বিবাহের পর চাইলেই তা সম্ভব নয়। কেননা, আপনি তার স্ত্রী হবেন। বলে রাখি, বাংলাদেশের আইন এবং ইসলামের শরিয়ত অনুসারে তার চারটি বিবাহ করার অনুমতি আছে। আপনার অবাধ্য হয়েও করতে পারে এবং তাতে আইন বাধা হবে না। আপনার পরিচয়টা এক বছরের। একটা রিলেশন ২-৩ বছর পর্যন্ত আবেগের উপর সুস্থ থাকে। এরপরই বাস্তবতা শুরু হয়। বাস্তবতায় পা দিয়ে যে রিলেশন সুস্থ থাকে, সেই রিলেশন সারাজীবনের জন্য সুখ বয়ে আনে। তাই আমার পরামর্শ  থাকবে, যতটা সম্ভব লেট করে সিদ্ধান্ত নেওয়া। যত লেট করে সিদ্ধান্ত নিবেন ততই তার আচরণ আপনার কাছে স্পষ্ট হবে। আপনার নিজের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে জগতটাকে আরো ভালোভাবে বুঝতে শিখবেন। জীবন আপনার, সুতরাং ভালো থাকলে আপনিই থাকবেন, আর দুঃখী হলে আপনিই হবেন। তাই জীবনের শ্রেষ্ঠ সিদ্ধান্তে তাড়াহুড়ো করবেন না।



# ভার্সিটিতে প্রতিদিন দেখা হয় বলেই বিয়ে করে নিতে হবে? ভার্সিটি তো মাত্র চার বছর। এরপর কে কোথায় যাবে, জীবনে আর দেখা হবে কিনা তার ঠিক নেই। এই কয়েকদিনের ভার্সিটি লাইফের জন্য নিজের সারাজীবন নষ্ট করবেন না প্লিজ। ভার্সিটি শেষ হোক, কয়েক বছর সময় নিন, বুঝুন, তারপর ডিসিশন নিন।


# আপনি তাকে বলুন হিন্দু হতে হবে,,, দেখেন হয় কিনা,, তাহলে সামাজিক ভাবেই বিয়ে করুন,,,, ওনারা এইরকম ভাবেই মেয়েদের সুযোগ নেয়,, আর ফলাফলও আপনি আশেপাশে খোঁজ নিলেই দেখতে পারবেন,,, শুরুতে সবাই-ই বলে আমার আবদুল আলাদা,, কিছুদিন পরই তাদের আসল রুপ দেখা যায়,,, আবেগটা একটু সরিয়ে রেখে বাস্তবতা দিয়ে বিচার করুন আর বাবা মার কথাও একটু ভাবুন,,, ধন্যবাদ


# সে আপনাকে সিঁদুর পড়িয়েছে মানে সে সনাতনী হতে আগ্রহী। আপনি অগ্নিবীরের সহায়তায় তাকে সনাতনী হতে বলুন। সে যদি এ প্রস্তাবে রাজি হয় তাহলে সনাতনী রীতিতে পুনরায় বিবাহ করুন। তবে সে যদি সনাতনী হতে আপত্তি জানায় তাহলে বুঝে নিবেন তার উদ্দেশ্য ভিন্ন কিছু ছিলো, বিয়ে ছিলো বাহানা মাত্র।


# আপনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। তার উপরে হিন্দুধর্মীয় গ্রুপের এক্টিভ মেম্বার। এমন ভুল করলেন কীভাবে ভেবে অবাক হচ্ছি। আপনার কথাতেই বোঝা যাচ্ছে ছেলেটি আপনাকে ট্র্যাপ করেছে। শারীরিক চাহিদা মেটানোই তার উদ্দেশ্য। সে যদি আপনাকে সত্যি ভালবাসতো তবে সামাজিকভাবে বৈধ পদ্ধতিতে বিয়ের প্রস্তাব দিতো। নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে সনাতনে ধর্মান্তরিত হয়ে আপনাকে বিয়ে করত অথবা স্পেশাল ম্যারেজ এক্ট অনুযায়ী বিয়ের প্রস্তাব দিতো। সে নিজেও জানে আপনাদের কথিত বিয়ের কোনো ভিত্তি নেই। তার উদ্দেশ্য আপনার শরীর, আপনি না। এখনও সময় আছে সরে আসুন। জীবন অনেক বড়। দুদিনের কামের তাড়নায় আবেগতাড়িত না হয়ে বাস্তবতা চিন্তা করুন।


# পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মেয়ে আপনি, আর আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে সামান্য জ্ঞানটুকুও আপনার নেই। বিয়ে কি এতোই সোজা!?  আপনারা যে সিরিয়ালের মতো অনুকরণ করে বিয়ে করার নাটক করলেন, তার আগে একবারও ভাবেননি এটার ভবিষ্যত কি! আর একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হয়ে কিভাবে এমন কান্ডজ্ঞানহীন কাজকর্ম করতে পারলেন। ছিহ!


# এটাকেই বলে তাকিয়া। এর অর্থ হল ইসলাম রক্ষা ও প্রসারের জন্য মিথ্যা কথা বলা, মিথ্যা অভিনয় করা তাদের দৃষ্টিতে জায়েজ আছে। অর্থাৎ সম্পূর্ণ প্রতারণামূলক এই কার্যক্রম তাদের ধর্মের দৃষ্টিতে অপরাধ নয়। আপনার সরলতা ও বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে সে নিজের ইসলাম আপনার উপর চাপিয়ে দেয়ার পূর্বধাপ পালন করেছে মাত্র। অতএব সচেতন হোন, সাবধান হোন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ