![]() |
আটক সিঁথি কর্মকার। ফাইল ছবি |
সিরাজগঞ্জ ও শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি, প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২৩ । ২০:০৩ | আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২৩ । ২০:০৬
শিক্ষকের সঙ্গে অসম প্রেমে বাঁধা দেওয়ায় মেয়ের ছুরিকাঘাতে খুন হলেন মা। এ ঘটনায় মেয়ে সিঁথি কর্মকারকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের চন্দাইকোনা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সন্ধ্যায় সিঁথি কর্মকার ও শিক্ষক মহসিন আলী মণ্ডলকে অভিযুক্ত করে রায়গঞ্জ থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর স্বামী শিবদাস কর্মকার।
নিহত ঝুমা কর্মকার (৪৫) বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শাহাপাড়ার রথিন্দ্রনাথ কর্মকার ওরফে শিবদাস কর্মকারের স্ত্রী। সিঁথি কর্মকার (২৪) ঢাকার পিপলস্
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। মহসিন বগুড়ার শেরপুরের নিশিন্ধারা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় সামিট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক।
রায়গঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়ার সময় বগুড়ার শেরপুরের সামিট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মহসিনের সঙ্গে অসম প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে সিঁথির। শিক্ষকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেননি তারা বাবা-মা। বিষয়টি জানাজানি হলে ঢাকা থেকে সিঁথিকে বাড়িতে এনে আটকে রাখে তার পরিবার। এ নিয়ে প্রায়ই মায়ের সঙ্গে তার ঝগড়া হতো। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা থাকায় মায়ের সঙ্গে ঢাকা যাচ্ছিলেন সিঁথি। পথে ‘জানালা দিয়ে বই পড়ে গেছে’ বলে বাস থেকে হঠাৎ নেমে যান তিনি। মা ঝুমা কর্মকারও বাস থেকে নেমে পড়েন। এ সময় মা-মেয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে মায়ের বুকে আঘাত করেন মেয়ে। এরপর তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশে দেন। এ দিকে আহত ঝুমা কর্মকারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।
সিঁথির বাবা শিবদাস কর্মকার বলেন,
‘আমি স্ত্রী হত্যার বিচার চাই। শুধু মেয়ের নয়, ওই শিক্ষকেরও শাস্তি চাই।’
সামিট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম লিপু সমকালকে বলেন,
‘এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠান দায় নেবে না। শাস্তি আমরাও চাই।’
এদিকে, অভিযুক্ত শিক্ষকের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
সূত্র: সমকাল
++++++++
আজকের কাগজ' পত্রিকায় বিস্তারিত খবর
![]() |
নিহত মা ও হত্যা মামলার আসামি মেয়ে। ছবি: সংগৃহীত |
বাসে মাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা: নেপথ্যে ভিন্ন ধর্মের যুবকের সঙ্গে প্রেমে বাধা, বলছে পুলিশ
বগুড়া ও শেরপুর প্রতিনিধি, প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৩, ১৯:৩৫
সিরাজগঞ্জে একটি বাসে মাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া মেয়ে। পুলিশ বলছে, অন্য ধর্মের যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় ওই তরুণী এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
আজ সোমবার রাতে সিরাজগঞ্জের রামগঞ্জ থানায় মেয়ের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের স্বামী। আজ দুপুরে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মাদ সিদ্দিকুল ইসলাম। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্বামী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। তাঁদের মেয়েকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের নাম ঝুমা কর্মকার (৪৫)। তিনি বগুড়ার শেরপুর পৌর শহরের উত্তর সাহাপাড়া মহল্লার স্বর্ণ ব্যবসায়ী শিবদাস কর্মকারের স্ত্রী। গ্রেপ্তার রয়েছেন তাঁদের মেয়ে পূজা কর্মকার সিঁথি (২২)। তিনি ঢাকায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
নিহতের প্রতিবেশীরা বলছে, পূজা কলেজে পড়ার সময় এক মুসলিম শিক্ষকের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। ওই শিক্ষকের বাড়ি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনার নিশিন্দারা এলাকায়। কয়েক মাস আগে পূজা তাঁর সঙ্গে পালিয়ে যান। পরে পরিবারের লোকজন তাঁকে ফিরিয়ে আনার পর থেকে পরিবারের সঙ্গে অসংলগ্ন আচরণ করতেন পূজা। এ ছাড়া ঢাকায় পড়ালেখা শুরুর পর মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। এ কারণে তাঁকে বাড়িতেই রাখা হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার আগের দিন তাঁর মা তাঁকে নিয়ে যেতেন, আবার পরের দিন নিয়ে আসতেন।
এর আগে মা নিহত ও মেয়ে আটক হওয়ার বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা। তিনি জানান, নিহতের লাশ ও তাঁর মেয়ে রায়গঞ্জ থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। নিহতের মেয়ের ব্যাগ থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
ওসি বাবু কুমার বলেন,
‘আগামীকাল মঙ্গলবার পূজার বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা ছিল। এ কারণে মা ঝুমা কর্মকার মেয়েকে ঢাকায় রাখতে যাচ্ছিলেন। আজ বেলা ১টার দিকে বাসটি মহাসড়কের চান্দাইকোনা পৌঁছালে পূজা বাসের সুপারভাইজারকে বলেন জানালা দিয়ে তাঁর বই পড়ে গেছে। পূজার কথায় বাস থামানো হলে তাঁর মা সিট থেকে উঠে দাঁড়ায়। এ সময় ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে মায়ের পেটে ও বুকে আঘাত করে দ্রুত বাস থেকে নেমে যান পূজা। এ সময় বাসের যাত্রীদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন পূজাকে একটি দোকানে আটকে রাখেন। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন ঝুমাকে রায়গঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।’
তিনি আরও বলেন,
‘প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে শেরপুরে একটি বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের সঙ্গে পূজার সম্পর্ক ছিল। ওই শিক্ষক ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হওয়ায় পূজার মা বিষয়টি মানতে পারছিলেন না। এ নিয়ে মা-মেয়ের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। এই ঘটনার পর ওই শিক্ষককে আটক করতে গিয়ে পাওয়া যায়নি।’
সূত্র: আজকের পত্রিকা
0 মন্তব্যসমূহ