মন্দির কেন মসজিদ হয়েছিল সে কথা ভারতীয় ইতিহাসে নেই - নারায়ণ দেবনাথ

মন্দির কেন মসজিদ হয়েছিল সে কথা ভারতীয় ইতিহাসে নেই

মন্দির কেন মসজিদ হয়েছিল সে কথা ভারতীয় ইতিহাসে নেই। কিন্তু ইতিহাস চেপে রাখা যায়নি।

✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️


বাবরি মসজিদ ছাড়া ভারতে যত মন্দিরকে মসজিদ বানানো হয়েছিল তার একটিরও স্থিতি বদলানো সম্ভব হয়নি। কারণ বিগত কংগ্রেস সরকার আইন করে মন্দির মসজিদের অবস্থান যেখানে যে অবস্থায় রয়েছে তার স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে বলে আইন করে রেখেছে। বাবরি মসজিদ এই আইনের বাইরে ছিল বলে সরানো সম্ভব হয়েছে।


ভারত একটি সভ্য দেশ সেখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত। তাই মসজিদ সরিয়ে মন্দির প্রতিষ্ঠিত করার মানুষিক প্রত্যয় থাকা সত্ত্বেও সে কাজটি ভারতীয়রা করতে পাচ্ছেনা আইনগত কারনে। তবে যেমনি ভাবে আইনের মাধ্যমে বাবরি মসজিদ সরিয়ে সেখানে রাম মন্দির প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হয়েছে ঠিক তেমনি ভাবে হারিয়ে যাওয়া ভারতীয় ঐতিহ্য ও ধর্মীয় স্থাপনা পুনরুদ্ধারে আইনই পথ  দেখাবে।


মন্দির ধ্বংস করা বা বিগ্রহ ভাঙা ইসলামী সংস্কৃতির একটি বৈশিষ্ট্য। মন্দির ধ্বংস শুধু যে বিদেশি সুলতান মাহমুদ ও তৈমুর লঙরা করেছে এমন নয় এদেশীয় শিরোজ শাহ তুঘলক, আওরঙ্গজেব দাক্ষিনাত্যের আহমদ শা ও আদিল শায়েদের মধ্যেও মন্দির ভাঙার প্রবনতা কোন অংশে কম ছিল না। তারা সবাই হিন্দুর বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে আক্রমনে মেতে উঠেছিল হত্যা ও ধ্বংসের তান্ডব নৃত্যে। ধর্মের নামে কোটি কোটি বিধর্মীদের হত্যা করেও তাদের কোন অনুশোচনা ছিলনা ছিল আনন্দ আর উল্লাস। কারন তাদের সবার একটাই উদ্দেশ্য ছিল ইসলামের জয়ের ধ্বজাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।


যুগে যুগে ইসলামের এই অগ্রযাত্রা রাজনীতির কুটকৌলে আজও অব্যাহত রয়েছে। পাক সেনারা ঢাকায় রমনা কালী মন্দির ধ্বংস করে ইসলামের অগ্রযাত্রাকে তরান্বিত করেছিল শেখ মুজিব আবার সেই ধ্বংসপ্রাপ্ত রমনা কালী মন্দির পুনঃনির্মাণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইসলামের অগ্রযাত্রাকে আরো এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আবার ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরকে নির্মাণ করে সনাতন ধর্মের পরম্পরাকে জাগিয়ে তুলেছিলেন। 


তৈমুর লঙ বিধর্মীদের হত্যা করে ধর্ষন করে ইসলামকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল বলিউডের সাইফ আলী খাঁন আবার নিজের সন্তানের নাম তৈমুর রেখে ইসলামের বর্বরতার ইতিহাসকে অক্ষয় করে রাখার চেষ্টা করেছেন। নরেন্দ্র মোদি সরকার আবার আওরঙ্গজেবের নামে দিল্লির একটি রাস্তার নাম পাল্টে এপিজে আব্দুল কালামের নামে রেখে ভারতীয় পরম্পরাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সনাতন সংস্কৃতিকে আটকে রাখা যায়নি।


বাবর দিল্লি থেকে অযোধ্যায় গিয়ে রাম মন্দির ভেঙে বাবরি মসজিদ তৈরি করেছিলেন। আওরঙ্গজেব দিল্লি থেকে মথুরায় গিয়ে কৃষ্ণ মন্দিরের উপর মসজিদ তৈরি করেছিলেন। আওরঙ্গজেব দিল্লি থেকে গিয়ে সোমনাথ মন্দির ভেঙে তার উপরে মসজিদ তৈরি করেছিলেন। পঃবঙ্গের মুর্শিদাবাদে চার হাজার মন্দির ভেঙে সেই মন্দিরের পাথর দিয়ে কাটারা মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল। ভাঙ্গা মন্দিরগুলো যে পুনঃস্থাপিত হয়েছে এমন নয়।


বহু জায়গায় মন্দির সংলগ্ন মসজিদ এখনো দন্ডায়মান। প্রতিটি মসজিদের নীচে যে মন্দিরের স্থাপত্য রয়েছে ইতিহাস তার স্বাক্ষী। বাবরি মসজিদ খনন করেও ইতিহাসের প্রমাণ প্রমাণিত হয়েছে। সে সব মন্দির এখনো কালের সাক্ষী হয়ে সনাতনের হৃদয়ে জেগে রয়েছে।


যে সমস্ত মন্দির ভেঙে সেখানে মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল যা আজও মসজিদ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত সে ইতিহাস ভারতের খুব বেশি মানুষ জানেন না। কাশীর বিশ্বনাথ মন্দিরে এখনো জ্ঞানপাপী মসজিদ বর্তমান রয়েছে।ঠিক তেমনি বারানসীর বিন্দুমাধব মন্দির ভেঙে হয়েছে আলমগীর মসজিদ। ভোজশালায় সরস্বতী মন্দির ভেঙে হয়েছে কমাল মওলা মসজিদ। কেরালায় আরাথলী মন্দিরের অস্তিত্ব এখন আর নেই। সেখানে হয়েছে চেরামন জুমা মসজিদ। কুতুবমিনারের রায় পিথৌরা মন্দির হয়েছে কুতুব আল ইসলাম মসজিদ। সে সব স্থানে দর্শনার্থীরা যান আর অশ্রুসিক্ত নয়নে বুক ভাসিয়ে আসেন। 


অযোধ্যায় রাম মন্দির শুধু পুনঃরুদ্ধার হয়েছে। মালদার আদিনাথ মন্দির এখন আদিনা মসজিদ নামে এখনো  পরিচিত। আজমেরে সরস্বতী  মন্দির এখন ঝোপরা মসজিদ। সোমনাথ শিব মন্দির পুনঃরুদ্ধার হয়েছে। সিদ্ধপুর রুদ্র মহালয় মন্দির এখন হয়েছে জামে মসজিদ। বোধন জৈন হিন্দু মন্দির দেবল মসজিদ নামে পরিচিত। শ্রীনগর কালীমাতা মন্দির হয়েছে খানকা এ মওলা মসজিদ। আহমদাবাদ ভদ্রকালী মন্দির রূপান্তরিত হয়েছে জামে মসজিদ। বিদিশা বিজয় সূর্য মন্দির হয়েছে বিজা মন্ডল মসজিদ। জৈনপুর আটলা দেবী মন্দির এখন হয়েছে ঈদগাহ মসজিদ। এরমধ্যে শুধু রাম মন্দির ও সোমনাথ মন্দির পুনঃরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে। বাকি মন্দির পুনঃরুদ্ধারে এখনো কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেই। ইসলামের এই বর্বর ইতিহাস প্রতিদিন প্রতিক্ষণ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হৃদয় চূর্নবিচূর্ন করে চলেছে। এই ক্ষোভ থেকেই একদিন জেগে উঠবে আশার আলো। 


যে জাতি তার ইতিহাস ভুলে যায় তার ভবিষ্যৎ অন্ধকার। ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে তার নিজস্ব গতিতে। এতদিন সুপরিকল্পিত ভাবে ভারতের অতীত ইতিহাস ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা হয়েছিল। ভারতবর্ষের মূল ভূ-খণ্ডে অষ্টম শতাব্দী থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত মুসলিম শাসন যেভাবে সনাতন ধর্ম সংস্কৃতি কৃষ্টিকে ধ্বংস করার চেষ্টা হয়েছিল কিন্তু কোন নির্যাতনই সনাতন ধর্মকে বিলুপ্ত করতে পারেনি। আগামী দিনেও পারবেনা। একদিন বাবরি মসজিদের ন্যায়ই সব মুছে যাবে কালের গর্বে।


সূত্র: ফেসবুক

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ