বেদে নারী সম্পর্কে কয়েকটি বেদমন্ত্র

বেদে নারী সম্পর্কে কয়েকটি বেদমন্ত্র


আমাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ বেদে নারীদের নিয়ে কি বলা হয়েছে.....


🕉️ অহং কেতুরহং মুর্ধাহমুদ্রা বিবাচনী ।

মমেদনু ক্রতুং পতিঃ সেহানায়া উপাচরেৎ ॥

[ঋগ্বেদ ১০/১৫৯/২]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- আমি জ্ঞানবতী, গৃহে মুখ্য স্থানীয়া ধৈর্য শালিনী, বক্তৃতাকারিণী ও শত্রুনাশিনী । আমার পতি আমার অনুকুলে থাকিয়া গৃহকর্ম্ম সম্পাদন করুন।


🕉️ মম পুত্রাঃ শত্ৰুহণোহথোমে দুহিতা বিরাট্ ।

উতাহমস্মি সঞ্জয়া পতৌ যে শ্লোক উত্তমঃ ।।

[ঋগ্বেদ ১০/১৫৯/৩]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- আমার পুত্রেরা শত্রু নাশী হউক। আমার কন্যারা তেজস্বিনী হউক। আমি বিজয়ী হইব এবং আমার পতির সুযশ হউক।


🕉️ শিবা ভব পুরুষেভ্যো গোভ্যো অশ্বেভ্যঃ শিবা।

শিবাস্মৈ ক্ষেত্রায় শিবা ন ইহৈধি ।।

[অথর্ব্ববেদ ৩/২৮/৩]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- পুরুষ, গো ও অশ্বজাতির প্রতি কল্যাণকারিণী হও, পতিগৃহের জন্য কল্যাণকারিণী হও, আমাদের জন্য কল্যাণকারিণী রূপে এখানে এস।


🕉️ আশাসানা সৌমনসং প্রজাং সৌভাগাং রয়িম্ ॥

পত্যুরনুব্রতা ভূত্বা সং মহ্যস্বামৃতায় কম্ ।।

[অথর্ব্ববেদ ১৪/১/৪৩]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- মনের প্রসন্নতা, সন্তান, সৌভাগ্য ও ধনের কামনা করিয়া স্ত্রী সৰ্ব্বদাই পতির অনুকুল আচরণ করিবে এবং মোক্ষ লাভের অনুকুল সুখ লাভ করিবে।


🕉️ পুনঃ পত্নীমগ্নিরদাদায়ুষা সহ বর্চসা দীর্ঘায়ুরস্যা যঃ

পতির্জীবাতি শরদঃ শতম্ ।।

[অথর্ব্ববেদ ১৪/২/২]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- তেজস্বী পরমাত্মা পত্নীকে দীর্ঘ আয়ু ও তেজ দান করিয়াছেন। ইহার পতি শতবৰ্ষ জীবিত থাকুক।


🕉️ সুমঙ্গণী প্রতরণী গৃহাণাং সুশেবাপত্যে শ্বশুরায় শংভুঃ ।

স্যোনা শ্বশ্রৈ প্র গৃহান্ বিশেমান্ ।।

[ অথর্ব্ববেদ ১৪/২/২৬]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- হে বধু! কল্যাণময়ী, গৃহের শোভাবর্দ্ধনকারিণী, পতিসেবা পরায়ণা, শ্বশুরের শান্তিদায়িনী, শ্বাশুড়ীর আনন্দ দায়িনী! গৃহকার্যে নিপূণা হও।


🕉️ স্যোনা ভব শ্বশুরেভ্যঃ স্যোনা পত্যে গৃহেভ্যঃ।

স্যোনাহস্যৈ সর্বস্যৈ বিশে স্যোনা পুষ্টায়ৈষাঃ ভব ।।

[অথর্ব্ববেদ ১৪/২/২৭]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- হে বধূ! শ্বশুরদের প্রতি, পতির প্রতি, গৃহের প্রতি এবং এই সব প্রজাদের প্রতি সুখদায়িনী হও। ইহাদের পুষ্টির জন্য মঙ্গলদায়িনী হও।


🕉️ ইয়ং নায্যুপ ব্রতে পুল্যান্যাবপতন্তিকা ।

দীর্ঘায়ুরন্তু মে পতি্র্জীবাতি শরদঃ শতস্ ॥

[অথর্ব্ববেদ ১৪/২/৬৩]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- পতিব্রতা স্ত্রী গৃহে মিলনের বীজ বপন করে ও বলে “আমার পতি দীর্ঘায়ু হউক, শত বর্ষ জীবিত থাকুক।”


🕉️ যথা সিন্ধুর্ণদীনাং সাম্রাজ্যং সুষুবে বৃষা ।

এবা ত্বং সম্রাজ্ঞ্যেধি পত্যুরস্তং পরেত্য ।।

[অথর্ব্ববেদ ১৪/১/৪৩]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- হে বধূ! যেমন বলবান সমুদ্র নদী সমূহের উপর সাম্রাজ্য স্থাপন করিয়াছে তুমিও তেমন পতিগৃহে গিয়া সম্রাজ্ঞী হইয়া থাক ।


🕉️ সম্রাজ্যেধি শ্বশুরেষু সম্রাজ্ঞ্যুত দেবৃষু ।

ননান্দু সম্রাজ্ঞ্যেধি সম্রাজ্যুত শ্বশ্ব্রাঃ ।।

[অথর্ব্ববেদ ১৪ / ১/৪৪]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- শ্বশুরদের মধ্যে এবং দেবরদের মধ্যে, ননদ ও শাশুড়ীদের সঙ্গে মিলিয়া সম্রাজ্ঞী হইয়া থাক।


🕉️ সুমঙ্গলী রিয়ং বধুরিমাং সমেত পশ্যত।

সৌভাগ্য মসৈ দত্ত্বা দৌর্ভাগ্যৈর্বিপরেতন ॥

[অথর্ব্ববেদ ১৪/২/২৮]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- এই বধু মঙ্গলময়ী, সকলে মিলিয়া ইহাকে দেখ, ইহাকে সৌভাগ্য দান করিয়া দুর্ভাগ্য বিদুরিত কর।


🕉️ ইহৈব স্তং মা বি যৌষ্টং বিশ্বমায়ুর্ব্যশ্মুতম্ ।

ক্রীড়ন্তৌ পুত্রৈর্নপ্তৃভির্মোদমানৌ স্বস্তকৌ ॥

[অথর্ব্ববেদ ১৪/১/২২]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- হে দম্পতী! তোমরা উভয়ে একসঙ্গেই থাক, পৃথক হইও না। নিজের গহে পুত্র ও পৌত্রদের সঙ্গে খেলিয়া আনন্দ করিয়া পূর্ণ আয়ুভোগ কর।


🕉️ স্যোনাদ্যোনেরধি বুধ্যমানৌ হসামুদৌ মহসা মোদমানৌ।

সুপ্ত সুপুত্রৌ সুগৃহৌ তরথো জীবাবুষসো বিভাতীঃ ।।

[অথর্ব্ববেদ ১৪/২/৪৩]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- হে দম্পতী! শান্তি-পূর্ণ গৃহে জ্ঞান লাভ করিয়া হাস্য ও আনন্দ কর । সচ্চরিত্র পুত্র লাভ করিয়া, উত্তম গৃহ নিৰ্ম্মাণ করিয়া প্রেমানন্দে জীবনকে সার্থক কর এবং শান্তিতে জীবন অতিবাহিত কর।


🕉️ অমোহমস্মি সা ত্বং সামাহম স্ন্যৃক্তবংদ্যৌরহং পৃথিবী তম্ ।

তাবিহ সং ভবাব প্রজামা জনয়াবহৈ ।।

[অথর্ব্ববেদ ১৪/২/৭১]


🌼 বঙ্গানুবাদ- হে স্বামিন! আমি যেরূপ জ্ঞানী, তুমিও সেইরূপ জ্ঞানী। আমি সাম মন্ত্র, তুমি ঋগ্বেদ মন্ত্র। আমি দ্যুলোক, তুমি পৃথ্বী লোক। আমরা উভয়ে এই ভাবে মিলিয়া সন্তানোৎপাদন করিব।


🕉️ উত ত্বা স্ত্রী শশীয়সী পুংসো ভবতি বস্যসী

অদেবরাপরাধঃ।।

[ঋগ্বেদ ৫/৬১/৬]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- এ বিষয় সুবিদিত যে বহু পতিব্রতা স্ত্রী শুভকৰ্ম্ম বজ্জিত ও ঈশ্বরোপাসনা রহিত পুরুষ হইতে অধিকতর প্রশংসা ভাজন।


🕉️ যা দম্পতী সমনসা সুনুত আ চ ধাবতঃ ।

দেবাসো নিত্যয়াহশিরা।।

[ঋগ্বেদ ৮/৩১/৫]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- হে বিদ্বান্ গণ। যে পত্নী ও পতি এক সঙ্গে একমনে যজ্ঞ করে, উপাসনা দ্বারা যাহাদের মন পরমাত্মার দিকে ধাবমান হয় তাহারা নিত্য পরমাত্মার আশ্রয়েই সব কার্য করে।


🕉️ প্রতি প্রাশব্যাঁ ইতঃ সম্যঞ্চা বর্হিরাশাতে।

ন তা বাজেষু বায়তঃ ॥

[ঋগ্বেদ ৮/৩১/৬]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- যে পত্নী ও পতি একসঙ্গে মিলিয়া যজ্ঞ করে তাহারা উভয়েই নানা ভোগ্য পদার্থ উপভোগ করে এবং অন্নের জন্য ইতস্ততঃ ভ্রমণ করে না।


🕉️ পূত্রিণা তা কুমারিণা বিশ্বমায়ুর্ব্যশ্নূতঃ।

উভা হিরণ্য পেশসা ।।

[ঋগ্বেদ ৮/৩১/৮]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- একসঙ্গে মিলিয়া যজ্ঞ করিলে পত্নী ও পতির পুত্র পুত্রী, কুমার কুমারী লাভ হয়। তাঁহারা পূর্ণ আয়ু ভোগ করেন এবং উভয়ে নিষ্কলঙ্ক চরিত্রের ভূষণে দীপ্যমান হয়।


🕉️ গৃহ্নামি তো সৌভগত্বায় হস্তং নয়া পত্যা ভরদৃষ্টি র্যধাসঃ।

ভগো অর্যমা সবিতা পরন্ধির্মহ্যং ত্বাদুর্গার্হপত্যায় দেবাঃ ।

[অথর্ব্ববেদ ১৪/১/৫০]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- হে বরাননে! আমি ঐশ্বর্য বৃদ্ধির জন্য তোমার পাণি গ্রহণ করিতেছি। আমি পতি - আমার সহিত তুমি বৃদ্ধাবস্থা পৰ্য্যন্ত সুখে বাস কর। মঙ্গলময়, ন্যায়কারী, জগৎ স্রষ্টা পরমাত্মা এবং বিদ্বানেরা তোমাকে আমার নিকট সমর্পণ করিতেছেন।


🕉️ ভগস্তে হস্তমগ্রহীৎ সবিতা হস্তমগ্রহীৎ।

পত্নী ত্বমসি ধৰ্ম্মণাহং গৃহপতিস্তব ॥

[অথর্ব্ববেদ ১৪/১/৫১]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- হে বরাননে। আমি ঐশ্বর্যযুক্ত হইয়া তোমার পাণি গ্রহণ করিয়াছি, ধর্ম্ম সাক্ষ্য করিয়া তোমার পাণিগ্রহণ করিয়াছি। ধর্মতঃ তুমি আমার পত্নী, আমি তোমার স্বামী।


🕉️ মমেয়মস্তু পোষ্যো মহ্যং ত্বদাদ্বৃহস্পিতিঃ ।

ময়া পত্যা প্রজাবতি সংজীব শরদঃ শতম্ ।।

[অথর্ব্ববেদ ১৪/১/৫২]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- এই পত্নীর আমিই ভরণপোষণ করি। পরমাত্মা তোমাকে আমার হাতে দিয়াছেন। হে সন্তানবতী! আমি তোমার পতি, আমার সহিত শতবর্ষ শান্তিতে জীবিত থাক ।


🕉️ পূর্ণং নারি প্রভর কুম্ভমেতং ঘ্যতস্য ধারামমৃতেন সংত্তভৃতাম্ ।

ইমাং পাতৃনমৃতেনা সমংগ্ধীষ্টা পুর্তমভি রক্ষাত্যেনাম্ ॥ ।

[অথর্ব্ববেদ ৩/১২/৮]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- হে স্ত্রী! অমৃতরসে পরিপূর্ণ এ কুম্ভকে আরও পূর্ণ করিয়া আন, অমৃতপূর্ণ ঘৃতধারাকে আন, পিপাসুকে অমৃত রসে তৃপ্ত কর। ইষ্ট কামনার পূর্ত্তি গৃহকে রক্ষা করিব।


🕉️ সম্রাজ্ঞী শ্বশুরে ভব সম্রাজ্ঞী শ্বশ্ব্রাং ভব।

ননান্দরি সম্রাজ্ঞী ভব সম্রাজ্ঞী অধি দেবৃষু ।।

[ঋগ্বেদ ১০/৮৫/৪৬]


🌼 বঙ্গানুবাদ:- হে স্ত্রী! শ্বশুরের নিকট সম্রাজ্ঞী হও, শাশুড়ীর নিকট সম্রাজ্ঞী হও, ননন্দার নিকট সম্রাজ্ঞী হও এবং দেবরদের নিকট সম্রাজ্ঞীর অধিকার প্রাপ্ত হও।


নিবেদনে:- 🕉 শাস্ত্রপৃষ্ঠা

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ